সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. সুশাসনের অভাব, ঋণ অনিয়ম এবং রেগুলেটরি বডির নেতিবাচক বক্তব্য গ্রাহকদের আস্থা হ্রাসের মাধ্যমে আমানত কমে যাওয়ার মূল কারণ।
২. প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামী শাখায় আমানত বৃদ্ধি পেলেও, ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ ও রপ্তানি আয় সামান্য পরিমাণে বেড়েছে।
৩. সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আস্থার সংকট কাটিয়ে ওঠা জরুরি।
- জুলাই ২০২৪: বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ জুলাই মাসে ছিল ৩,৯৪,৪৪৪ কোটি টাকা। পরবর্তী মাস আগস্টে এটি কমে দাঁড়ায় ৩,৮৭,৮৯৩ কোটি টাকায়, অর্থাৎ মাত্র এক মাসে আমানত ৬,৫৫১ কোটি টাকা কমে গেছে।
- আগস্ট ২০২৪ (প্রবাসী আয়): একই সময়ে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৬,৩৩৩ কোটি টাকা, যা জুলাই মাসের তুলনায় ১,৫৫৯ কোটি টাকা কম।
আমানত হ্রাসের সম্ভাব্য কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুশাসনের অভাব এবং ঋণ অনিয়মসহ বর্তমানে ব্যাংকিং খাত নিয়ে রেগুলেটরি বডি থেকে নানান বক্তব্য আসাতে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা হ্রাস পেয়েছে, যা আমানত কমে যাওয়ার মূল কারণ।
প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামী শাখায় আমানত বৃদ্ধি
অপরদিকে, প্রচলিত ব্যাংকগুলোর অধীনে থাকা ইসলামী শাখা এবং উইন্ডোগুলোতে আমানত বাড়ছে। জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে এসব শাখায় যথাক্রমে ৩৫১ কোটি ও ৫৯৩ কোটি টাকা করে আমানত বেড়েছে।
ঋণ বিতরণ ও রপ্তানি আয়
- ঋণ বিতরণ: আগস্ট ২০২৪ মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৫,১৬,৯৯১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা জুলাই মাসের তুলনায় ২,১৫০ কোটি টাকা বেশি।
- রপ্তানি আয়: একই সময়ে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রপ্তানি আয় ৮,১৯৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা জুলাই মাসের তুলনায় ৬৬৭ কোটি টাকা বেশি।
ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের অভাব
ইসলামী ব্যাংকগুলোর বর্তমান সমস্যাগুলোর পেছনে অনিয়ম, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসনের অভাবকে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। বিভিন্ন পর্যায়ে অপেশাদার নিয়োগ ও অব্যবস্থাপনার ফলেও ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।
সার্বিক পরিস্থিতি ও করণীয়
ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত হ্রাস, ঋণ অনিয়ম এবং দুর্বল সুশাসনের কারণে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থার সংকট স্পষ্ট। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।