নারীই সন্তানের মতো জম্ম দিয়েছিলো মানব সভ্যতাকে। সে ছিলো পৃথিবীতে সূর্য ওঠার মতো এক সূচনা। আবার এই নারীই বনচারী মানুষকে নিয়ে আসে সংসারের গন্ডিতে। যেখানে ধীরে ধীরে জম্ম নেয় “ভালোবাসা” । যে ভালোবাসার জল গভীর হতে হতে মহাসমুদ্রের মতো অতল জলরাশি হয়ে, মানুষের মনোজগত থেকে শুরু করে সভ্যতার প্রতিটি সোপানকে করেছে সৌন্দর্যমন্ডিত।
এই নারীকে কে প্রথম শৃঙ্খলাবদ্ধ করলো- আর কীভাবে করলো – কীভাবে সংঘঠিত হলো পৃথিবীর চিরস্থায়ী এ অপরাধ – তা আজো মানুষ জানে না। মানুষ কেবল জানে, নারী শৃঙ্খলাবদ্ধ। সভ্যতার একটি অংশ হাজার হাজার বছর পরে এসে এখন তাই মুক্ত করতে চায় নারীকে।
নারীকে যখন সভ্যতার একটি অংশ মুক্ত করতে চায় এ সময়ে নারীদের বেশিভাগ যেমন মানসিকভাবে বন্দী হয়ে গেছে, তেমনি নারীকে বন্দী রাখার মানসিকতার পুরুষই পৃথিবীতে তার গদা ঘুরাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ট হয়ে।
এমন পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে প্রতি বছর পালিত হয় নারী দিবস। তাই শেষ সত্য’র মতো স্পষ্ট হয়- এই দিবস পালন আটকে থাকে দিবসের আনুষ্ঠানিকতায়।
চিহ্নিত হয়না কোন কোন স্বার্থ, কার স্বার্থে বন্দী হয়েছে নারী? চিহ্নিত হয় না কীভাবে ভাঙ্গা হবে নারী ও পুরুষের উভয়েরই এই মানসিক বন্দীত্ব! আর তেমন কোন আলোর রেখাও নেই- যে খুব কাছের একটি সময়ে চিহ্নিত হবে এই অন্ধকার দিকটি। ভেঙ্গে যাবে পৃথিবীর ভয়াবহ প্রাচীন দেয়ালটি – আলো প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে রুক্ষ্ম চোখে।
বরং দিকে দিকে নারীর জন্যে আরো বেশি অন্ধকার পথ এসে সামনে দাঁড়াচ্ছে- পৃথিবীর নানান ভূখন্ডে, নানান নরগোষ্টিতে। এ মুহূর্তে আমারও তেমনি একটি ভূখন্ড, তেমনিই একটি নরগোষ্টি।