সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- রমজানের শেষ সপ্তাহে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম বেড়েছে
- ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা ঈদের আগে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নেওয়ার জন্য দাম বাড়িয়েছেন
- ইলিশের দাম আকাশচুম্বী। সরবরাহ কম থাকায় এবং ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ায় দাম অনেক বেড়েছে। অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে
- বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, ঈদের ছুটি ও কেনাকাটা শেষ হলে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দামও কিছুটা কমে আসবে
রমজানের শেষ সপ্তাহে রাজধানীর বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সবজির দাম, সঙ্গে বেড়েছে মাংসেরও। ঈদ সামনে রেখে বাজারে এখন বেশিরভাগ কাঁচাবাজার ও মাংস বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। যদিও কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, তবে সামগ্রিকভাবে ক্রেতাদেরকে উচ্চমূল্যের চাপে পড়তে হচ্ছে।
সবজির বাজারে চড়া মূল্য
- সবজির সরবরাহ ও মৌসুম:
শীতকালীন সবজির সরবরাহ কমে গেছে এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির মৌসুম এখনো শুরু হয়নি। ফলে বাজারে একটি মধ্যবর্তী সময় চলছে, যখন সবজির দাম সাধারণত বেশি থাকে। - মূল্য বৃদ্ধি:
- পটল ৮০-৯০ টাকা কেজি
- বরবটি, করল্লা, শিম ৮০–১০০ টাকা কেজি
-
- কচুর লতি ৭০–৯০ টাকা কেজি
- ঢেঁড়স ৬০–৮০ টাকা কেজি
- সজনে ডাটা ১৮০–২০০ টাকা কেজি
- ক্রেতাদের হতাশা:
ঈদ সামনে রেখে ছুটির দিনে সবজি কিনতে এসে ক্রেতারা হতাশ হচ্ছেন; কারণ আগের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে দাম বেড়েছে।
লেবুর দাম কম
রমজানের শুরুতে লেবুর দাম ছিল হালি প্রতি ১২০–১৫০ টাকা। শেষ সপ্তাহে এসে তা কমে গেছে।
- এলাচ লেবু: হালি ২০ টাকা
- কাগজি বড় সাইজের লেবু: হালি ৪০–৫০ টাকা
কিছু দাম অপরিবর্তিত
- বেগুনের দাম এখনও উঁচু: জাতভেদে ৮০–১২০ টাকা কেজি।
- টমেটো: ৩৫–৪০ টাকা কেজি।
- শসা: ৮০–১০০ টাকা কেজি (মানভেদে ভিন্ন হতে পারে)।
অন্যান্য পণ্যের মূল্য
- কাঁচা মরিচ: ৬০–৮০ টাকা কেজি (পূর্বে ৪০–৫০ টাকা)।
- ধনেপাতা: ৫০–৬০ টাকা কেজি।
- আলু: পাইকারিতে ২০ টাকা, খুচরায় ২৫–৩০ টাকা/কেজি (এটি তুলনামূলক কম)।
- পেঁয়াজ: কেজিতে প্রায় ৫ টাকা বেড়ে খুচরায় ৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ১৭০–১৮০ টাকা।
- রসুন: ভারতীয় ২২০–২৪০ টাকা, দেশি ৮০–১২০ টাকা কেজি।
- আদা: ১২০–১৫০ টাকা কেজি (প্রায় আগের মতোই)।
মাংসের বাজার
- মুরগির দাম বেড়েছে
- ব্রয়লার মুরগি: ২২০–২৩০ টাকা কেজি (পূর্বে ১৯০–২১০ টাকা)।
- সোনালি মুরগি: ৩২০–৩৪০ টাকা কেজি (পূর্বে ২৮০–৩০০ টাকা)।
- বিক্রেতাদের মতে, ঈদের আগে অতিরিক্ত খরচ (কর্মচারীদের বোনাস, বাজারের খরচ ইত্যাদি) পুষিয়ে নেওয়ার জন্য দাম একটু বাড়ানো হয়েছে।
- গরু ও খাসির মাংস:
- গরু: ৭৮০–৮২০ টাকা কেজি (এটি স্থিতিশীল রয়েছে)।
- খাসি: ১০০০–১২০০ টাকা কেজি।
- ডিম:
- বাদামি ডিম: পাইকারিতে ১১৫–১২০ টাকা ডজন, খুচরায় ১২৫–১৩০ টাকা ডজন।
- সাদা ডিম: পাইকারিতে ১১০ টাকা ডজন, খুচরায় ১১৫–১২০ টাকা ডজন।
মাছের বাজার
- ইলিশের দাম আকাশচুম্বী
- ১ কেজির ইলিশ: ২৮০০–৩০০০ টাকা (কেজি ওজনের ওপর নির্ভর করে কখনও ৩৫০০ টাকার বেশি)।
- ছোট আকারের ইলিশ: ১৬০০–১৮০০ টাকা/কেজি।
- সরবরাহ কম হওয়ায় ও ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম অনেক বেড়েছে।
- অন্যান্য মাছ
- চিংড়ি: ৭৫০–৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০–১০০০ টাকা/কেজি (মধ্যম সাইজের গলদা)।
- রুই: ৩৫০–৪০০ টাকা/কেজি।
- কাতল: ৩৮০–৪৫০ টাকা/কেজি।
- পোয়া: ৫০০–৬০০ টাকা/কেজি।
- শিং: ৫৫০–৬০০ টাকা/কেজি।
- মাগুর: ৫০০–৫৫০ টাকা/কেজি।
- তেলাপিয়া: ২৫০–২৮০ টাকা/কেজি।
আশা ও উপসংহার
ঈদকে সামনে রেখে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ক্রেতারা অনেকে আগেভাগে বাজার করার চেষ্টা করলেও উচ্চমূল্যের কারণে বিপাকে পড়ছেন। তবে বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, ঈদের ছুটি ও কেনাকাটা শেষ হলে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দামও কিছুটা স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে ফিরে আসবে।