১১:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’ হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 16

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

বিধাতাকে অভিশাপ দাও, অপরিচিতকে প্রেম বিলাও! কিন্তু, আমাকে শান্তিতে থাকতে দাও! আমাকে জ্বালিও না! কারণ আমিও মানুষ, আমারও মৃত্যু অনিবার্য।”

দুঃখের বিষয়, এ রকম হয়েছে এবং এ রকম হবেও। অন্য রকম হ’তে পারে নি, হ’তে পারে না। কারণ, মানুষ ক্লান্ত, শ্রান্ত, পংগু, পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা সবাই একাকিত্বের কঠিন নিগড়ে আবদ্ধ। তাই তাদের সত্তা বিশুষ্ক, মৃত। লিও নিকোইয়েভিচ যদি ধর্মতন্ত্রের সংগে সন্ধি ক’রে বসতেন, তাতেও আমি বিন্দুমাত্র বিস্মিত হতাম না। তার মধ্যেও তাঁর নিজস্ব একটা যুক্তি থাকতো।

\সকল মানুষই তুচ্ছ, নগণ্য, এমন কি আর্চবিশপরা-ও। বাস্তবিক পক্ষে, ঠিকমতো বলতে গেলে, সেটা সন্ধি হোতো না; আর তাঁর পক্ষে ব্যক্তি- গতভাবে ব্যাপারটা যুক্তিযুক্তও হোতোঃ “আমাকে যারা ঘৃণা করে, আমি তাদের ক্ষমা করি।” এটা একটা খৃস্টান-সুলভ কাজ হোতো এবং এর পেছনে গোপন থাকতো একটি চকিত বিদ্রূপের মৃদু মন্দ হাসি। এবং সেই হাসির অর্থ হোতো এই যে এমনি ভাবেই জ্ঞানী ব্যক্তিরা নির্বোধদের ওপর প্রতিশোধ নিয়ে থাকেন।

আমি যা লিখছি, আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা নয়; আমি যথাযথভাবে তা প্রকাশ করতে পারছি না। আমার আত্মার মধ্যে যেন একটা কুকুর কেবলই কেঁদে ককিয়ে উঠছে, যেন কোনো আসন্ন দুর্ভাগ্যের অশুভ সংকেত আমি শুনতে পাচ্ছি। হ্যাঁ, খবরের কাগজগুলো এইমাত্র এসে পৌঁচেছে; ব্যাপারটা স্পষ্ট হ’য়ে গেছে; তোমরা দেশে একটি “রূপকথা বানাতে” চেষ্টা করছ। একটি বার কেবল ভেবে দ্যাখো তো, ঠিক এই মুহূর্তে দেশের পক্ষে এই ব্যাপারটি কী ভয়াবহ ক্ষতিকরই না হবে! মোহ-মুক্ত মানুষের দল আজ মাথা নত করেছে।

অধিকাংশের সত্তা আজ শূন্য, আর দেশের সেরা যাঁরা, তাঁদের আত্মা বেদনায় আজ আর্ত। ক্ষত-বিক্ষত উপবাসক্লিষ্ট তাঁরা। তাই তাঁরা আঁকড়ে ধরতে চান কোনো কল্পিত কাহিনীকে। তাঁরা চান বেদনার উপশম, তাঁরা চান যন্ত্রনার প্রশমন। আজ তাঁরা যা চান, তাই তাঁরা কল্পনার সৃষ্টি করবেন, যদিও তা তাঁদের কোনো প্রয়োজনেই আসে না। তাঁরা চান কোনো সাধু- সন্তের জীবন। তিনি সাধু, তিনি মহান, কারণ, তিনি মানুষ, বেদনা-মত্ত সুন্দর, অভিরাম একটি মানুষ; সমস্ত মানুষের সেরা মানুষ। আমি বোধ হয় নিজের কথারই বিরুদ্ধতা করছি; যাক, তাতে কিছু আসে যায় না।

 

নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩৬)

০৩:৫৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

বিধাতাকে অভিশাপ দাও, অপরিচিতকে প্রেম বিলাও! কিন্তু, আমাকে শান্তিতে থাকতে দাও! আমাকে জ্বালিও না! কারণ আমিও মানুষ, আমারও মৃত্যু অনিবার্য।”

দুঃখের বিষয়, এ রকম হয়েছে এবং এ রকম হবেও। অন্য রকম হ’তে পারে নি, হ’তে পারে না। কারণ, মানুষ ক্লান্ত, শ্রান্ত, পংগু, পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা সবাই একাকিত্বের কঠিন নিগড়ে আবদ্ধ। তাই তাদের সত্তা বিশুষ্ক, মৃত। লিও নিকোইয়েভিচ যদি ধর্মতন্ত্রের সংগে সন্ধি ক’রে বসতেন, তাতেও আমি বিন্দুমাত্র বিস্মিত হতাম না। তার মধ্যেও তাঁর নিজস্ব একটা যুক্তি থাকতো।

\সকল মানুষই তুচ্ছ, নগণ্য, এমন কি আর্চবিশপরা-ও। বাস্তবিক পক্ষে, ঠিকমতো বলতে গেলে, সেটা সন্ধি হোতো না; আর তাঁর পক্ষে ব্যক্তি- গতভাবে ব্যাপারটা যুক্তিযুক্তও হোতোঃ “আমাকে যারা ঘৃণা করে, আমি তাদের ক্ষমা করি।” এটা একটা খৃস্টান-সুলভ কাজ হোতো এবং এর পেছনে গোপন থাকতো একটি চকিত বিদ্রূপের মৃদু মন্দ হাসি। এবং সেই হাসির অর্থ হোতো এই যে এমনি ভাবেই জ্ঞানী ব্যক্তিরা নির্বোধদের ওপর প্রতিশোধ নিয়ে থাকেন।

আমি যা লিখছি, আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা নয়; আমি যথাযথভাবে তা প্রকাশ করতে পারছি না। আমার আত্মার মধ্যে যেন একটা কুকুর কেবলই কেঁদে ককিয়ে উঠছে, যেন কোনো আসন্ন দুর্ভাগ্যের অশুভ সংকেত আমি শুনতে পাচ্ছি। হ্যাঁ, খবরের কাগজগুলো এইমাত্র এসে পৌঁচেছে; ব্যাপারটা স্পষ্ট হ’য়ে গেছে; তোমরা দেশে একটি “রূপকথা বানাতে” চেষ্টা করছ। একটি বার কেবল ভেবে দ্যাখো তো, ঠিক এই মুহূর্তে দেশের পক্ষে এই ব্যাপারটি কী ভয়াবহ ক্ষতিকরই না হবে! মোহ-মুক্ত মানুষের দল আজ মাথা নত করেছে।

অধিকাংশের সত্তা আজ শূন্য, আর দেশের সেরা যাঁরা, তাঁদের আত্মা বেদনায় আজ আর্ত। ক্ষত-বিক্ষত উপবাসক্লিষ্ট তাঁরা। তাই তাঁরা আঁকড়ে ধরতে চান কোনো কল্পিত কাহিনীকে। তাঁরা চান বেদনার উপশম, তাঁরা চান যন্ত্রনার প্রশমন। আজ তাঁরা যা চান, তাই তাঁরা কল্পনার সৃষ্টি করবেন, যদিও তা তাঁদের কোনো প্রয়োজনেই আসে না। তাঁরা চান কোনো সাধু- সন্তের জীবন। তিনি সাধু, তিনি মহান, কারণ, তিনি মানুষ, বেদনা-মত্ত সুন্দর, অভিরাম একটি মানুষ; সমস্ত মানুষের সেরা মানুষ। আমি বোধ হয় নিজের কথারই বিরুদ্ধতা করছি; যাক, তাতে কিছু আসে যায় না।