০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৩৫)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • 16

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

‘না, দেব না,’ মা-র চোখের দিকে না তাকিয়ে একগুয়ের মতো বললুম, ‘ওটা বাবার জিনিস।’
‘তো হয়েছেটা কী? তুই ওটা নিয়ে কী করবি? পরে নিজেই আরেকটা কিনে নিতে পারবি’খন। গত কয়েক মাস ধরে তোর যে কী হয়েছে কিছুই বুঝতে পারি না। যেন পাগল হয়ে গেছিস একেবারে। শেষে কোনদিন তোর ওই মাওজার দিয়ে কাকে গুলি করে মারবি! যা বাবা, কাল রক্ষী-বাহিনীকে গিয়ে পিস্তলটা দিয়ে আয়, কেমন?’
‘না,’ প্লেটটা একপাশে ঠেলে দিয়ে হড়হড় করে একগাদা কথা বলে ফেললুম।
‘আমি অন্য আরেকটা পিস্তল চাই না, ঠিক এটাই চাই! এটা আর কারো নয়, এটা বাবার। আমি মোটেই পাগল হই নি, মা। আমি তো কারো গায়ে হাত দিচ্ছি না। ওরা সবসময়ে আমার পেছনে লাগে কেন? ইশকুল থেকে আমায় তাড়িয়ে দিল তো ভারি বয়েই গেল। আমিই ছেড়ে দিতুম ইশকুল। পিস্তলটা আমি লুকিয়ে রাখব।’
‘পোড়া কপাল আমার!’ মা খেপে উঠে বললেন। ‘ওরা তোকে গারদে পুরে রাখবে’খন আর পিস্তল না দেয়া পর্যন্ত ছাড়বে না যখন, তখন টের পাবি!’
আমিও চটে উঠলুম, ‘তাতে আমার ঘে’চু হবে। ওরা তো বাস্স্কাকভকেও জেলে পুরে রেখেছে, তাতে হয়েছে কী? রাখুক গে ওরা আমায় যত ইচ্ছে জেলে ভরে, কিছুতেই আমি পিস্তলটা ওদের দেব না, প্রাণ থাকতে না!’ একটুক্ষণ চুপ করে থেকে শেষের কথাগুলো এত জোরে চে’চিয়ে বললুম যে মা থমকে গেলেন।
‘আচ্ছা, আচ্ছা, দিস্ না,’ এবার আগের চেয়ে শান্তভাবে বললেন মা। ‘আমার কাছে ও সবই সমান।’ তারপর কী যেন একটা চিন্তা করতে করতে অন্যমনস্ক ভাবে উঠে দরজার দিকে চললেন। হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে খুব তিক্তভাবে বললেন, ‘মরার আগে আরও যে কীভাবে আমার জীবন তোমরা জালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে, কে জানে!’

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৩৫)

০৮:০০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

‘না, দেব না,’ মা-র চোখের দিকে না তাকিয়ে একগুয়ের মতো বললুম, ‘ওটা বাবার জিনিস।’
‘তো হয়েছেটা কী? তুই ওটা নিয়ে কী করবি? পরে নিজেই আরেকটা কিনে নিতে পারবি’খন। গত কয়েক মাস ধরে তোর যে কী হয়েছে কিছুই বুঝতে পারি না। যেন পাগল হয়ে গেছিস একেবারে। শেষে কোনদিন তোর ওই মাওজার দিয়ে কাকে গুলি করে মারবি! যা বাবা, কাল রক্ষী-বাহিনীকে গিয়ে পিস্তলটা দিয়ে আয়, কেমন?’
‘না,’ প্লেটটা একপাশে ঠেলে দিয়ে হড়হড় করে একগাদা কথা বলে ফেললুম।
‘আমি অন্য আরেকটা পিস্তল চাই না, ঠিক এটাই চাই! এটা আর কারো নয়, এটা বাবার। আমি মোটেই পাগল হই নি, মা। আমি তো কারো গায়ে হাত দিচ্ছি না। ওরা সবসময়ে আমার পেছনে লাগে কেন? ইশকুল থেকে আমায় তাড়িয়ে দিল তো ভারি বয়েই গেল। আমিই ছেড়ে দিতুম ইশকুল। পিস্তলটা আমি লুকিয়ে রাখব।’
‘পোড়া কপাল আমার!’ মা খেপে উঠে বললেন। ‘ওরা তোকে গারদে পুরে রাখবে’খন আর পিস্তল না দেয়া পর্যন্ত ছাড়বে না যখন, তখন টের পাবি!’
আমিও চটে উঠলুম, ‘তাতে আমার ঘে’চু হবে। ওরা তো বাস্স্কাকভকেও জেলে পুরে রেখেছে, তাতে হয়েছে কী? রাখুক গে ওরা আমায় যত ইচ্ছে জেলে ভরে, কিছুতেই আমি পিস্তলটা ওদের দেব না, প্রাণ থাকতে না!’ একটুক্ষণ চুপ করে থেকে শেষের কথাগুলো এত জোরে চে’চিয়ে বললুম যে মা থমকে গেলেন।
‘আচ্ছা, আচ্ছা, দিস্ না,’ এবার আগের চেয়ে শান্তভাবে বললেন মা। ‘আমার কাছে ও সবই সমান।’ তারপর কী যেন একটা চিন্তা করতে করতে অন্যমনস্ক ভাবে উঠে দরজার দিকে চললেন। হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে খুব তিক্তভাবে বললেন, ‘মরার আগে আরও যে কীভাবে আমার জীবন তোমরা জালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে, কে জানে!’