সারাক্ষণ রিপোর্ট
২৬ মার্চ (বুধবার), মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক বিতর্কিত বক্তব্যে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।
তিনি ২০২৪ সালের “জুলাই আন্দোলন”কে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেন, যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
অনুষ্ঠানের বিবরণ
- সকাল ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়।
- জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ।
- কুচকাওয়াজ ও সমাবেশ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
- এরপর অতিথিরা বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
সিভিল সার্জনের মন্তব্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিক্রিয়া
সিভিল সার্জন তার বক্তব্যে বলেন:
‘১৯৭১ সালের স্বাধীনতা এখনও পূর্ণ হয়নি। একই কারণে ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলন হয়েছে। যেভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে, জুলাই আন্দোলনকারীদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন:
‘যে দুটি কারণে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ হয়েছিল, একই কারণে ২০২৪ সালেও যুদ্ধ হয়েছে।’
এই বক্তব্যের পর সামনের সারিতে বসা মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন এক নয়।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বক্তব্য
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম আবেগঘন কণ্ঠে বলেন:
- তিনি ২১ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
- মা বলেছিলেন, “তুমি যদি শহীদ হও, আমার কষ্ট থাকবে না।”
- ভারত থেকে গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে ১১ নম্বর সেক্টরে ৯ মাস যুদ্ধ করেছেন।
- দিনের বেলা বের হওয়া যেত না, রাতে চলত ট্রেনিং।
- প্রচণ্ড কষ্ট করে তারা স্বাধীনতা এনেছেন এবং কোনো প্রতিদান চাননি।
- রাষ্ট্র থেকে ‘শ্রেষ্ঠ সন্তান’ উপাধি ও সম্মান পেয়েছেন, সেটিই যথেষ্ট।
- কিন্তু “জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করলে তা তাদের সম্মানে আঘাত হানে।”
ক্ষমা চাইলেন সিভিল সার্জন
বিতর্কের এক পর্যায়ে ডা. জিল্লুর রহমান বলেন,
‘আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত।’
পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা
জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ সবার প্রতি শান্ত থাকার আহ্বান জানান।শেষে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে সবাইকে নীরব থাকতে বলেন।এরপর অনুষ্ঠান স্বাভাবিক হয়।