০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৫৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৪:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
  • 9

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

ভি, ভি. সম্পর্কে চিন্তাবিজড়িতভাবে তিনি বলতেন, “তিনি একজন ‘মহান রাশিয়ান’ নন। আর সেইজন্যেই তিনি আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে এবং সত্যিকারের আলোতে দেখতে পারেন।” আন্টন শেখভকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। শেখভের সম্পর্কে তিনি বলেন: “ওর ওষুধগুলো ওর পথের অন্তরায় হ’য়ে উঠেছে। ও যদি ডাক্তার না হোতো, তবে আরো বড়ো লেখক হ’তে পারতো।”

একজন তরুণতর লেখক সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: ‘ইনি ইংরেজ হবার ভান করেন। এ ভূমিকায় মস্কাওই কোনো লোকের পক্ষে সফল হবার আশা সবচেয়ে কম।” আমাকে তিনি একবার বলেছিলেন, “তুমি একজন উদ্ভাবক, তোমার ওই কুভালদা-রা সবাই হোলো মন-গড়া।” আমি যখন বললাম, কুভালদা চরিত্র জীবন থেকে চিত্রিত হ’য়েছে, তখন তিনি বললেন: ‘বলো, তুমি তাকে কোথায় দেখেছ?”

কুভালদা নামে যে লোকটির আমি বর্ণনা করেছি, তাঁকে আমি প্রথমে দেখি কাজানের এক ম্যাজিস্ট্রেট কনভালভের এজলাসে। ঐ দৃশ্যটির বর্ণনা শুনে তিনি সর্বান্তঃকরণে হোহো ক’রে হেসে উঠলেন। তিনি তাঁর চোখের জল মুছে বললেন, “নীল রক্ত-হ্যা, ঠিক, নীল রক্ত।” কিন্তু কী চমৎকার, কী মজার। তোমার লেখার চেয়ে তোমার বলাটি কিন্তু আরো ভালো হয়েছে। তবে, একথা তোমায় স্বীকার করতেই হবে যে, তুমি একজন উদ্ভাবক, একজন রোমন্টিক।”

আমি বললাম, “সম্ভবত সব লেখকরাই কিছু পরিমাণে উদ্ভাবক, কারণ, তারা মানুষকে বর্ণনা করে জীবনে তাদের যেমনটি দেখতে চায় তেমনিটি ক’রে। একথাও আমি বললাম, যে-সব সক্রিয় লোক জীবনের অন্যায়কে যে-কোনো উপায়ে, এমন কি হিংসার দ্বারাও প্রতিরোধ করতে চায়, তাদের আমি পছন্দ করি।”

“কিন্তু হিংসাটাই যে সবচেয়ে বড়ো অন্যায়।” তিনি আমার একখানা হাত নিজের হাতে নিয়ে বলে উঠলেন, “তুমি এই স্বত-বিরোধিতার হাত থেকে কেমন ক’রে রক্ষা পাবে, উদ্ভাবক? তোমার ‘আমার সহযাত্রী’ লেখাটি উদ্ভাবন নয়-এবং উদ্ভাবন নয় ব’লেই ওটি সুন্দর। কিন্তু তুমি যখন মগজের সাহায্য নাও, তখন তুমি জন্ম দিয়ে বসো নাইটদের-যতো সব আমাডাইস আর সিফ্রিন্ডদের।”

 

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৫৪)

০৪:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

ভি, ভি. সম্পর্কে চিন্তাবিজড়িতভাবে তিনি বলতেন, “তিনি একজন ‘মহান রাশিয়ান’ নন। আর সেইজন্যেই তিনি আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে এবং সত্যিকারের আলোতে দেখতে পারেন।” আন্টন শেখভকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। শেখভের সম্পর্কে তিনি বলেন: “ওর ওষুধগুলো ওর পথের অন্তরায় হ’য়ে উঠেছে। ও যদি ডাক্তার না হোতো, তবে আরো বড়ো লেখক হ’তে পারতো।”

একজন তরুণতর লেখক সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: ‘ইনি ইংরেজ হবার ভান করেন। এ ভূমিকায় মস্কাওই কোনো লোকের পক্ষে সফল হবার আশা সবচেয়ে কম।” আমাকে তিনি একবার বলেছিলেন, “তুমি একজন উদ্ভাবক, তোমার ওই কুভালদা-রা সবাই হোলো মন-গড়া।” আমি যখন বললাম, কুভালদা চরিত্র জীবন থেকে চিত্রিত হ’য়েছে, তখন তিনি বললেন: ‘বলো, তুমি তাকে কোথায় দেখেছ?”

কুভালদা নামে যে লোকটির আমি বর্ণনা করেছি, তাঁকে আমি প্রথমে দেখি কাজানের এক ম্যাজিস্ট্রেট কনভালভের এজলাসে। ঐ দৃশ্যটির বর্ণনা শুনে তিনি সর্বান্তঃকরণে হোহো ক’রে হেসে উঠলেন। তিনি তাঁর চোখের জল মুছে বললেন, “নীল রক্ত-হ্যা, ঠিক, নীল রক্ত।” কিন্তু কী চমৎকার, কী মজার। তোমার লেখার চেয়ে তোমার বলাটি কিন্তু আরো ভালো হয়েছে। তবে, একথা তোমায় স্বীকার করতেই হবে যে, তুমি একজন উদ্ভাবক, একজন রোমন্টিক।”

আমি বললাম, “সম্ভবত সব লেখকরাই কিছু পরিমাণে উদ্ভাবক, কারণ, তারা মানুষকে বর্ণনা করে জীবনে তাদের যেমনটি দেখতে চায় তেমনিটি ক’রে। একথাও আমি বললাম, যে-সব সক্রিয় লোক জীবনের অন্যায়কে যে-কোনো উপায়ে, এমন কি হিংসার দ্বারাও প্রতিরোধ করতে চায়, তাদের আমি পছন্দ করি।”

“কিন্তু হিংসাটাই যে সবচেয়ে বড়ো অন্যায়।” তিনি আমার একখানা হাত নিজের হাতে নিয়ে বলে উঠলেন, “তুমি এই স্বত-বিরোধিতার হাত থেকে কেমন ক’রে রক্ষা পাবে, উদ্ভাবক? তোমার ‘আমার সহযাত্রী’ লেখাটি উদ্ভাবন নয়-এবং উদ্ভাবন নয় ব’লেই ওটি সুন্দর। কিন্তু তুমি যখন মগজের সাহায্য নাও, তখন তুমি জন্ম দিয়ে বসো নাইটদের-যতো সব আমাডাইস আর সিফ্রিন্ডদের।”