০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
নভেম্বরে স্বস্তির ঠাণ্ডা, দেশের আবহাওয়ায় বদলের ছোঁয়া এবার প্রতি সপ্তাহেই শোনার হিসাব দেবে স্পটিফাই, নতুন ‘মিনি র‌্যাপড’ ফিচার চালু প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২৫) তিন বছরের বিরতি শেষে মামামুর গ্রুপ প্রত্যাবর্তন, আসছে বিশ্ব ট্যুর বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ঢেউ, হাসপাতালে চাপ বাড়ছে স্ট্রেঞ্জার থিংস থেকে সেভেন্টিন: নভেম্বরে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে কী আসছে বাংলা সাহিত্য অবলম্বিত চলচ্চিত্র, সাইবারক্রাইম থ্রিলার ও আন্তর্জাতিক কনটেন্টে জমজমাট সপ্তাহ ক্যাটসআই: আধুনিক গার্ল গ্রুপের নতুন নকশা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১০টার পর সব অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নিচ্ছে:রাজধানীর জনবহুল এলাকায় ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণ— আগুনে মোটরসাইকেল পুড়ে গেল

১.৪ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা অনিশ্চিত?

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
  • 92

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশ সরকার আশা করেছিল জুন মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাংক (WB) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB) থেকে ১.৪ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাবে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) ঋণের একটি কিস্তি স্থগিত হওয়ায় এই সহায়তা পাওয়া এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

ফেব্রুয়ারিতে ঋণের কিস্তি ছাড় করার কথা থাকলেও, রাজস্ব আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলার বিনিময় হারের নির্ধারিত শর্ত না পূরণ করায় আইএমএফ তা আটকে রেখেছে।

আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলারও ঝুঁকিতে

এই পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি ছাড়াও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB), ওপেক ফান্ড এবং জাইকা (JICA)-র ৮০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তাও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

আইএমএফের সংকেতে অন্য সংস্থার সিদ্ধান্ত

বিশ্বব্যাংক ও এডিবি সাধারণত আইএমএফের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করেই ঋণ দেয়। আইএমএফ যদি কোনো দেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, তাহলে অন্যান্য সংস্থাও পিছিয়ে যায়।
২০২২-২৩ সালে পাকিস্তান ও ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের একজন সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেছেন:
“আইএমএফের প্রোগ্রাম ছাড়া বিশ্বব্যাংক বা এডিবি বাজেট সহায়তা দেবে না। আইএমএফই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার গ্যারান্টি দেয়।”

তিনি আরও বলেন, এমনকি জাপান বা উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতারাও আইএমএফ না থাকলে পিছিয়ে যেতে পারে।

আইএমএফ প্রতিনিধি দল আসবে এপ্রিলেই

আগামী এপ্রিল মাসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে। তারা জুনের কিস্তি অনুমোদন করলেও, বাজেট সহায়তা ছাড়ে সময় লাগবে, ফলে এই অর্থবছরের মধ্যেই তা পাওয়া কঠিন হতে পারে।

অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন:
– একক ভ্যাট হার ও বাজারনির্ভর বিনিময় হার বাস্তবায়ন আইএমএফের বড় শর্ত।
– এসব বাস্তবায়ন কঠিন, বিশেষ করে বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দিলে তা শ্রীলঙ্কার মতো সংকট তৈরি করতে পারে।

বাজেট সহায়তা না পেলে অর্থনীতিতে চাপ

যদি বাজেট সহায়তা না মেলে, তাহলে সরকারকে দেশীয় উৎস থেকে ঋণ নিতে হবে—
এর ফলে:

  • বেসরকারি খাতে ঋণ সংকট দেখা দিতে পারে
  • সুদের হার বাড়তে পারে
  • বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান ব্যাহত হতে পারে

অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ বলেন, সরকারি ব্যয় কমলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ব্যবসার জন্য ঋণ পাওয়া আরও কঠিন হবে।

চলমান বাজেট সহায়তা আলোচনা

বর্তমানে বাংলাদেশ নিচের বাজেট সহায়তা পেতে আলোচনা চালাচ্ছে:

  • বিশ্বব্যাংক: ১ বিলিয়ন ডলার (Resilience ও Governance প্রোগ্রাম)
  • এডিবি: ৯০০ মিলিয়ন ডলার (ব্যাংকিং ও জলবায়ু কর্মসূচি)
  • জাপান: ৪১৮ মিলিয়ন ডলার (অর্থনীতি ও জলবায়ু নীতিনির্ভর ঋণ)
  • AIIB: ৩০০ মিলিয়ন ডলার (জলবায়ু কর্মসূচি)

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ১০.২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি মিলেছে, যার মধ্যে বাজেট সহায়তা ২.০৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু পরবর্তী কিস্তিগুলোর জন্য আইএমএফের অনুমোদন জরুরি।

উপসংহার

আইএমএফের অনুমোদন না পেলে সরকারকে কঠিন আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। এর প্রভাব পড়বে বাজেট বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ, ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নভেম্বরে স্বস্তির ঠাণ্ডা, দেশের আবহাওয়ায় বদলের ছোঁয়া

১.৪ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা অনিশ্চিত?

০৫:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশ সরকার আশা করেছিল জুন মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাংক (WB) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB) থেকে ১.৪ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাবে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) ঋণের একটি কিস্তি স্থগিত হওয়ায় এই সহায়তা পাওয়া এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

ফেব্রুয়ারিতে ঋণের কিস্তি ছাড় করার কথা থাকলেও, রাজস্ব আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলার বিনিময় হারের নির্ধারিত শর্ত না পূরণ করায় আইএমএফ তা আটকে রেখেছে।

আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলারও ঝুঁকিতে

এই পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি ছাড়াও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB), ওপেক ফান্ড এবং জাইকা (JICA)-র ৮০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তাও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

আইএমএফের সংকেতে অন্য সংস্থার সিদ্ধান্ত

বিশ্বব্যাংক ও এডিবি সাধারণত আইএমএফের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করেই ঋণ দেয়। আইএমএফ যদি কোনো দেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, তাহলে অন্যান্য সংস্থাও পিছিয়ে যায়।
২০২২-২৩ সালে পাকিস্তান ও ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের একজন সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেছেন:
“আইএমএফের প্রোগ্রাম ছাড়া বিশ্বব্যাংক বা এডিবি বাজেট সহায়তা দেবে না। আইএমএফই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার গ্যারান্টি দেয়।”

তিনি আরও বলেন, এমনকি জাপান বা উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতারাও আইএমএফ না থাকলে পিছিয়ে যেতে পারে।

আইএমএফ প্রতিনিধি দল আসবে এপ্রিলেই

আগামী এপ্রিল মাসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে। তারা জুনের কিস্তি অনুমোদন করলেও, বাজেট সহায়তা ছাড়ে সময় লাগবে, ফলে এই অর্থবছরের মধ্যেই তা পাওয়া কঠিন হতে পারে।

অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন:
– একক ভ্যাট হার ও বাজারনির্ভর বিনিময় হার বাস্তবায়ন আইএমএফের বড় শর্ত।
– এসব বাস্তবায়ন কঠিন, বিশেষ করে বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দিলে তা শ্রীলঙ্কার মতো সংকট তৈরি করতে পারে।

বাজেট সহায়তা না পেলে অর্থনীতিতে চাপ

যদি বাজেট সহায়তা না মেলে, তাহলে সরকারকে দেশীয় উৎস থেকে ঋণ নিতে হবে—
এর ফলে:

  • বেসরকারি খাতে ঋণ সংকট দেখা দিতে পারে
  • সুদের হার বাড়তে পারে
  • বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান ব্যাহত হতে পারে

অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ বলেন, সরকারি ব্যয় কমলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ব্যবসার জন্য ঋণ পাওয়া আরও কঠিন হবে।

চলমান বাজেট সহায়তা আলোচনা

বর্তমানে বাংলাদেশ নিচের বাজেট সহায়তা পেতে আলোচনা চালাচ্ছে:

  • বিশ্বব্যাংক: ১ বিলিয়ন ডলার (Resilience ও Governance প্রোগ্রাম)
  • এডিবি: ৯০০ মিলিয়ন ডলার (ব্যাংকিং ও জলবায়ু কর্মসূচি)
  • জাপান: ৪১৮ মিলিয়ন ডলার (অর্থনীতি ও জলবায়ু নীতিনির্ভর ঋণ)
  • AIIB: ৩০০ মিলিয়ন ডলার (জলবায়ু কর্মসূচি)

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ১০.২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি মিলেছে, যার মধ্যে বাজেট সহায়তা ২.০৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু পরবর্তী কিস্তিগুলোর জন্য আইএমএফের অনুমোদন জরুরি।

উপসংহার

আইএমএফের অনুমোদন না পেলে সরকারকে কঠিন আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। এর প্রভাব পড়বে বাজেট বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ, ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে।