সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রফতানি ১৮.৭% বৃদ্ধি পেয়ে US$৪২৭.৬২ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যা ভারতের নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দেয়।
- বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি এবং ভারতের পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলোর বাংলাদেশ থেকে আমদানি বৃদ্ধির ফলে রফতানির পরিমাণ বেড়েছে।
- LDC থেকে উত্তরণের পর উচ্চ শুল্কের সম্ভাবনা রফতানিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে, তাই বাণিজ্য চুক্তি ও প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড রেজিম সম্প্রসারণের প্রস্তাবনা গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি, যা ভারতের নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গত বছরের পতনের পর উল্লেখযোগ্য দ্বি-সংখ্যার বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে। বৈশ্বিক বাজারের উন্নতি এবং বাড়তি চাহিদা রফতানিকে প্রণোদনা দিয়েছে।
রফতানি বৃদ্ধি ও পরিসংখ্যান
- মোট রফতানি:
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে পোশাক রফতানি হয়েছে US$৪২৭.৬২ মিলিয়ন, যা গত বছরের তুলনায় ১৮.৭% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। - বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান:
- বুননজাত পোশাক: প্রায় US$১৪৭.৮৫ মিলিয়ন
- বোনা পোশাক: US$২৭৯.১৬ মিলিয়ন
- তুলনামূলক বিশ্লেষণ:
পূর্ববর্তী জুলাই-জানুয়ারি পর্যায়ে রফতানি ছিল US$৩৬০.২৬ মিলিয়ন। গত অর্থবছরে ভারতের থেকে প্রাপ্ত মোট আয় ছিল US$৫৪৮.৮৩ মিলিয়ন, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের US$৬৮৩.৪৭ মিলিয়নের তুলনায় ১৯.৭% কম।

বাজারের অবস্থা ও চালিকা শক্তি
- বৈশ্বিক চাহিদা:
বিশ্বজুড়ে রেডিমেড গার্মেন্টসের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে শিপমেন্টে ব্যাপক উন্নতি ঘটছে। - ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন:
ভারতের বিভিন্ন পশ্চিমা ব্র্যান্ড নিজ নিজ দোকান খোলার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পোশাক আমদানি করছে। - বিশেষজ্ঞ মতামত:
- প্রাক্তন BGMEA সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, গত বছর ভারত স্বদেশী উৎপাদনে বেশি মনোযোগ ও মুদ্রার সমস্যার কারণে আমদানিতে হ্রাস দেখা গেছে।
- প্রাক্তন BGMEA ডিরেক্টর মহিউদ্দিন রুবেল জানিয়েছেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি এবং চাহিদার তীব্রতার ফলে বর্তমান অর্থবছরে রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
- স্থানীয় প্রভাব:
ভারতের উৎপাদন হাব হিসেবে বৈশ্বিক শিপমেন্টের বৃদ্ধি, স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোকে বাংলাদেশ থেকে আমদানির দিকে পরিচালিত করছে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাবনা
- শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব:
বাংলাদেশের LDC থেকে উত্তরণের পর উচ্চ শুল্ক আরোপের আশঙ্কা রফতানি প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। - প্রস্তাবিত পদক্ষেপ:
- দ্রুত পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন কৌশল গ্রহণ করে প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড রেজিমের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা।
- নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আলোচনা করে বর্তমান সুবিধা বজায় রাখা।
- শুল্কের হার:
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের বাজারে বাংলাদেশের RMG-এ ২০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত হতে পারে। - বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:
DBL গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান এম এ রহিম ফিরোজ ও প্রাক্তন BKMEA সভাপতি ফজলুল হক শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখতে সাবধানতার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপসংহার
বাংলাদেশের পোশাক রফতানি গত বছরের পতনের পর উল্লেখযোগ্যভাবে পুনরুদ্ধার হয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা এবং বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর আগ্রহ রফতানিকে সহায়তা করলেও, উত্তরণের পর সম্ভাব্য উচ্চ শুল্ক ও অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারের প্রয়োজনীয় নীতি ও পদক্ষেপই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Sarakhon Report 



















