০২:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ফলের দাম আকাশচুম্বী: আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব

  • Sarakhon Report
  • ০৪:১১:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 17

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • রমজানের আগে বাংলাদেশে আমদানিকৃত ফলের দাম ৪০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে
  • উচ্চ শুল্ক ও মুদ্রার মান হ্রাসের কারণে আমদানিকৃত ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে
  • সম্পূরক শুল্ক ৩০% থেকে ২০%, এআইটি ১০% থেকে ২% এবং নিয়ন্ত্রক শুল্ক যৌক্তিক হারে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে
  • বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে

বাংলাদেশে আমদানিকৃত ফলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রমজানের আগে ভোক্তাদের উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে। স্থানীয় ফলের সরবরাহ কম থাকায় আমদানিকৃত ফলের উপর নির্ভরতা বাড়লেও শুল্ক ও কর বৃদ্ধির কারণে বাজারে তীব্র প্রভাব পড়েছে।গত বছরের তুলনায় ফলের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ।

শুল্ক ও কর বৃদ্ধির কারণে মূল্যবৃদ্ধি

সরকার সাম্প্রতিককালে আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক ও কর বাড়ানোর ফলে বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ উচ্চ শুল্কের কারণে ফলের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

 

আমদানি শুল্ক কমানোর সুপারিশ

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

  • আপেল, কমলা, আঙ্গুর, নাশপাতি এবং আনারসের উপর শুল্ক হ্রাসের সুপারিশ করা হয়েছে।
  • ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

রাজধানীতে ফলের দাম বৃদ্ধি

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আমদানিকৃত ফলের দাম গত বছরের তুলনায় ৪০-৬০ শতাংশ বেড়েছে। কিছু ফলের বর্তমান দাম:

  • আপেল: প্রতি কেজি ২৮০-৪০০ টাকা
  • কমলা: প্রতি কেজি ২৮০-৩৫০ টাকা
  • আঙ্গুর: প্রতি কেজি ৪৫০-৮৫০ টাকা
  • বেদানা: প্রতি কেজি ৪৫০-৫৫০ টাকা

আমদানিকারক ও পাইকারদের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী:

  • গত এক মাসে ফলের দাম ২০-২৫ শতাংশ বেড়েছে।
  • উচ্চ শুল্ক ও মুদ্রার মান কমে যাওয়াই এর মূল কারণ।

শুল্ক বৃদ্ধির কারণ

সরকার ফল আমদানির উপর নিম্নলিখিত শুল্ক আরোপ করেছে:

  • সম্পূরক শুল্ক (এসডি): ২০% থেকে বাড়িয়ে ৩০%
  • অগ্রিম আয়কর (এআইটি): ১০%
  • নিয়ন্ত্রক শুল্ক (আরডি): ২০%

বিটিটিসি-র প্রস্তাব

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে বিটিটিসি নিম্নলিখিত প্রস্তাব দিয়েছে:

  • সম্পূরক শুল্ক: ৩০% থেকে কমিয়ে ২০% করা
  • এআইটি: ১০% থেকে ২% করা
  • নিয়ন্ত্রক শুল্ক: যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করা

আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস

শুল্ক বৃদ্ধির ফলে জানুয়ারি ২০২৫-এ তাজা ফলের আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে:

  • ম্যান্ডারিন: ৫১% হ্রাস
  • নাশপাতি: ৪৫% হ্রাস
  • বেদানা: ৩২% হ্রাস
  • আঙ্গুর: ২১% হ্রাস
  • আপেল: ৩.৫% হ্রাস

আমদানিকারকদের কর পরিশোধ

বর্তমানে প্রতি ৮৬ টাকার ফল আমদানিতে ১২০ টাকা কর দিতে হচ্ছে। এর ফলে আমদানিকারকরা বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়ছেন।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও আহ্বান

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কম‍র্কর্তা জানিয়েছেন:

  • আমদানি ৪০-৫০ শতাংশ কমেছে।
  • স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় দাম ৪০-৬০ শতাংশ বেড়েছে।
  • শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু ফল, যেমন: বোরই ও পেয়ারা, বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
  • নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ফলের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠনের পরামর্শ

চট্টগ্রাম বিভাগের কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ইকবাল বাহার সাবেরি বিভিন্ন মিডিয়াকে বলেছেন:

  • রমজানে ফলের চাহিদা আরও বাড়বে।
  • আমদানি কমে যাওয়ায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।
  • আমদানি থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা যায়।

উপসংহার

বর্তমান শুল্ক কাঠামো এবং মুদ্রার মান হ্রাসের কারণে আমদানিকৃত ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে রমজানের আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারকে শুল্ক কাঠামো যৌক্তিক করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফলের দাম আকাশচুম্বী: আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব

০৪:১১:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • রমজানের আগে বাংলাদেশে আমদানিকৃত ফলের দাম ৪০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে
  • উচ্চ শুল্ক ও মুদ্রার মান হ্রাসের কারণে আমদানিকৃত ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে
  • সম্পূরক শুল্ক ৩০% থেকে ২০%, এআইটি ১০% থেকে ২% এবং নিয়ন্ত্রক শুল্ক যৌক্তিক হারে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে
  • বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে

বাংলাদেশে আমদানিকৃত ফলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রমজানের আগে ভোক্তাদের উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে। স্থানীয় ফলের সরবরাহ কম থাকায় আমদানিকৃত ফলের উপর নির্ভরতা বাড়লেও শুল্ক ও কর বৃদ্ধির কারণে বাজারে তীব্র প্রভাব পড়েছে।গত বছরের তুলনায় ফলের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ।

শুল্ক ও কর বৃদ্ধির কারণে মূল্যবৃদ্ধি

সরকার সাম্প্রতিককালে আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক ও কর বাড়ানোর ফলে বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ উচ্চ শুল্কের কারণে ফলের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

 

আমদানি শুল্ক কমানোর সুপারিশ

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) আমদানিকৃত ফলের উপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

  • আপেল, কমলা, আঙ্গুর, নাশপাতি এবং আনারসের উপর শুল্ক হ্রাসের সুপারিশ করা হয়েছে।
  • ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

রাজধানীতে ফলের দাম বৃদ্ধি

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আমদানিকৃত ফলের দাম গত বছরের তুলনায় ৪০-৬০ শতাংশ বেড়েছে। কিছু ফলের বর্তমান দাম:

  • আপেল: প্রতি কেজি ২৮০-৪০০ টাকা
  • কমলা: প্রতি কেজি ২৮০-৩৫০ টাকা
  • আঙ্গুর: প্রতি কেজি ৪৫০-৮৫০ টাকা
  • বেদানা: প্রতি কেজি ৪৫০-৫৫০ টাকা

আমদানিকারক ও পাইকারদের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী:

  • গত এক মাসে ফলের দাম ২০-২৫ শতাংশ বেড়েছে।
  • উচ্চ শুল্ক ও মুদ্রার মান কমে যাওয়াই এর মূল কারণ।

শুল্ক বৃদ্ধির কারণ

সরকার ফল আমদানির উপর নিম্নলিখিত শুল্ক আরোপ করেছে:

  • সম্পূরক শুল্ক (এসডি): ২০% থেকে বাড়িয়ে ৩০%
  • অগ্রিম আয়কর (এআইটি): ১০%
  • নিয়ন্ত্রক শুল্ক (আরডি): ২০%

বিটিটিসি-র প্রস্তাব

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে বিটিটিসি নিম্নলিখিত প্রস্তাব দিয়েছে:

  • সম্পূরক শুল্ক: ৩০% থেকে কমিয়ে ২০% করা
  • এআইটি: ১০% থেকে ২% করা
  • নিয়ন্ত্রক শুল্ক: যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করা

আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস

শুল্ক বৃদ্ধির ফলে জানুয়ারি ২০২৫-এ তাজা ফলের আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে:

  • ম্যান্ডারিন: ৫১% হ্রাস
  • নাশপাতি: ৪৫% হ্রাস
  • বেদানা: ৩২% হ্রাস
  • আঙ্গুর: ২১% হ্রাস
  • আপেল: ৩.৫% হ্রাস

আমদানিকারকদের কর পরিশোধ

বর্তমানে প্রতি ৮৬ টাকার ফল আমদানিতে ১২০ টাকা কর দিতে হচ্ছে। এর ফলে আমদানিকারকরা বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়ছেন।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও আহ্বান

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কম‍র্কর্তা জানিয়েছেন:

  • আমদানি ৪০-৫০ শতাংশ কমেছে।
  • স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় দাম ৪০-৬০ শতাংশ বেড়েছে।
  • শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু ফল, যেমন: বোরই ও পেয়ারা, বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
  • নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ফলের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠনের পরামর্শ

চট্টগ্রাম বিভাগের কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ইকবাল বাহার সাবেরি বিভিন্ন মিডিয়াকে বলেছেন:

  • রমজানে ফলের চাহিদা আরও বাড়বে।
  • আমদানি কমে যাওয়ায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।
  • আমদানি থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা যায়।

উপসংহার

বর্তমান শুল্ক কাঠামো এবং মুদ্রার মান হ্রাসের কারণে আমদানিকৃত ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে রমজানের আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারকে শুল্ক কাঠামো যৌক্তিক করার আহ্বান জানানো হয়েছে।