স্টাফ রাইটার
সারাংশ
- আসামের কাছাড় জেলা প্রশাসন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাতে কারফিউ জারি করেছে
- সীমান্ত এলাকায় রাতের বেলায় চলাচল নিষিদ্ধ, নদীপথে মাছ ধরা এবং পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও কঠোর নিয়ম প্রযোজ্য
- চোরাচালান, সন্ত্রাসবাদ এবং অবৈধ কার্যকলাপ রোধ করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য
- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং বিএসএফের টহল বাড়ানো হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে
ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা এবং এলাকার শান্তি বজায় রাখতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই উদ্দেশ্যে জেলায় রাতের কারফিউসহ নতুন কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
রাত্রিকালীন কারফিউ জারি
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী:
- সীমান্তসংলগ্ন এক কিলোমিটার এলাকায় সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত যেকোনো রকম চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ।
- চোরাচালান, উগ্রবাদী তৎপরতা এবং অননুমোদিত পণ্য ও পশু পাচার বন্ধ করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত বিধিনিষেধের কারণ ও লক্ষ্য
- আইনশৃঙ্খলা রক্ষা: সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেআইনি কাজ রুখে শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখা।
- সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার: অবৈধ যাতায়াত ও চোরাচালান কমিয়ে সামগ্রিক নিরাপত্তা আরো শক্তিশালী করা।
প্রশাসনিক ক্ষমতার ব্যবহার
- জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এর ১৬৩ ধারা অনুযায়ী এই আদেশ জারি করেছেন।
- এই ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
- যাদব বলেছেন, “দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
- সাময়িকভাবে দুই মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
নদী পথে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
সীমান্ত সংলগ্ন নদী এলাকায় বাড়তি কিছু নিয়মও জারি করা হয়েছে:
- সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সুরমা নদী ও নদীর পাশের উঁচু পাড়ে যেকোনো ধরনের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
- মাছ ধরার ক্ষেত্রেও কড়া নিয়ম প্রযোজ্য। স্থানীয়দের কাটিগড়া সার্কেলের সার্কেল অফিসারের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নিতে হবে।
- বৈধ লীসধারীদের অনুমতিপত্রও বাধ্যতামূলক। অনুমতির কপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিএসএফের ১৭০ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টকে জমা দিতে হবে।
পণ্য পরিবহনে সীমাবদ্ধতা
রাত্রিকালীন কার্ফিউয়ের সময় (সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত):
- চিনি, চাল, গম, ভোজ্যতেল ও লবণসহ প্রয়োজনীয় পণ্য সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোনো বাহনে বহন করা যাবে না।
- বিশেষ প্রয়োজনে এসব পণ্য পরিবহন করতে হলে কাটিগড়া সার্কেলের সার্কেল অফিসারের অনুমতি নিতে হবে।
- সরবরাহ বিভাগ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরই পণ্য পরিবহন করা যাবে। অনুমতিপত্রের কপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিএসএফের ১৭০ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টকে জমা দিতে হবে।
প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রস্তুতি
কাছাড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) নুমাল মহত্তা জানিয়েছেন:
- রাতের টহল জোরদার করা হয়েছে, যেন কোনো অবৈধ কার্যকলাপ ঘটতে না পারে।
- পুলিশের পাশাপাশি বিএসএফ সদস্যরাও যৌথভাবে সীমান্তে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপসংহার
সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাছাড় জেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত তৎপরতার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে, পাশাপাশি গোটা অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাও অটুট থাকবে।
(রিপোর্টটি’র সূত্র হিন্দুস্থান টাইমস)