সারাক্ষণ ডেস্ক
ভিয়েতনামের জাতীয় সংসদ বুধবার ২০২৫ সালের জন্য দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এতে দেশটির প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চীনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী একটি রেল প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সরকার ২০২৫ সালের জন্য নতুন প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮% নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়, যা পূর্ববর্তী ৬.৫% থেকে ৭.০% লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি।
“দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সামষ্টিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে,” সংসদে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে সরকার জানিয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চলতি বছরে মুদ্রাস্ফীতি ৪.৫% থেকে ৫.০% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
সংসদ একটি নতুন রেল প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে, যা উত্তর ভিয়েতনামের একটি প্রধান সমুদ্রবন্দরকে চীনের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮.৩ বিলিয়ন ডলার, যার একটি অংশ চীনা সরকারের ঋণ থেকে আসবে।
ভিয়েতনাম, যা প্রধানত রপ্তানিনির্ভর একটি উৎপাদনকেন্দ্র, দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সংসদ ইতোমধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের উন্নয়নের নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে, যার প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০৩১ সালের মধ্যে নির্মিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই নীতিমালার আওতায় সরকার কোনো টেন্ডার ছাড়াই সরাসরি ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারবে।
এছাড়া, সংসদ ইলন মাস্কের স্টারলিংককে দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে, যেখানে স্থানীয় কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানায় পরিচালিত হতে পারবে। পাশাপাশি, দেশটির সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনাও অনুমোদিত হয়েছে।
মঙ্গলবার, সংসদ একটি প্রশাসনিক সংস্কার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা সরকারি সংস্থাগুলোর সংখ্যা ২০% পর্যন্ত কমিয়ে আনার মাধ্যমে ব্যয় সংকোচন এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির করেছে।
২০২৪ সালের হিসাবে, ভিয়েতনামের মাথাপিছু জিডিপি ছিল প্রায় ৪,৭০০ ডলার, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটির উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। তুলনামূলকভাবে, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি একই সময়ে প্রায় ২,৬২৫ ডলার ছিল। যদিও উভয় দেশই উৎপাদন ও রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাচ্ছে, ভিয়েতনামের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ ও ডিজিটাল সম্প্রসারণ দেশটিকে আরও দ্রুত অর্থনৈতিক রূপান্তরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।