সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- ভারত ১০০ মিলিয়নেরও বেশি এলপিজি সংযোগ স্থাপন করেছে, যা ব্যাপক কভারেজ নিশ্চিত করেছে
- জ্বালানির পরিবর্তে স্বাস্থ্যসম্মত ও সাশ্রয়ী এলপিজি ব্যবহারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ পরিবারের রান্নার অভ্যাসে পরিবর্তন এনেছে
- ২০২৪ সালের মধ্যে ৩৩০ মিলিয়ন পরিবার এলপিজি সংযোগের আওতায় এসেছে, যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ইতিবাচক
- এলপিজি ব্যবহারের ফলে প্রচলিত জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমেছে, স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে এবং পরিবেশের উন্নতি হয়েছে
১. পরিচিতি
ভারতের সরকার রান্নার জন্য প্রচলিত জ্বালানি – কয়লা, কাঠ ও পশু মলের বদলে স্বাস্থ্যসম্মত ও সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহার শুরু করেছে। এই পরিবর্তন দেশের লক্ষ লক্ষ পরিবারের রান্নার অভ্যাসে বিপ্লব ঘটাচ্ছে এবং বৈশ্বিক দক্ষিণের অন্যান্য দেশগুলোর জন্য এক অনুকরণীয় মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২. এলপিজি স্কিমের মূল উপাদান
- সংযোগের বিস্তার: ২০২৪ সালের মধ্যে ৩৩০ মিলিয়ন পরিবারের মধ্যে এলপিজি সংযোগ স্থাপিত হয়েছে, যা দশ বছর আগে থেকে ২.৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
- পরিবারিক সুবিধা: প্রতিটি গ্যাস সংযোগ প্রায় চার থেকে পাঁচজন পরিবারের জন্য উপকারী।
- প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা: ২০১৬ সালে চালু এই কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের নারীদের জন্য বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ ও প্রথম রিফিল প্রদান করা হয়েছে, যাতে তারা স্বাস্থ্যকর বিকল্প গ্রহণ করতে পারেন।
৩. উন্নয়নের অগ্রগতি ও সুবিধা
- সংযোগের সংখ্যা: এই উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ১০০ মিলিয়নেরও বেশি এলপিজি সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
- ব্যয়: সুবিধাভোগীরা দিনে মাত্র ৭ সেন্ট খরচ করে গ্যাস ব্যবহার করছেন, যেখানে অন্যান্য গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এটি ১৫ সেন্ট।
- বিস্তৃত কভারেজ: এপ্রিল ২০১৬ থেকে গত বছর আগস্ট পর্যন্ত দেশের এলপিজি কভারেজ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় সর্বব্যাপী হয়ে উঠেছে।
৪. আন্তর্জাতিক পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- বৈশ্বিক অনুকরণ: প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হারদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন যে, এই সাফল্যের মডেলটি বৈশ্বিক দক্ষিণের অন্যান্য দেশগুলিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।
- ইন্ডিয়া এনার্জি উইক: ১১ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে ব্রাজিল, তাঞ্জানিয়া, মালাউই, সুদান ও নেপালের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিল্প নেতারাও অংশ নিয়েছেন।
- ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা: আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২৬ এর মধ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সময়সীমা নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
৫. স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব
- স্বাস্থ্যঝুঁকি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এখনও প্রায় ২.১ বিলিয়ন মানুষ অপ্রযুক্ত রান্নার পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যার ফলে ২০২০ সালে আনুমানিক ৩.২ মিলিয়ন মৃত্যু হয়েছে।
- নারী ও শিশু: রান্না ও কাঠ সংগ্রহের কাজের জন্য মহিলারা ও শিশুদের অতিরিক্ত ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়।
- ইতিবাচক প্রভাব: এলপিজি ব্যবহারের ফলে প্রচলিত জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমে, স্বাস্থ্য ও পরিবেশে উন্নতি হয়েছে, বনভূমি সংরক্ষণে সহায়তা হয়েছে এবং মহিলাদের দৈনন্দিন কাজের বোঝা হালকা হয়েছে।
৬. উপসংহার
ভারতের পরিষ্কার রান্নার গ্যাস স্কিম দেশের রান্নার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে এবং এটি বৈশ্বিক দক্ষিণের অন্যান্য দেশের জন্য একটি সফল ও উদাহরণস্বরূপ মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার সুবিধা প্রদান করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।