আর্কাদি গাইদার
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
দেখলুম, দাঁড়কাক বক্তৃতা শেষ করার মুখে একটা হাত তুলে গলা চড়িয়েছেন।
আমি চে’চিয়ে ডাকলুম:
“সেমিওন ইভানোভিচ! এই যে, সেমিওন ইভানোভিচ!’
কাছেই কে একজন আমার দিকে ‘শৃশ্’ করে উঠল। পেছনে খোঁচা লাগাল একটা হাত। কিন্তু আমি কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ না-করে আরও জোরে পাগলের মতো চেচিয়ে উঠলুম:
‘সেমিওন ইভানোভিচ!’
এবার দেখলুম অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়কাক হাত দুটো সামনের দিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তারপর দ্রুত কথা শেষ করে তিনি সিড়ি দিয়ে নামতে লাগলেন।
জনতার মধ্যে থেকে একজন লোক চটে উঠে হাতটা ধরে আমায় একপাশে টেনে আনলেন।
কিন্তু গালিগালাজ কিংবা ধস্তাধস্তির দিকে আমার এতটুকু নজর ছিল না। আমি তখন আনন্দে পাগলের মতো হাসছি।
যে-মজুরটি আমার হাত ধরেছিলেন তিনি আমায় এক ঝাঁকানি দিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘এ্যাই, মাস্তান, তোর মতলবখানা কী?’
‘আমি তো মাস্তান নই,’ পরম সুখে একগাল হেসে আর ঠান্ডায় জমে-যাওয়া পায়ে তিড়িং-তিড়িং নাচতে-নাচতে জবাব দিলুম। ‘আমি দাঁড়কাককে পেয়ে গেছি। সেমিওন ইভানোভিচ…’
আমার মুখে এমন একটা কিছু ছিল যা দেখে লোকটিও না-হেসে পারলেন না।
‘দাঁড়কাক কে আবার?’ আগের চেয়ে নরম গলায় তিনি বললেন।
‘না-না, দাঁড়কাক নয়। সেমিওন ইভানোভিচ। ওই তো তিনি আসছেন…’
ভিড় ঠেলে দাঁড়কাক এসেই আমার কাঁধ চেপে ধরলেন।