ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
ইনরা সমাজ-সভ্যতার জীবনযাত্রা কার্যত ষোড়শ শতকের শুরু থেকে স্নান হতে শুরু করে। পেরু, কুজকো শহরে ইনকাদের যে সমাজ সংস্কৃতি ছিল সেখানে স্প্যানিশ রাজ ও সংস্কৃতির প্রভাব শুরু হয়ে যায়। ইনকা সমাজ যে জনজাতি ও আদিবাসী গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত হয়েছিল তারা ক্রমশ বিলুপ্ত হতে শুরু করে। প্রথমে শারীরিকভাবে এবং পরে সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে শুরু করে।
তবে প্রত্নতাত্ত্বিক এবং সমাজ-নৃতাত্বিকগণ মনে করেন পেরু, কুজকো এবং কিতো শহরে যে সব আদিবাসীগোষ্ঠী এখন বাস করে তাদের বহু আগের পূর্বপুরুষগণ ছিলেন ইনকা গোত্রের। ইনকাদের মধ্যে প্রচলিত কেচুয়া, আইমারা ভাষার কিছু শব্দ, অর্থ বর্তমান ভাষা ও কথ্য শব্দের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। আর অন্য দিক থেকে জীবিকা, কৃষিনির্ভর অর্থনীতি এবং দেওয়ালচিত্র, প্রস্তরলিপি ইনকাদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
বিশেষ করে ইনকাদের সমবায় সুলভ সমাজজীবনের প্রভাব সাম্প্রতিক জীবনযাত্রার মধ্যে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। স্থাপত্যর চিহ্ন প্রসঙ্গে বলতে হয় গুরুত্বপূর্ণ শহরের সাপ ইিনকাদের বেশ কিছু প্রাসাদের ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। এই স্মৃতিচিহ্নর মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হল রাণীর অন্দরমহল এবং আদিবাসীদের জেলখানা এবং পর্যটকদের জন্য কিছু অঞ্চল।
এইসব স্মৃতিচিহ্নকে ঘিরে অতীত ইনকারা নিজেদের মনের ভাষা, প্রয়োগের সংস্কৃতিকে উপভোগ করতে পারত। ইনকা সমাজসভ্যতার স্মৃতি এখন অতীতের ব্যাপার হলেও একথা ঠিক যে দ্বাদশ থেকে পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের এই স্বকীয় সভ্যতা আজও সাধারণ মানুকে কাছে টানে।
(চলবে)
ইনকা সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৭৭)