বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন

তাপপ্রবাহ-অনাবৃষ্টিতে বোরো ধানে বাড়ছে ব্লাস্টের ঝুঁকি

  • Update Time : রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ২.১৬ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বৃষ্টির অভাব ও তাপপ্রবাহের চিত্র

গত কয়েক মাসে সারাদেশে বৃষ্টি নেই। ঈদের পর থেকেই তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২ এপ্রিল থেকে আজ পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগসহ দিনাজপুর, সৈয়দপুর, ফেনী, মৌলভীবাজার, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা দেখানো হয়েছে।

বোরো ধানের উৎপাদন ও লক্ষ্যমাত্রা

বোরো মৌসুমে দেশে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি ২০২৪‑২৫ অর্থবছরে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টন। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করতে হবে এবং প্রতি হেক্টর ফলন আনুমানিক ৪.৪৬ টন রাখতে হবে। ইতিমধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই ধানের শীষ ধরতে শুরু করেছে।

ঝুঁকিপূর্ণ জেলা ও সতর্কতা

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বিশেষ বুলেটিনে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ জেলার নাম উল্লেখ করেছে: টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ,পাবনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও যশোর। বুলেটিনে প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে জমিতে সর্বদা ৫–৭ সেন্টিমিটার পানি রাখার এবং পানির ঘাটতি এড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

শীষ ব্লাস্ট রোগে পাতায় প্রথমে ছোট ডিম্বাকৃতি দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে বড় হয়ে ধূসর–বাদামি রঙ ধারণ করে এবং পাতা মরে যেতে পারে। রোগ ছড়িয়ে গেলে গিঁট নরম হয়ে ভেঙে যায়। প্রতিরোধে বীজতলা থেকে বিকেলে ১০ লিটার পানিতে ৮ গ্রাম ট্রুপার বা ৬ গ্রাম নেটিভো মিশিয়ে প্রতি ৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে উচ্চ তাপমাত্রা ধান চিটা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়, যা ফলন কমিয়ে দিতে পারে। ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে আগেই ট্রুপার বা নেটিভো স্প্রে করা জরুরি। তবে বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির পরে তাপমাত্রা কমে গেলে ধানগাছের পাতা আবার সাধারণভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

উৎপাদন ও বাজার পরিস্থিতি

গত কয়েক বছরে বোরো ধানের উৎপাদন নিম্নরূপ:

  • ২০২৩‑২৪: ২ কোটি ১০ লাখ টন
  • ২০২২‑২৩: ২ কোটি ৭ লাখ টন
  • ২০২১‑২২: ২ কোটি ১ লাখ টন
  • ২০২০‑২১: ১ কোটি ৯৮ লাখ টন

কৃষি বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। জীবানুনাশক ও সার সস্তা না হওয়ায় যথাযথ পরিমাণে ব্যবহার করা যাচ্ছে না, যা ফলন কমিয়ে দিতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024