১১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’ হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে

পাকিস্তানে পোর্ট নয়, বিমান বন্দর নয়, সফলতার চাবিকাঠি এখন “গাধা”

  • Sarakhon Report
  • ০৩:১৮:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 14

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • চীনা কোম্পানি পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধ অঞ্চলের গাধা খামারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে
  • চীনের হাংএং ট্রেড কোম্পানি ৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে গওয়াদারে একটি গাধা’র কসাইখান চালু করেছে
  • ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ইজিয়াও উৎপাদনে ব্যবহার করা,ইজিয়াও রক্তশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত এবং এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

এক দশক আগে পাকিস্তানের গওয়াদার বন্দরকে সিঙ্গাপুরের পরবর্তী বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছিল। তবে, চীনের বিনিয়োগে নির্মিত বন্দর ও আশেপাশের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রত্যাশিত বাণিজ্যিক সাফল্য দিতে পারেনি।  তবে এই মাসে, চীনের হাংএং ট্রেড কোম্পানি ৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে গওয়াদারে একটি গাধার কসাইখান চালু করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল গাধার চামড়া সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ইজিয়াও উৎপাদনে ব্যবহার করা। ইজিয়াও রক্তশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত এবং এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চীন-পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক

পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বছরে ৩,০০,০০০টিরও বেশি গাধার চামড়া সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে, যা আনুমানিক ৮ বিলিয়ন ডলারের ইজিয়াও বাজারকে সমর্থন করবে। এক কর্মকর্তার কথামতে, প্রতিদিন ১,০০০টি গাধার রপ্তানি নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিশ্চিত হয়েছে।

সরবরাহ ও উৎপাদনের প্রক্রিয়া

চীনা কোম্পানি পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধ অঞ্চলের গাধা খামারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সেখানে পালন করা গাধাগুলো গওয়াদারে নিয়ে এসে কাশখানায় কাটা হবে এবং চামড়া রপ্তানি করা হবে। গাধার চামড়া থেকে প্রাপ্ত জেলাটিন ইজিয়াও তৈরির জন্য অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য, ইজিয়াও কেবল ঔষধ হিসেবেই নয়, চীনা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে স্ন্যাকস হিসেবেও জনপ্রিয়।

সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিতর্ক

পাকিস্তানে, যেখানে গাধা প্রধানত গ্রামীণ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়, সেখানে গাধা কাটা সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বেশ কিছু ধর্মীয় নেতার আপত্তি থাকলেও, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও উন্নয়নের অভাবে বিষয়টি তীব্র বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেনি।

আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

মার্কিন কংগ্রেসিয়াল রিসার্চ সার্ভিস ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে গাধার সংখ্যা হ্রাসের আশঙ্কা তুলে ধরা হয়েছিল। গত বছর আফ্রিকান ইউনিয়ন গাধার চামড়া বিক্রয় নিষিদ্ধ করে, কারণ বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গাধা আফ্রিকায় রয়েছে। এক স্থানীয় কর্মকর্তার মন্তব্য অনুযায়ী, সরকার অনুমোদন দিলে পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা বিলুপ্তির পথে যেতে পারে।

গওয়াদারের বর্তমান পরিস্থিতি

গওয়াদারের বন্দর ও বিমানবন্দর প্রত্যাশিত সাফল্য না পেয়ে, এই গাধা কাশখানা একমাত্র কার্যকর ব্যবসায়িক উদ্যোগ হিসেবে সামনে এসেছে। একজন গবেষক বলেন, “এই উদ্যোগের ফলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে এবং স্থানীয়দের বোঝানো কঠিন হবে যে এটি একটি বৈধ ব্যবসা।” স্থানীয়রা অনেকে মজা করে বলেন কেউ, “বন্দর কাজ করেনি, বিমানবন্দরও সফল হলো না – এখন সবকিছুই গাধার উপর নির্ভর করছে, অন্তত উচ্চাকাঙ্ক্ষা কম!”

উপসংহার

চীনের বিনিয়োগে গওয়াদায় চালু হওয়া গাধা কসাইখানা পাকিস্তানের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করলেও, সামাজিক, ধর্মীয় ও পরিবেশগত দিক থেকে চলমান বিতর্ক এই উদ্যোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’

পাকিস্তানে পোর্ট নয়, বিমান বন্দর নয়, সফলতার চাবিকাঠি এখন “গাধা”

০৩:১৮:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • চীনা কোম্পানি পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধ অঞ্চলের গাধা খামারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে
  • চীনের হাংএং ট্রেড কোম্পানি ৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে গওয়াদারে একটি গাধা’র কসাইখান চালু করেছে
  • ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ইজিয়াও উৎপাদনে ব্যবহার করা,ইজিয়াও রক্তশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত এবং এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

এক দশক আগে পাকিস্তানের গওয়াদার বন্দরকে সিঙ্গাপুরের পরবর্তী বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছিল। তবে, চীনের বিনিয়োগে নির্মিত বন্দর ও আশেপাশের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রত্যাশিত বাণিজ্যিক সাফল্য দিতে পারেনি।  তবে এই মাসে, চীনের হাংএং ট্রেড কোম্পানি ৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে গওয়াদারে একটি গাধার কসাইখান চালু করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল গাধার চামড়া সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ইজিয়াও উৎপাদনে ব্যবহার করা। ইজিয়াও রক্তশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত এবং এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চীন-পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক

পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বছরে ৩,০০,০০০টিরও বেশি গাধার চামড়া সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে, যা আনুমানিক ৮ বিলিয়ন ডলারের ইজিয়াও বাজারকে সমর্থন করবে। এক কর্মকর্তার কথামতে, প্রতিদিন ১,০০০টি গাধার রপ্তানি নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিশ্চিত হয়েছে।

সরবরাহ ও উৎপাদনের প্রক্রিয়া

চীনা কোম্পানি পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধ অঞ্চলের গাধা খামারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সেখানে পালন করা গাধাগুলো গওয়াদারে নিয়ে এসে কাশখানায় কাটা হবে এবং চামড়া রপ্তানি করা হবে। গাধার চামড়া থেকে প্রাপ্ত জেলাটিন ইজিয়াও তৈরির জন্য অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য, ইজিয়াও কেবল ঔষধ হিসেবেই নয়, চীনা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে স্ন্যাকস হিসেবেও জনপ্রিয়।

সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিতর্ক

পাকিস্তানে, যেখানে গাধা প্রধানত গ্রামীণ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়, সেখানে গাধা কাটা সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বেশ কিছু ধর্মীয় নেতার আপত্তি থাকলেও, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও উন্নয়নের অভাবে বিষয়টি তীব্র বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেনি।

আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

মার্কিন কংগ্রেসিয়াল রিসার্চ সার্ভিস ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে গাধার সংখ্যা হ্রাসের আশঙ্কা তুলে ধরা হয়েছিল। গত বছর আফ্রিকান ইউনিয়ন গাধার চামড়া বিক্রয় নিষিদ্ধ করে, কারণ বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গাধা আফ্রিকায় রয়েছে। এক স্থানীয় কর্মকর্তার মন্তব্য অনুযায়ী, সরকার অনুমোদন দিলে পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা বিলুপ্তির পথে যেতে পারে।

গওয়াদারের বর্তমান পরিস্থিতি

গওয়াদারের বন্দর ও বিমানবন্দর প্রত্যাশিত সাফল্য না পেয়ে, এই গাধা কাশখানা একমাত্র কার্যকর ব্যবসায়িক উদ্যোগ হিসেবে সামনে এসেছে। একজন গবেষক বলেন, “এই উদ্যোগের ফলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে এবং স্থানীয়দের বোঝানো কঠিন হবে যে এটি একটি বৈধ ব্যবসা।” স্থানীয়রা অনেকে মজা করে বলেন কেউ, “বন্দর কাজ করেনি, বিমানবন্দরও সফল হলো না – এখন সবকিছুই গাধার উপর নির্ভর করছে, অন্তত উচ্চাকাঙ্ক্ষা কম!”

উপসংহার

চীনের বিনিয়োগে গওয়াদায় চালু হওয়া গাধা কসাইখানা পাকিস্তানের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করলেও, সামাজিক, ধর্মীয় ও পরিবেশগত দিক থেকে চলমান বিতর্ক এই উদ্যোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।