প্রদীপ কুমার মজুমদার
উন্নত ধরণের যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য নানা সুযোগ সুবিধা গণনার ক্ষেত্রে এবং লেখবার ক্ষেত্রে দেখা দেওয়ার ফলে এই পদ্ধতি ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হয়ে যায়।ইংরাজীতে যাকে “এরিথমেটিক” বলে ‘ভারতীয় গণিতবিদগণ তাকে পাটীগণিত বলেছেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ শ্রীধরাচার্য তাঁর গ্রন্থটির নাম রেখেছেন “পাটীগণিতসার।”
অবশ্য এটি ত্রিশতিকা নামেও ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে উল্লেখিত আছে। ব্রহ্মগুপ্ত, দ্বিতীয় আর্যভট প্রমুখেরা তাঁদের গ্রন্থে গণিতাধ্যায় নামে একটি পরিচ্ছেদ রেখেছেন। নারায়ণ তার গ্রন্থটিকে “পাটীগণিত কৌমুদি” বলেছেন। মুনীশ্বর তাঁর গণিত গ্রন্থটিকে “পাটীসার” নাম দিয়েছেন।
“ফলক” বা “পাটা” শব্দটি নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের মধ্যে নানা মত দেখতে পাওয়া যায়। বালকৃষ্ণ দীক্ষিত মনে করেন ভারতীয় জ্যোতিবিদগণ-জ্যোতির্বিজ্ঞানে কাঠের ফলক ব্যবহার করতেন বলেই হয়তো “ফলক” শব্দটি ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে এসেছে। বেইলী, ফ্লীট প্রমুখ পাশ্চাত্য পণ্ডিতবর্গ মনে করেন ফলককে এ্যাবাকাস রূপে ভারতীয়রা ব্যবহার করতো বলেই পাটা শব্দটি ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে অনুপ্রবেশ করেছে।
ডঃ বি. বি. দত্ত বলেছেন পাটীগণিত শব্দটি সপ্তম শতাব্দীতে ভারতীয় গণিতে দেখা যায় এবং তার বহু পূর্বে ভারতীয় এ্যাবাকাস লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। যদি ফলক এ্যাবাকাস বলে কোন কিছুর ব্যবহার থাকতো তা হলে তা পাটা না বলে ফলক গণিত বা পাট্ট গণিত নামে প্রচলিত হোত।
ডঃ দত্ত তাছাড়াও মনে করেন ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে এ্যাবাকাসের প্রচলন ছিল না। যাই হোক এটি একটি | ঐতিহাসিক বিতর্কিত বিষয়, আমরা এ ব্যাপারে খুব গভীরে আলোচনা করতে চাইনা।
(চলবে)
Leave a Reply