ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
আজরেক সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল কাগজ তৈরির বিশেষ কৌশল। রাজধানী শহর তেনোচতিতলান এবং অন্যান্য প্রদেশের বিভিন্ন কাজের জন্য অনেক কাগজের প্রয়োজন হত। সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে কর সংগ্রহ, গ্রামের মধ্যে মোকদ্দমা এবং ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির দ্বন্দ্ব-বিরোব এবং তার জন্য আইনী যুদ্ধ-সবকিছুর জন্যই কাগজ তৈরি করতে হত।
এবং এই সব কাজের বিবরণ, তথ্য কাগজে লিপিবদ্ধ করার কাজও করতে হত। এছাড়া ব্যবসায়ীরা। তাদের ব্যবসা, লেনদেন, হিসাবপত্র সঠিকভাবে রাখার জন্য কাগজ ব্যবহার করত। সরকারি কাজের জন্য এবং সরকারি তথ্য, চিঠিপত্র লেখার জন্যও কাগজের ব্যবহার ছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী কৌমরা তাদের জমির হিসেব এবং জমি সংক্রান্ত নানা তথ্য লিখে রাখত কাগজের উপর।
স্বাভাবিকভাবে কাগজ-এর উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং তার আকার, গুণগতমান এসবও ছিল প্রয়োজনীয় দিক। কাগজের নানারকম ব্যবহারের মধ্যে মন্দির, পূজা অর্চনা, মন্দিরের প্রশাসনিক কাজও ছিল।
ধর্মসংক্রান্ত নানা কাজ, প্রচার, পূজাপাঠ, জ্যোতিষবিদ্যা সংক্রান্ত হিসাব-এর কাজ-এর জন্য একজনের উপর দায়িত্ব দেওয়া হত। এইসব কাজের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই কারো কারো জীবিকার সুযোগ ঘটত। এছাড়া পুরোহিতরা নিজেদের কিছু কাজও করতেন কাগজের সাহায্য নিয়ে।
(চলবে)
আজতেক সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৪৮)