সত্যেন্দ্রকুমার বসু
সহসা তাঁর আনন্দপূর্ণ হৃদয়ে মনে হল যেন তিনি সুমেরু পর্বতের মত উঁচুতে উঠে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় স্বর্গ পার হয়ে পুণ্যাত্মাদের প্রাসাদে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, ভক্তিভাজন মৈত্রেয় অসংখ্য দেবতাদের মধ্যে এক সমুজ্জল সিংহাসনে উপবিষ্ট রয়েছেন।
এ সময়ে, তাঁকে যে বেদীর সামনে বলিদানের জন্যে দস্যরা নিয়ে এসেছে, এ জ্ঞান তাঁর ছিল না; তিনি যেন সশরীরে এক আনন্দসাগরে ভাসছিলেন। এদিকে সঙ্গীরা কান্নাকাটি করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ এক ভীষণ ঝড় উঠল আর সেই ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়তে লাগল, চারিদিকে বালি উড়তে লাগল আর নদীতে খুব ঢেউ হল।
দস্যুরা ভয় পেয়ে হিউএনচাঙের সঙ্গীদের জিজ্ঞাসা করল, ‘এই শ্রমণ কোথা থেকে আছেন? এর নাম কী?’ তাঁরা জবাব দিলেন, ‘ইনি একজন বিখ্যাত সাধু। চীনদেশ থেকে ধর্মের অনুসন্ধানে এসেছেন। একে হত্যা করলে আপনাদের মহাপাপ হবে। এই ঝড় আর ঢেউ দেখে দৈবরোষ বুঝতে পারছেন না? এখনো ক্ষান্ত হোন।’
দস্যরা ভয়ে হিউএনচাঙের পায়ে সমাধিস্থ থাকায় কিছু জানতে পারেন নি। পড়ল। হিউএনচাঙ কিন্তু একজন দস্যু যখন ভক্তিভরে তাঁর পাদস্পর্শ করল, তখন তিনি চোখ মেলে ধীরভাবে জিজ্ঞাসা করলেন যে সময় হয়েছে কি না।
(চলবে)
হিউএনচাঙ (পর্ব-৮৮)