সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১। বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা ২০২৫ সালে ৩০% ছাড়াতে পারে।
২। আইনি জটিলতায় ঋণ পুনরুদ্ধার ধীরগতির, ব্যাংকিং খাত চাপে রয়েছে।
৩। বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নীতি নিচ্ছে, তবে সংকট আরও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ মোট ঋণের ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক পূর্বাভাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ধরনের ঋণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস ব্যাংকিং শিল্পের জন্য উদ্বেগজনক, যা ইতোমধ্যে অনিয়ম ও অনিয়ন্ত্রিত ঋণ ব্যবস্থাপনার কারণে চাপে রয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, দেশে শ্রেণিবদ্ধ ঋণের পরিমাণ বড় উল্লম্ফন ঘটিয়ে ২.৮৫ ট্রিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট ঋণের ১৭ শতাংশের মতো।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য সর্বশেষ আর্থিক নীতিমালা (এমপিএস) প্রকাশ করেছে, যেখানে অনিয়মিত ঋণের জন্য দায়ী প্রধান কারণ হিসেবে ব্যবস্থাগত দুর্বলতা, নিয়ন্ত্রক ঘাটতি, এবং অর্থ পাচার ও অবৈধ মূলধন স্থানান্তরের মতো শোষণমূলক অনুশীলনগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঋণ শ্রেণিবিন্যাস, সংস্থান এবং পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যাপক নির্দেশিকা চালু করেছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মান অনুসারে কঠোর বিধিবিধান বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিয়ন্ত্রক নজরদারি জোরদার করা এবং এসব সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা, স্থায়িত্ব এবং জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
আইনি জটিলতায় আটকে থাকা খেলাপি ঋণের পুনরুদ্ধারের জন্য, বিশেষ করে অর্থ ঋণ আদালত (Artha Rin Adalat) এবং উচ্চ আদালতে চলমান মামলাগুলোর ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আইন বিভাগগুলোর সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যাতে তারা দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও কয়েকজন ব্যাংকারের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আইনি জটিলতায় আটকে থাকা খেলাপি ঋণের উদ্ধার কাজটি বেশ জটিল। মামলা দ্রুত শেষ হবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। আর বর্তমানে শিল্প ও ব্যবসায়ে যে অচলাবস্থা তাতে এই খেলাপি ঋণ বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি যদি কোন মিরকল না ঘটে।