সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ৭০-৮০ শতাংশ ব্যয়বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন
- গ্রামাঞ্চলে প্রতি কেজি ৮-১২ টাকা এবং শহরের বাজারে ১৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে
- বিদ্যুৎ, শ্রম খরচ ও অন্যান্য ব্যয়ের বৃদ্ধি মিলিয়ে প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের ব্যয় বেড়ে ৯.৬২ টাকা হয়েছে
- বাংলাদেশে এবার ১ কোটি ২০ লাখ টন আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি
লোকসান কাটিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাবার স্বার্থে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা সরকারের কাছে বর্তমানে চালু থাকা নিয়মে ব্যাংক ঋনের ১৫-১৭ শতাংশ সুদের হার কমিয়ে ৭ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন। এ সহায়তা না দিলে তারা তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে।
ঢাকায় বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)-এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা সতর্ক করেছেন যে, এ দাবি পূরণ না হলে প্রতি কেজির সংরক্ষণ ব্যয় ৮ টাকা নির্ধারণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিসিএসএ সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, ক্লোড স্টোরেজ মালিকরা মারাত্মক আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে তারা ১৫-১৭ শতাংশ সুদের হার বহন করছে, যা দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার জন্য অসহনীয়।
বিদ্যুৎ, শ্রম খরচ ও অন্যান্য ব্যয়ের বৃদ্ধি মিলিয়ে প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের ব্যয় বেড়ে ৯.৬২ টাকা হয়েছে।
এই ব্যয়বৃদ্ধির পরও সংরক্ষণাগার মালিকরা লোকসানে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে ৬৫-৭২ কেজির প্রতি বস্তার জন্য তারা মাত্র ৩৫০ টাকা নিচ্ছেন, যা প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম।
সরকার নতুন নীতিমালার আওতায় প্রতি বস্তার ওজন ৫০ কেজিতে সীমাবদ্ধ করায় তাদের আর্থিক সমস্যা আরও বেড়েছে।
ফলে, সংস্থাটি গত বছরের ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি কেজির সংরক্ষণ ব্যয় ৮ টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিসিএসএ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণ কার্যক্রমকে কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদের হারে ঋণ পাওয়া যায়।
বাবু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি এই সহায়তা না দেওয়া হয়, তবে অনেক সংরক্ষণাগার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
“যদি সরকার পূর্বের ভাড়া হার বহাল রাখে, তাহলে আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না,” তিনি বলেন এবং কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশে এবার ১ কোটি ২০ লাখ টন আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।
তবে, এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হওয়ায় দাম পড়ে গেছে। গ্রামাঞ্চলে প্রতি কেজি ৮-১২ টাকা এবং শহরের বাজারে ১৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরা উৎপাদন খরচও উঠাতে পারছেন না।
বিসিএসএ-এর সংরক্ষণ ব্যয় প্রতি কেজি ৪.৫-৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
যদিও এখন প্রতি ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ৭০-৮০ শতাংশ ব্যয়বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন।
তবে বাবু আশ্বস্ত করে বলেন, সংরক্ষণ ব্যয়ের এই বৃদ্ধির পরও ২০২৫ সালে অফ-সিজনে আলুর দাম ৪০ টাকা কেজির বেশি হবে না। “যদি এর বেশি হয়, তবে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে,” তিনি বলেন।