০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে ৬টি স্পট কিনবে সরকার

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • 27

সারাক্ষণ রিপোর্ট

অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ

মে মাসে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সরকার গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য ৬টি স্পট এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাধারণত প্রতি মাসে ৩-৪টি এলএনজি কার্গো আমদানি করা হলেও এবার চাহিদা পূরণে সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

এই এলএনজি কার্গোগুলো আমদানি করবে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। প্রতিটি কার্গোর ধারণক্ষমতা ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ। পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরের পর এগুলোর পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২,৯০০ থেকে ৩,০০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ)।

দুই ধাপে দরপত্র আহ্বান

আরপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, মে মাসে ব্যবহার উপযোগী ৬টি কার্গো কেনার জন্য দুই ধাপে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

  • প্রথম ধাপ: ২৮ মার্চ আহ্বান করা দরপত্রে ১-২, ১০-১১ এবং ১৬-১৭ মে’র জন্য কার্গো চাওয়া হয়েছে।

দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার, ব্যয় ১২৮৯ কোটি টাকা

  • দ্বিতীয় ধাপ: ৯ এপ্রিল আহ্বান করা দরপত্রে ১৫-১৬, ২২-২৩ এবং ২৫-২৬ মে’র জন্য কার্গো চাওয়া হয়েছে।

মোট ২২টি সরবরাহকারীর কাছে দরপত্র পাঠানো হয়েছে, যাদের সঙ্গে পেট্রোবাংলার মাস্টার সেলস অ্যান্ড পারচেজ চুক্তি রয়েছে।

মে মাসে সম্ভাব্য মোট গ্যাস সরবরাহ

স্পট মার্কেট থেকে আসা ৬টি কার্গোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও ৪টি এলএনজি কার্গো আসবে। সব মিলিয়ে মে মাসে মোট গ্যাস সরবরাহ দাঁড়াবে প্রায় ২৯,০০০ থেকে ৩০,০০০ এমএমসিএফডি। গড়ে প্রতিদিন সরবরাহ হবে ৯৬৭ থেকে ১,০০০ এমএমসিএফডি।

গ্যাস সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, মে মাসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ১,২০০ এমএমসিএফডি গ্যাস, যাতে ৬,৫০০ থেকে ৬,৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে গড় সরবরাহ ৯৫০ থেকে ৯৮০ এমএমসিএফডি, যা মাঝে মাঝে ১,১০০ এমএমসিএফডি পর্যন্ত ওঠে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গ্যাস ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে ৫,২০০ থেকে ৫,৪০০ মেগাওয়াটে। ফলে ব্যয়বহুল ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে হচ্ছে।

পিডিবির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন রেজাউল করিম

পিডিবির উৎপাদন বিভাগের সদস্য মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, “গ্রীষ্মকালে আমরা গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভর করি। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না হওয়ায় এগুলো পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না।”

তেলনির্ভরতা বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে

বর্তমানে সন্ধ্যা ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালিয়ে প্রতিদিন ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যা কখনও ৩,৭০০ থেকে ৩,৮০০ মেগাওয়াটে পৌঁছায়।

তবে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক বেশি—প্রতি ইউনিটে ৩৫-৪৫ টাকা, যেখানে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে এই খরচ প্রায় ১৫ টাকা।

পিডিবি কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসের ঘাটতি পূরণে তেল ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালাতে পর্যাপ্ত অর্থিক তরলতা দরকার, যা বর্তমানে সীমিত।

জহুরুল ইসলাম বলেন, “তেলের খরচ বেশি হলেও বিকল্প না থাকায় এখন তা ব্যবহার করতেই হচ্ছে, কারণ গ্যাস পর্যাপ্ত নয়।”

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে ৬টি স্পট কিনবে সরকার

০৩:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ

মে মাসে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সরকার গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য ৬টি স্পট এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাধারণত প্রতি মাসে ৩-৪টি এলএনজি কার্গো আমদানি করা হলেও এবার চাহিদা পূরণে সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

এই এলএনজি কার্গোগুলো আমদানি করবে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। প্রতিটি কার্গোর ধারণক্ষমতা ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ। পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরের পর এগুলোর পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২,৯০০ থেকে ৩,০০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ)।

দুই ধাপে দরপত্র আহ্বান

আরপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, মে মাসে ব্যবহার উপযোগী ৬টি কার্গো কেনার জন্য দুই ধাপে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

  • প্রথম ধাপ: ২৮ মার্চ আহ্বান করা দরপত্রে ১-২, ১০-১১ এবং ১৬-১৭ মে’র জন্য কার্গো চাওয়া হয়েছে।

দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার, ব্যয় ১২৮৯ কোটি টাকা

  • দ্বিতীয় ধাপ: ৯ এপ্রিল আহ্বান করা দরপত্রে ১৫-১৬, ২২-২৩ এবং ২৫-২৬ মে’র জন্য কার্গো চাওয়া হয়েছে।

মোট ২২টি সরবরাহকারীর কাছে দরপত্র পাঠানো হয়েছে, যাদের সঙ্গে পেট্রোবাংলার মাস্টার সেলস অ্যান্ড পারচেজ চুক্তি রয়েছে।

মে মাসে সম্ভাব্য মোট গ্যাস সরবরাহ

স্পট মার্কেট থেকে আসা ৬টি কার্গোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও ৪টি এলএনজি কার্গো আসবে। সব মিলিয়ে মে মাসে মোট গ্যাস সরবরাহ দাঁড়াবে প্রায় ২৯,০০০ থেকে ৩০,০০০ এমএমসিএফডি। গড়ে প্রতিদিন সরবরাহ হবে ৯৬৭ থেকে ১,০০০ এমএমসিএফডি।

গ্যাস সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, মে মাসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ১,২০০ এমএমসিএফডি গ্যাস, যাতে ৬,৫০০ থেকে ৬,৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে গড় সরবরাহ ৯৫০ থেকে ৯৮০ এমএমসিএফডি, যা মাঝে মাঝে ১,১০০ এমএমসিএফডি পর্যন্ত ওঠে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গ্যাস ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে ৫,২০০ থেকে ৫,৪০০ মেগাওয়াটে। ফলে ব্যয়বহুল ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে হচ্ছে।

পিডিবির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন রেজাউল করিম

পিডিবির উৎপাদন বিভাগের সদস্য মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, “গ্রীষ্মকালে আমরা গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভর করি। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না হওয়ায় এগুলো পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না।”

তেলনির্ভরতা বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে

বর্তমানে সন্ধ্যা ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালিয়ে প্রতিদিন ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যা কখনও ৩,৭০০ থেকে ৩,৮০০ মেগাওয়াটে পৌঁছায়।

তবে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক বেশি—প্রতি ইউনিটে ৩৫-৪৫ টাকা, যেখানে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে এই খরচ প্রায় ১৫ টাকা।

পিডিবি কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসের ঘাটতি পূরণে তেল ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালাতে পর্যাপ্ত অর্থিক তরলতা দরকার, যা বর্তমানে সীমিত।

জহুরুল ইসলাম বলেন, “তেলের খরচ বেশি হলেও বিকল্প না থাকায় এখন তা ব্যবহার করতেই হচ্ছে, কারণ গ্যাস পর্যাপ্ত নয়।”