সারাক্ষণ রিপোর্ট
অ্যালবানিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি প্রকাশ করে কিভাবে অ্যান্ড্রু কুয়োমো তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখেন – নিউ ইয়র্ক সিটির সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি তাঁর সম্পর্ক শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়, বরং এলন মাস্কের সাথেও নিবিড় ছিল।
প্রকল্পের পটভূমি
- গভর্নর হিসেবে কুয়োমো প্রায় ৯৫৯ মিলিয়ন ডলার রাজ্য সাবসিডি মঞ্জুর করেন, যা মাস্ক পরিবার নিয়ন্ত্রিত একটি সৌর প্যানেল কোম্পানিকে সহায়তা করে।
- পরবর্তীতে, ওই কোম্পানিটি টেসলা কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়।
- এই বিশাল অর্থায়ন প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আসেনি, বরং এটি নিউ ইয়র্ক গভর্নরের কার্যালয়ের দুর্নীতির একটি বৃহৎ স্ক্যান্ডালের সাথে যুক্ত হয়।
বিতর্ক ও সমালোচনা
- রাজ্য সেনেটর জিলনর মাইরি
অভিযোগ করেছেন, “বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু যথেষ্ট চাকরি তৈরি হয়নি – সব সুবিধা এলন মাস্কের কাছে চলে গেছে।”
- এসেম্বলি সদস্য প্যাট বার্ক:
পুরো ঘটানাটি সংক্ষেপে “একটি বোকামি” হিসেবে উল্লেখ করেন।
- কুয়োমোর মুখপাত্র রিচ আজজোপার্দি:
দাবি করেন, প্রকল্পটি একটি দূষিত ব্রাউনফিল্ডকে হাজার হাজার চাকরির কারখানায় পরিণত করেছে।

পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি
- ২০১২ সালে শুরু হওয়া ‘বাফেলো বিলিয়ন‘ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল আপস্টেট নিউ ইয়র্কের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করা।
- সৌর প্যানেল উৎপাদনের জন্য ২২৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে মাস্কের সংযুক্ত সোলার সিটি-র মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
- এলন মাস্কের কোম্পানি আরও বৃহৎ কারখানার পরিকল্পনা করে, যার মাধ্যমে আনুমানিক ৫,০০০ চাকরি সৃষ্টি ও ৫ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আশ্বাস দেওয়া হয়।
প্রকল্পের ফলাফল ও পর্যালোচনা
- প্রাথমিক চুক্তিতে উল্লেখিত ১,৪৬০ উচ্চপ্রযুক্তির চাকরি এর বদলে শুধুমাত্র “চাকরি” শব্দ ব্যবহার করা হয়, ফলে অধিকাংশ চাকরি নিম্নস্তরের এন্ট্রি-লেভেলের হয়ে দাঁড়ায়।
- ২০২০ সালের একটি অডিট রিপোর্টে প্রকাশিত হয়, প্রত্যেক ১ ডলার ব্যয়ের বদলে মাত্র ৫৪ সেন্ট অর্থনৈতিক লাভ হয়েছে, যা প্রত্যাশিত $৩০ লাভের তুলনায় অনেক কম।
- প্রকল্পের শর্তাবলীর পরিবর্তনের কারণে রাজ্য কর্তৃপক্ষ প্রকৃত ঝুঁকি সঠিকভাবে নিরূপণ করতে ব্যর্থ হয়।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
- নিউ ইয়র্ক সিটির বাজেট ও ফেডারেল কাটছাঁট নিয়ে আলোচনার মাঝে, কুয়োমোর এলন মাস্কের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাজনৈতিক আক্রমণের প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে আসতে পারে।
- প্রতিপক্ষরা এই বিষয়টি তুলে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
- কিছু সমালোচক মনে করেন, মাস্কের বর্তমান ব্যবসায়িক মডেল ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় থাকায়, কুয়োমোর প্রকল্প আরও জটিল সমস্যায় আবদ্ধ হতে পারে।
উপসংহার
এই ঘটনা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির পেছনে বাস্তবতা অনেকসময় আলাদা হয়ে দাঁড়ায়। কুয়োমোর প্রকল্প প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন না এনে বরং দুর্নীতি ও অনুপযুক্ত অর্থ ব্যবহারের অভিযোগের মুখোমুখি হয়, যা ভবিষ্যতে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a Reply