০৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে ইরানে চীনা বিনিয়োগ অনিশ্চিত, তবু মধ্যপ্রাচ্যের আহ্বান অটুট একজন চীনা আন্টি, ৫টি অ্যাপ, ৬০টি প্রথম ডেট জুলাই যাদুঘরে কি “ মুরাদনগরের দ্রৌপদী” স্থান পাবে?

সুজুকি’র ভারতে ছয় বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা

  • Sarakhon Report
  • ০৭:০০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 14

সারাক্ষণ স্টাফ রাইটার

সারাংশ

১. এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো ও ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা

২.  সুজুকি ভারতে বছরে ৪ মিলিয়ন গাড়ি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে

৩. ভারতে তৈরি জিমিনি মডেলটি জাপান সহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে

৪. বৈদ্যুতিক গাড়ির নতুন মডেল আনছে

জাপানের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা সুজুকি মোটর ঘোষণা দিয়েছে যে তারা আগামী ছয় বছরে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করবে ভারতে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশটির উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো ও ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা।

১. নতুন মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা

  • দীর্ঘ মেয়াদ: সুজুকির নতুন মধ্যমেয়াদি পরিচালন কৌশল ২০৩১ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
  • উৎপাদন লক্ষ্য: এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতে বছরে ৪ মিলিয়ন গাড়ি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা দেশীয় ও বৈশ্বিক বাজার—উভয় ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দেবে।

২. ভারতে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি

  • বর্তমান উৎপাদন: ২০২৪ সালে সুজুকির গাড়ি উৎপাদন ভারতে সর্বোচ্চ ২.০৬ মিলিয়ন ইউনিট ছুঁয়েছে, যা কোম্পানির বৈশ্বিক উৎপাদনের ৬২.৫%।
  • আগ্রহ বাড়ার কারণ: প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুজুকি জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান বাজার চাহিদা মেটাতে ভারতে বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ মিলিয়নে নিয়ে যাওয়া হবে।
  • বিনিয়োগ পরিকল্পনা: নতুন কারখানা ও উৎপাদন সম্প্রসারণে ৫৫০ বিলিয়ন ইয়েন বিনিয়োগ করা হবে, যা ভারতীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করে তুলবে।

৩. রপ্তানি ক্ষমতা জোরদার

  • রপ্তানির কেন্দ্র: ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই শুরু করেছে সুজুকি।
  • জনপ্রিয় মডেল: ভারতে তৈরি জিমনি (Jimny) মডেলটি জাপানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চাহিদা এত বেশি যে কিছু সময়ের জন্য অর্ডার গ্রহণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।
  • নতুন বাজার: মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও ভারত-উৎপাদিত মডেল পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ ভৌগোলিকভাবে কাছাকাছি হওয়ায় পরিবহন খরচ কম এবং সেখানকার ক্রেতাদের চাহিদার সঙ্গে মিল রয়েছে।

৪. আর্থিক লক্ষ্য

  • মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা: ২০৩১ অর্থবছরের শেষ নাগাদ ৮০০ বিলিয়ন ইয়েন পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে চায় সুজুকি, যা ২০২৪ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৭২% বেশি।

  • রাজস্ব বৃদ্ধি: একই সময়ে, কোম্পানির রাজস্ব ৫.৪ ট্রিলিয়ন ইয়েন থেকে ৮ ট্রিলিয়ন ইয়েনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
  • বিনিয়োগের পরিমাণ: আগামী ছয় বছরে কোম্পানির ২ ট্রিলিয়ন ইয়েন মূলধনী বিনিয়োগের প্রায় ৬০% ভারতেই করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৫. ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও বৈদ্যুতিক যানবাহন

  • বৃহৎ বাজার লক্ষ্য: সুজুকি চায় ভারতীয় বাজারের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ভোক্তার কাছে গাড়ি সহজলভ্য করতে এবং সামগ্রিকভাবে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষের কাছে আধুনিক যানবাহন পৌঁছে দিতে।
  • বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা: ২০৩১ সালের মধ্যে ভারতে ২.৫৪ মিলিয়ন গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় ৪২% বেশি। একই সময়ে বৈশ্বিক বিক্রি বেড়ে ৪.২ মিলিয়ন ইউনিট হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
  • ই ভিটারা (e VITARA): ২০২৫ সালের বসন্ত থেকে ভারতে সুজুকির প্রথম বৃহৎ পরিসরে উৎপাদিত ব্যাটারি-চালিত গাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে।
  • কৌশলগত দৃষ্টি: সরকারী প্রণোদনা ছাড়াও বৈদ্যুতিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়াতে কোম্পানি সীমিত মডেলের প্রতি গ্রাহক আস্থা গড়ার ওপর জোর দিচ্ছে, মডেলের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে এটি বেশি কার্যকর বলে মনে করছে সুজুকি।

৬. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে না ফেরা

  • অগ্রাধিকারের বিষয়: ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য বাজারে সুজুকির বিশাল কর্মকাণ্ডের কারণে বর্তমানে মার্কিন ও চীনা বাজারে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই।
  • সভাপতির মন্তব্য: প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুজুকি বলেন, “আমাদের হাতে ইতোমধ্যেই এত কাজ আছে যে এখন মার্কিন বা চীনা বাজারে প্রবেশ করার মতো সময় বা সুযোগ নেই।”

উপসংহার

সুজুকি মোটরের এই ব্যাপক বিনিয়োগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইঙ্গিত দেয় যে ভারত অদূর ভবিষ্যতে কেবল স্থানীয় চাহিদাই মেটাবে না, বরং বৈশ্বিক রপ্তানিরও একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়িসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কোম্পানির পরিকল্পনা ভারতীয় গাড়ি শিল্পের বৈশ্বিক গুরুত্বকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি?

সুজুকি’র ভারতে ছয় বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা

০৭:০০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ স্টাফ রাইটার

সারাংশ

১. এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো ও ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা

২.  সুজুকি ভারতে বছরে ৪ মিলিয়ন গাড়ি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে

৩. ভারতে তৈরি জিমিনি মডেলটি জাপান সহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে

৪. বৈদ্যুতিক গাড়ির নতুন মডেল আনছে

জাপানের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা সুজুকি মোটর ঘোষণা দিয়েছে যে তারা আগামী ছয় বছরে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করবে ভারতে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশটির উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো ও ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা।

১. নতুন মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা

  • দীর্ঘ মেয়াদ: সুজুকির নতুন মধ্যমেয়াদি পরিচালন কৌশল ২০৩১ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
  • উৎপাদন লক্ষ্য: এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতে বছরে ৪ মিলিয়ন গাড়ি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা দেশীয় ও বৈশ্বিক বাজার—উভয় ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দেবে।

২. ভারতে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি

  • বর্তমান উৎপাদন: ২০২৪ সালে সুজুকির গাড়ি উৎপাদন ভারতে সর্বোচ্চ ২.০৬ মিলিয়ন ইউনিট ছুঁয়েছে, যা কোম্পানির বৈশ্বিক উৎপাদনের ৬২.৫%।
  • আগ্রহ বাড়ার কারণ: প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুজুকি জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান বাজার চাহিদা মেটাতে ভারতে বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ মিলিয়নে নিয়ে যাওয়া হবে।
  • বিনিয়োগ পরিকল্পনা: নতুন কারখানা ও উৎপাদন সম্প্রসারণে ৫৫০ বিলিয়ন ইয়েন বিনিয়োগ করা হবে, যা ভারতীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করে তুলবে।

৩. রপ্তানি ক্ষমতা জোরদার

  • রপ্তানির কেন্দ্র: ভারতকে বৈশ্বিক রপ্তানির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই শুরু করেছে সুজুকি।
  • জনপ্রিয় মডেল: ভারতে তৈরি জিমনি (Jimny) মডেলটি জাপানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চাহিদা এত বেশি যে কিছু সময়ের জন্য অর্ডার গ্রহণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।
  • নতুন বাজার: মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও ভারত-উৎপাদিত মডেল পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ ভৌগোলিকভাবে কাছাকাছি হওয়ায় পরিবহন খরচ কম এবং সেখানকার ক্রেতাদের চাহিদার সঙ্গে মিল রয়েছে।

৪. আর্থিক লক্ষ্য

  • মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা: ২০৩১ অর্থবছরের শেষ নাগাদ ৮০০ বিলিয়ন ইয়েন পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে চায় সুজুকি, যা ২০২৪ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৭২% বেশি।

  • রাজস্ব বৃদ্ধি: একই সময়ে, কোম্পানির রাজস্ব ৫.৪ ট্রিলিয়ন ইয়েন থেকে ৮ ট্রিলিয়ন ইয়েনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
  • বিনিয়োগের পরিমাণ: আগামী ছয় বছরে কোম্পানির ২ ট্রিলিয়ন ইয়েন মূলধনী বিনিয়োগের প্রায় ৬০% ভারতেই করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৫. ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও বৈদ্যুতিক যানবাহন

  • বৃহৎ বাজার লক্ষ্য: সুজুকি চায় ভারতীয় বাজারের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ভোক্তার কাছে গাড়ি সহজলভ্য করতে এবং সামগ্রিকভাবে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষের কাছে আধুনিক যানবাহন পৌঁছে দিতে।
  • বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা: ২০৩১ সালের মধ্যে ভারতে ২.৫৪ মিলিয়ন গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় ৪২% বেশি। একই সময়ে বৈশ্বিক বিক্রি বেড়ে ৪.২ মিলিয়ন ইউনিট হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
  • ই ভিটারা (e VITARA): ২০২৫ সালের বসন্ত থেকে ভারতে সুজুকির প্রথম বৃহৎ পরিসরে উৎপাদিত ব্যাটারি-চালিত গাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে।
  • কৌশলগত দৃষ্টি: সরকারী প্রণোদনা ছাড়াও বৈদ্যুতিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়াতে কোম্পানি সীমিত মডেলের প্রতি গ্রাহক আস্থা গড়ার ওপর জোর দিচ্ছে, মডেলের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে এটি বেশি কার্যকর বলে মনে করছে সুজুকি।

৬. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে না ফেরা

  • অগ্রাধিকারের বিষয়: ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য বাজারে সুজুকির বিশাল কর্মকাণ্ডের কারণে বর্তমানে মার্কিন ও চীনা বাজারে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই।
  • সভাপতির মন্তব্য: প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুজুকি বলেন, “আমাদের হাতে ইতোমধ্যেই এত কাজ আছে যে এখন মার্কিন বা চীনা বাজারে প্রবেশ করার মতো সময় বা সুযোগ নেই।”

উপসংহার

সুজুকি মোটরের এই ব্যাপক বিনিয়োগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইঙ্গিত দেয় যে ভারত অদূর ভবিষ্যতে কেবল স্থানীয় চাহিদাই মেটাবে না, বরং বৈশ্বিক রপ্তানিরও একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়িসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কোম্পানির পরিকল্পনা ভারতীয় গাড়ি শিল্পের বৈশ্বিক গুরুত্বকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।