ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
তারপর তিনি ‘ছাব্বিশ ও এক’ গল্পের মেয়েটি সম্পর্কেও আলাপ করতে লাগলেন। কতকগুলো অম্লীল কথা তিনি এমন সহজ ও অনর্গল ভাবে ব’লে গেলেন, যেগুলো আমার কাছে ‘সিনিক্যাল’ ব’লে মনে হোলো, এমন কি আমি ঈষৎ আহতও হলাম।
পরবর্তী কালে আমি লক্ষ্য করেছি তিনি এই অকথ্য কথাগুলির ব্যবহার করেন, তার একমাত্র কারণ, সেগুলি তাঁর কাছে যথাযথ অর্থের সূচনা করে। কিন্তু ঐ সময় কথাগুলি শুনতে আমার ভারি বিশ্রী লেগেছিল। আমি কোনো জবাব দিলাম না। পরক্ষণে অকস্মাৎ তিনি সতর্ক এবং অমায়িক হয়ে উঠলেন, আমাকে শুধাতে লাগলেন আমার জীবনের ঘটনা, আমি কি পড়েছি, এবং পড়ছি সে সব কথা।
‘আমি শুনেছি, তোমার পড়াশুনো খুব বেশি। সত্যি? আচ্ছা, করলেংকো কি গাইয়ে?’
‘আমি ঠিক জানি না; তবে আমার বিশ্বাস, না।’
‘জানো না? তাঁর গল্পগুলো কি তোমার ভালো লাগে?’
‘খুবই ভালো লাগে।’
‘এই হোলো তুলনামূলক পার্থক্য। তিনি গীতিপ্রধান, আর গীতি- প্রাধান্য তোমার মধ্যে আদৌ নেই। তুমি ওয়েন্টম্যান’ পড়েছ?’
‘পড়েছি।’
‘তিনি ভালো লেখক, তাই না?-বুদ্ধিমান, যথাযথ, বাড়াবাড়িবর্জিত, অনেক ক্ষেত্রে তিনি গগলের চেয়েও ভালো। বালজাকের সাহিত্যের সংগে তাঁর ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল। আর গগল, তিনি অনুকরণ করেছিলেন, মার্লিস্কিকে।’
আমি যখন বললাম যে গগল সম্ভবত হফম্যান, ষ্টার্ণ এবং হয়তো, ডিকেন্সের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, তখন তিনি আমার দিকে চেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ওটা তুমি কোথা-ও পড়েছ, তাই না? কথাটা সত্যি নয়। গগল ডিকেন্সকে কদাচিৎ জানতেন। যাই হোক, স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে তুমি অনেক বেশি পড়েছঃ কিন্তু দ্যাখো, বেশি পড়া বিপজ্জনক। কল্পভ নিজেকে ধ্বংস করেছিলেন ওই ভাবে।’