১০:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রান্নায় দৈনন্দিন বিঘ্ন  সৃষ্টি করছে অনিয়মিত গ্যাস সরবরাহ

  • Sarakhon Report
  • ০৪:২০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • 20

সারাক্ষণ রিপোর্ট

প্রেক্ষাপট

রমজানের প্রথম থেকেই ঢাকার বহু পরিবার গৃহস্থালির রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের অভাবে সমস্যায় পড়েছে। বাসিন্দারা জানান যে কম গ্যাসের চাপের কারণে খাবার সঠিকভাবে রান্না করা কঠিন হয়ে পড়ছে এবং রান্নার সময়সূচিতে বিলম্ব ঘটছে।

সঙ্কটের কারণসমূহ

  • তাপমাত্রার প্রভাব:
    মার্চের শুরুতে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গৃহস্থালির গ্যাসের পরিবর্তে অন্য কাজে ব্যবহার করার প্রবণতা দেখাচ্ছে। ফলে বিকেলের সময় হঠাৎ করে গ্যাসের চাপ কমে যাচ্ছে।
  • চাহিদা বৃদ্ধি:
    রমজানের আগমনের সঙ্গে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসে সেচকাল শুরু হওয়ায় গ্যাসের সামগ্রিক ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • সরবরাহ ও চাহিদার ফারাক:
    সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট সরবরাহ ছিল প্রায় ২,৮৫৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট, যেখানে চাহিদা ৪,০০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটেরও বেশি। গরম আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো প্রতিদিন অতিরিক্ত ৮৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাস গ্রহণ করছে, যা চাপ সৃষ্টি করছে।

পরিবারের ওপর প্রভাব

  • সরবরাহে দেরি:
    অনেক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন যে গ্যাস পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, খিলগাঁও-এর এক বাসিন্দা জানান যে গ্যাস সন্ধ্যা ৬টায় পৌঁছায়, যার ফলে ইফতারের সময় রান্না করা কঠিন হয়ে পড়ে।
  • দৈনন্দিন অসুবিধা:
    কালসির একজন বাসিন্দার তথ্য অনুযায়ী, রমজানের প্রথম দিনে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস পৌঁছায়নি, ফলে ইফতারের জন্য পূর্বে রান্না করা খাবারের প্রয়োজন পড়েছে।
  • বিভিন্ন অঞ্চলে সমস্যা:
    এই সমস্যা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়; পুরানা ঢাকা, রামপুরা, উলন, হাজরি ব্যাগ, খিলগাঁওয়ের কিছু অংশ, মিরপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মানিকনগর এবং বাসাবোসহ অনেক অঞ্চলে বিকেলের সময় গ্যাসের অভাব দেখা যাচ্ছে।

প্রশাসনিক মন্তব্য

তিতাসের সিনিয়র অপারেশনস ইঞ্জিনিয়ার কাজী মোহাম্মদ সাঈদুল হাসান ব্যাখ্যা করেছেন:

  • চাহিদা ও সরবরাহের ফারাক:
    এই মাসের আনুমানিক প্রয়োজন ছিল ১,৯৬০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট, কিন্তু সাম্প্রতিক সরবরাহ প্রায় ১,৫৫৯–১,৫৭০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটেই সীমাবদ্ধ, যা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটের ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।
  • বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রাধিকার:
    এলএনজির সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কিছুটা সহায়তা হয়েছে, তবে সেহরী, ইফতার ও তারাওহীর সময় বাড়তি চাহিদার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে।

উপসংহার

রমজানের প্রথমদিকে গ্যাসের অভাবে ঢাকার অনেক পরিবারের রান্নার রুটিনে ব্যাঘাত ঘটেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া ও ঋতুজনিত বাড়তি চাহিদার কারণে সময়মতো গ্যাস না পাওয়ায় পরিবারগুলো গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৮)

রান্নায় দৈনন্দিন বিঘ্ন  সৃষ্টি করছে অনিয়মিত গ্যাস সরবরাহ

০৪:২০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

প্রেক্ষাপট

রমজানের প্রথম থেকেই ঢাকার বহু পরিবার গৃহস্থালির রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের অভাবে সমস্যায় পড়েছে। বাসিন্দারা জানান যে কম গ্যাসের চাপের কারণে খাবার সঠিকভাবে রান্না করা কঠিন হয়ে পড়ছে এবং রান্নার সময়সূচিতে বিলম্ব ঘটছে।

সঙ্কটের কারণসমূহ

  • তাপমাত্রার প্রভাব:
    মার্চের শুরুতে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গৃহস্থালির গ্যাসের পরিবর্তে অন্য কাজে ব্যবহার করার প্রবণতা দেখাচ্ছে। ফলে বিকেলের সময় হঠাৎ করে গ্যাসের চাপ কমে যাচ্ছে।
  • চাহিদা বৃদ্ধি:
    রমজানের আগমনের সঙ্গে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসে সেচকাল শুরু হওয়ায় গ্যাসের সামগ্রিক ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • সরবরাহ ও চাহিদার ফারাক:
    সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট সরবরাহ ছিল প্রায় ২,৮৫৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট, যেখানে চাহিদা ৪,০০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটেরও বেশি। গরম আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো প্রতিদিন অতিরিক্ত ৮৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাস গ্রহণ করছে, যা চাপ সৃষ্টি করছে।

পরিবারের ওপর প্রভাব

  • সরবরাহে দেরি:
    অনেক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন যে গ্যাস পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, খিলগাঁও-এর এক বাসিন্দা জানান যে গ্যাস সন্ধ্যা ৬টায় পৌঁছায়, যার ফলে ইফতারের সময় রান্না করা কঠিন হয়ে পড়ে।
  • দৈনন্দিন অসুবিধা:
    কালসির একজন বাসিন্দার তথ্য অনুযায়ী, রমজানের প্রথম দিনে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস পৌঁছায়নি, ফলে ইফতারের জন্য পূর্বে রান্না করা খাবারের প্রয়োজন পড়েছে।
  • বিভিন্ন অঞ্চলে সমস্যা:
    এই সমস্যা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়; পুরানা ঢাকা, রামপুরা, উলন, হাজরি ব্যাগ, খিলগাঁওয়ের কিছু অংশ, মিরপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মানিকনগর এবং বাসাবোসহ অনেক অঞ্চলে বিকেলের সময় গ্যাসের অভাব দেখা যাচ্ছে।

প্রশাসনিক মন্তব্য

তিতাসের সিনিয়র অপারেশনস ইঞ্জিনিয়ার কাজী মোহাম্মদ সাঈদুল হাসান ব্যাখ্যা করেছেন:

  • চাহিদা ও সরবরাহের ফারাক:
    এই মাসের আনুমানিক প্রয়োজন ছিল ১,৯৬০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট, কিন্তু সাম্প্রতিক সরবরাহ প্রায় ১,৫৫৯–১,৫৭০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটেই সীমাবদ্ধ, যা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটের ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।
  • বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রাধিকার:
    এলএনজির সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কিছুটা সহায়তা হয়েছে, তবে সেহরী, ইফতার ও তারাওহীর সময় বাড়তি চাহিদার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে।

উপসংহার

রমজানের প্রথমদিকে গ্যাসের অভাবে ঢাকার অনেক পরিবারের রান্নার রুটিনে ব্যাঘাত ঘটেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া ও ঋতুজনিত বাড়তি চাহিদার কারণে সময়মতো গ্যাস না পাওয়ায় পরিবারগুলো গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।