সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
-
সাধারণ মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে, যা বিশেষ করে বয়স্ক ও নারী ক্রেতাদের জন্য কষ্টকর।
-
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও শিক্ষার্থীরাও টিসিবি পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যদিও অনেকেই পরিচিতদের কাছ থেকে লজ্জা এড়াতে মুখ ঢেকে আসছেন।
-
ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো, নির্দিষ্ট জায়গায় পণ্য বিতরণের ব্যবস্থা করা এবং কর্মজীবীদের জন্য সময়সীমা সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে জনদুর্ভোগ কমানো যায়।
পণ্যের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা ও হতাশা
রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে, যা কিনতে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
৬০ বছর বয়সী রমিজ আলী মালিবাগ থেকে এসেছেন শাহবাগে। দুপুর গড়িয়ে গেলেও বেলা আড়াইটায় জোটেনি তার টিকিট । বার্ধক্য চেপে ধরা শরীর নিয়ে বসে থাকলেও তার ভাগ্যে কোনো পণ্য জোটেনি। তিনি জানান, তার পরিবারের সাত সদস্যের জন্য রমজানের বাজার করার বিকল্প উপায় নেই, তাই এতদূর হেঁটে তিনি এসেছেন।
ছাত্র-ছাত্রী ও মধ্যবিত্তদের সংগ্রাম
মালিটোলা থেকে আসা ডিগ্রি পড়া ছাত্রী আসমা খাতুন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১টায় পণ্য পেয়েছেন। তবে লজ্জায় সে হিজাব দিয়ে মুখ ঢেকে আছে। সঙ্গে তার বোনও । পুরান ঢাকার এই দুই বোন জানান, আগে কখনো টিসিবি’র পণ্য নিতে আসেননি, কিন্তু জিনিসপত্রের চড়া দামের কারণে এবার তারা লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। পরিচিতদের কাছ থেকে লজ্জা এড়াতে তারা বোরকা ও মাথা ঢেকে এসেছেন।
টিসিবি পণ্য সংগ্রহে ভোগান্তি ও সমাধানের প্রস্তাব
সেগুনবাগিচা থেকে আসা মধ্যবিত্ত সোহরাব হোসেন মনে করেন, টিসিবি’র ট্রাকের সংখ্যা বাড়ালে মানুষের কষ্ট কমবে। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ট্রাক থামিয়ে পণ্য বিক্রির কারণে যানজট ও জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। যদি কোনো নির্দিষ্ট মাঠ বা জায়গায় পণ্য বিতরণ করা হতো, তাহলে এ সমস্যা হতো না।
একজন ব্যাংকার শহীদুল আলম জানান, শুধুমাত্র ছুটির দিনেই তিনি টিসিবি’র পণ্য কিনতে পারেন, কারণ অন্যদিন অফিস থাকার কারণে তা সম্ভব হয় না। তার মতে, টিসিবি’র মাধ্যমে কিছুটা সাশ্রয় করা সম্ভব, যা তার মতো মধ্যবিত্তদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পণ্য বিতরণ প্রক্রিয়া ও মূল্য
বিভিন্ন জায়গায় টিসিবির ট্রাকের দায়িত্বে থাকা বিক্রেতারা জানান, আগের দিন দুইশ’ কার্ড বিতরণ করা হয়, যার ভিত্তিতে ক্রেতারা পণ্য পান।
টিসিবি’র রমজানের পণ্যের মূল্য তালিকা:
- চিনি: ৭০ টাকা প্রতি কেজি
- মসুর ডাল: ৬০ টাকা প্রতি কেজি
- সয়াবিন তেল: ১০০ টাকা প্রতি লিটার
- ছোলা (৫০০ গ্রাম): ৬০ টাকা
- খেজুর: ১৫৫ টাকা প্রতি কেজি