০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৫২)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 11

শশাঙ্ক মণ্ডল

আউল বাউল দরবেশ সাঁই এই চারটি ধারার খবর মেলে বাউলবিরোধী বাউল ধ্বংস ফৎওয়াতে; এই চার ধারার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা হয়েছিল।

সমাজের উপরিতলার মানুষেরা যখন সাধন ভজনের নামে আত্মমুক্তি স্বর্গীয় জীবনের স্বপ্ন দেখেন তখন গ্রামের এসব সাধকরা চান ধর্মের নামে অসত্যের উৎসাদন, সামাজিক চেতনার জাগরণ এবং মানস সত্যের সঠিক পথে সকলকে টেনে আনতে। দেহতত্ত্ব বাউলের গানে কৃষিভিত্তিক সমাজের রূপক প্রতীক এমন ভাবে তারা তুলে ধরেছেন যার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষগুলির মনের দুয়ার স্পর্শ করে তাদের অন্তরকে স্পর্শ করে। তাঁতী, জোলা, মোদক চাষীর জীবন অভিজ্ঞতাকে এই গানের মধ্যে কাজে লাগিয়ে তাদের অন্তরসত্যের স্বরূপ উদঘাটন করার চেষ্টা করেন এসব দেহাত্মবাদীরা।

প্রাত্যহিক জীবন অভিজ্ঞতা, ব্যবহারিক জীবনের নানা রকম ছবি ও পরিবেশ এসব গানের মধ্যে রূপক উৎপ্রেক্ষার ভঙ্গীতে প্রকাশ পেয়েছে গুবরে পোকা গোবর ঠেলে, আমার দশা কি তেমন হবে। অথবা যখন নদী বোঝাই ছিল/ ঝড় তুফানের ভয় ছিল না গো। নদীর জল শুকাইল চর পড়িল/ তবু নদীর বেগ গেল না। আমার এই দেহ নদী।’

এরফান শাহঃ ২৪ পরগণার বারাসত মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে গান গেয়ে বেড়াতেন। বসিরহাট বারাসতের অনেক বাউল তার শিষ্য। তাঁর অন্যতম প্রধান শিষ্য আপাল সিদ্ধি জিরাট গ্রামের পাহাড় শাহ এবং ভোলা শাহ। ভোলা শাহের শিষ্য বলে পরিচয় দেয় বাউলরা এখনও এরফান শাহের এই গান গায়-

মতি আছে সুমধুরে চোরাইয়ে ধর তারে ভক্তি দিলে ভক্তের দ্বারে রতন পাওয়া যায় সুধা আছে চন্দ্র মূলে মধুর শোভা আছে ফুলে। গুরুর কাছে চেতন হলে সিদ্ধ হয় সেবায় এরফান শাহের এই বাণী ফুলে ফলে গুণমণি এবার দুয়ে মিশাইলে দেবো পরিচয়।।

২৪ পরগণার আদি বাউল গুরু বেজো ক্ষ্যাপার একটা গানে পাওয়া যায়।

ব্রজপুরে রূপনগরে যাবি যদি মন তবে করগে যা স্বরূপ সাধন স্বরূপের রুপ রুপের স্বরূপ স্বরূপ দেহে হয় মিলন ইত্যাদি।

যদি দেহস্থিত ব্রজধামে ব্রজেশ্বরকে উপলব্ধি করতে হয় তবে স্বরূপ সাধন করতেহবে। নবদ্বীপের বিখ্যাত বনচারী বাগানের চণ্ডীদাস গোঁসাই যশোর জেলার কামারহাটি গ্রামের অধিবাসী ছিলেন; জাতিতে তিনি বৈশ্যকপালী। ১৩৪১ সালে দেহত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার নাকি বয়স হয়েছিল ১৫১ বৎসর- (১০)

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৫২)

১২:০০:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শশাঙ্ক মণ্ডল

আউল বাউল দরবেশ সাঁই এই চারটি ধারার খবর মেলে বাউলবিরোধী বাউল ধ্বংস ফৎওয়াতে; এই চার ধারার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা হয়েছিল।

সমাজের উপরিতলার মানুষেরা যখন সাধন ভজনের নামে আত্মমুক্তি স্বর্গীয় জীবনের স্বপ্ন দেখেন তখন গ্রামের এসব সাধকরা চান ধর্মের নামে অসত্যের উৎসাদন, সামাজিক চেতনার জাগরণ এবং মানস সত্যের সঠিক পথে সকলকে টেনে আনতে। দেহতত্ত্ব বাউলের গানে কৃষিভিত্তিক সমাজের রূপক প্রতীক এমন ভাবে তারা তুলে ধরেছেন যার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষগুলির মনের দুয়ার স্পর্শ করে তাদের অন্তরকে স্পর্শ করে। তাঁতী, জোলা, মোদক চাষীর জীবন অভিজ্ঞতাকে এই গানের মধ্যে কাজে লাগিয়ে তাদের অন্তরসত্যের স্বরূপ উদঘাটন করার চেষ্টা করেন এসব দেহাত্মবাদীরা।

প্রাত্যহিক জীবন অভিজ্ঞতা, ব্যবহারিক জীবনের নানা রকম ছবি ও পরিবেশ এসব গানের মধ্যে রূপক উৎপ্রেক্ষার ভঙ্গীতে প্রকাশ পেয়েছে গুবরে পোকা গোবর ঠেলে, আমার দশা কি তেমন হবে। অথবা যখন নদী বোঝাই ছিল/ ঝড় তুফানের ভয় ছিল না গো। নদীর জল শুকাইল চর পড়িল/ তবু নদীর বেগ গেল না। আমার এই দেহ নদী।’

এরফান শাহঃ ২৪ পরগণার বারাসত মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে গান গেয়ে বেড়াতেন। বসিরহাট বারাসতের অনেক বাউল তার শিষ্য। তাঁর অন্যতম প্রধান শিষ্য আপাল সিদ্ধি জিরাট গ্রামের পাহাড় শাহ এবং ভোলা শাহ। ভোলা শাহের শিষ্য বলে পরিচয় দেয় বাউলরা এখনও এরফান শাহের এই গান গায়-

মতি আছে সুমধুরে চোরাইয়ে ধর তারে ভক্তি দিলে ভক্তের দ্বারে রতন পাওয়া যায় সুধা আছে চন্দ্র মূলে মধুর শোভা আছে ফুলে। গুরুর কাছে চেতন হলে সিদ্ধ হয় সেবায় এরফান শাহের এই বাণী ফুলে ফলে গুণমণি এবার দুয়ে মিশাইলে দেবো পরিচয়।।

২৪ পরগণার আদি বাউল গুরু বেজো ক্ষ্যাপার একটা গানে পাওয়া যায়।

ব্রজপুরে রূপনগরে যাবি যদি মন তবে করগে যা স্বরূপ সাধন স্বরূপের রুপ রুপের স্বরূপ স্বরূপ দেহে হয় মিলন ইত্যাদি।

যদি দেহস্থিত ব্রজধামে ব্রজেশ্বরকে উপলব্ধি করতে হয় তবে স্বরূপ সাধন করতেহবে। নবদ্বীপের বিখ্যাত বনচারী বাগানের চণ্ডীদাস গোঁসাই যশোর জেলার কামারহাটি গ্রামের অধিবাসী ছিলেন; জাতিতে তিনি বৈশ্যকপালী। ১৩৪১ সালে দেহত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার নাকি বয়স হয়েছিল ১৫১ বৎসর- (১০)