সারাক্ষণ রিপোর্ট
টোকিওতে জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা একত্রিত হন। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ইস্যুগুলিতে সম্মিলিত মতামত গঠন করা।
. বৈঠকের মূল বক্তব্য
- গুরুত্বপূর্ণ মোড়:
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়ায়া বললেন, “বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির তীব্রতার সাথে, আমরা সত্যিই ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি।”
চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও একই অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
আলোচিত বিষয়সমূহ
- ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ত্বরান্বয়:
টোকিও, বেইজিং ও সিউল যৌথভাবে জন্মহার হ্রাস ও বৃদ্ধিশীল জনসংখ্যার সমস্যা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি দ্রুততর করার সিদ্ধান্ত নেন। - ঐতিহাসিক বৈঠক:
২০২৩ সাল থেকে প্রথমবার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একত্রিত হওয়ার ফলে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরনো জোটভঙ্গির প্রেক্ষিতে নতুন সুযোগ উন্মোচিত হয়েছে। - চীনের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি:
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, “আমাদের তিন দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১.৬ বিলিয়ন এবং অর্থনৈতিক আউটপুট ২৪ ট্রিলিয়নেরও বেশি। এই বিশাল বাজারের মাধ্যমে আমরা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করতে পারি।”
তিনি আরও জানান যে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং ১৫-দেশের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণে আগ্রহী।
আঞ্চলিক বিভেদ ও মতবিরোধ
- মতভেদ:
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। চীন, টোকিও ও সিউলের সাথে উত্তরের কোরিয়া, তাইওয়ানের আশেপাশে সামরিক কার্যক্রমের তীব্রতা এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে থাকার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
- দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া:
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো বলেন, তিনি চীনের কাছে অনুরোধ করেছেন যে উত্তরের কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগে প্ররোচিত করতে সাহায্য করা হোক। এছাড়াও, তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে রাশিয়া ও উত্তরের কোরিয়ার অবৈধ সামরিক সহযোগিতা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত এবং উত্তরের কোরিয়ার অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো পুরস্কার দেওয়া যাবে না।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
- ভিন্ন বৈঠকের আয়োজন:
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়ায়া আগামী দিনে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে পৃথক বৈঠক করবেন। - উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক আলোচনা:
এই বৈঠকে ছয় বছরে প্রথমবার উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনায় ২০২৩ সালে ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বর্জ্য জল নির্গমনের পর চীনের দ্বারা আরোপিত জাপানি সামুদ্রিক খাদ্যপণ্যের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় করা হবে।