সারাক্ষণ রিপোর্ট
ম্যাচের সারসংক্ষেপ
ইতালির রোমে Foro Italico কোর্টে রাতের আলোয় মাত্র ৪৬ মিনিটের মধ্যে বিশ্ব নং ১ ইয়ান্নিক সিন্নার নরওয়ের ছয় নম্বর বাছাই ক্যাসপার রুডকে ৬–০, ৬–১ গেমে হারিয়ে দিলেন। ম্যাচের প্রথম পাঁচ গেম শেষ হওয়ার আগেই রুড মাত্র এক পয়েন্ট আদায় করতে পেরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত রুডের ঝুলিতে ওঠে একমাত্র গেম; বাকি সময়টায় সিন্নারের একচ্ছত্র আধিপত্য।
অর্জনের গুরুত্ব
এটাই সিন্নারের ঘরের মাটিতে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট ইতালিয়ান ওপেনে প্রথম বার শেষ চার নিশ্চিত করা। তিন মাসের ডোপিং–নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর এটি তাঁর প্রথম শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো। আর মাত্র দুই জয় দূরে দাঁড়িয়ে আছেন কাঙ্ক্ষিত ট্রফির থেকে। সেমিফাইনালে আজ তিনি ১১ নং বাছাই টমি পলের মুখোমুখি হবেন।
প্রতিপক্ষের অভিজ্ঞতা
কোভিডের পরবর্তী সময়ের ক্লে–কোর্ট মৌসুমে রুডই ছিলেন সবচেয়ে ফর্মে থাকা খেলোয়াড়; মাদ্রিদ ওপেনের শিরোপাও তাঁর ঝুলিতে। তবু রোমের কোর্টে সিন্নারের ‘প্রায় নিখুঁত’ খেলায় তিনি উৎসব করার সুযোগই পাননি। ম্যাচ শেষে রুড রসিকতা করে বলেন, ‘এ রকম পারফরম্যান্সের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছে, দু’পাশ থেকেই ১০০ মাইল গতির বল ছুটে আসছে; যেন এক দোয়ালকে খেলা করছি।’
সিন্নারের ব্যস্ত দিন
বিশাল ম্যাচের আগের দিনটা বিশ্রাম না নিয়ে সিন্নার নিলেন ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। সকালে ভ্যাটিকানে পোপ লিও XIV–এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একটি টেনিস র্যাকেট উপহার দিলেন; রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কোপা ইতালিয়ার ফাইনাল দেখতে উপস্থিত ছিলেন। নিজেই বলেন, ‘পোপের সঙ্গে দেখা—জীবনের ভোলা যাবে না এমন মুহূর্ত। কী বলব মাথায় আসছিল না; বাবা–মা সঙ্গে ছিলেন, খুব আবেগঘন ছিল।’
রুডকে কীভাবে ভাঙলেন সিন্নার
প্রথম পয়েন্ট থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা, ফোরহ্যান্ড ও ব্যাকহ্যান্ড দুই দিকেই তীব্র গতি, সার্ভিস রিটার্নে নিখুঁত আগ্রাসন—সব মিলিয়ে রুডের ছন্দ খুঁজে পাওয়ার সুযোগই মেলেনি। প্রতিটি লম্বা র্যালিতে সিন্নার রক্ষণ থেকে মুহূর্তে আক্রমণে পাল্টে পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। রুডের ভাষায়, ‘মজা লেগেছে দেখেও—নিস্তেজভাবে হারা সত্ত্বেও ভাবছিলাম, এ তো অন্য গ্রহের খেলা।’
ইতালিয়ান টেনিসের স্বপ্নময় ২৪ ঘণ্টা
সিন্নারের জয়টি ছিল ইতালিয়ান টেনিসের দারুণ এক দিনের পরিসমাপ্তি। আগের দিনই অষ্টম বাছাই লোরেনцо মুসেত্তি দ্বিতীয় বাছাই আলেকজান্ডার জ্ভেরেভকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছেন, আর নারী বিভাগে ষষ্ঠ বাছাই জাসমিন পাওলিনি ২০১৪ সালের পর প্রথম ইতালিয়ান হিসেবে ফাইনালে জায়গা পেয়েছেন।
তিন মাসের বিরতি শেষে সিন্নার যে বিধ্বংসী রূপে ফিরেছেন, তাতে ইতালিয়ান সমর্থকেরা স্বপ্ন দেখতেই পারেন ঘরের মাটিতে শিরোপা উৎসবের। তবে সিন্নার নিজেই মনে করিয়ে দেন—প্রতিটি দিন নতুন চ্যালেঞ্জ, আর প্রতিটি ম্যাচ শুরু হয় শূন্য থেকে। এখন দেখার, আজকের রাতেই কি টমি পলের বিরুদ্ধে আরেকটি ‘প্রায় নিখুঁত’ প্রদর্শনী রেখে শিরোপার পথে আরেক ধাপ এগোতে পারেন তিনি।