বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা দেওয়ার আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা সোয়া ১১টায় বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
কেন খারিজ হলো রিট?
আদালত জানায়, দুটি কারণে রিটটি গ্রহণযোগ্য হয়নি:
রিটকারী সংক্ষুব্ধ পক্ষ নন – ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় জনস্বার্থে এই রিট গ্রহণযোগ্য নয়।
আপিলের সুযোগ ছিল – নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন বা শেখ ফজলে নূর তাপস আপিল করতে পারতেন, কিন্তু তারা তা করেননি। নির্বাচন কমিশন থেকে গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে তৃতীয়পক্ষের রিট করার সুযোগ নেই।
শপথ নেওয়ার পথে আর বাধা নেই: ইশরাকের আইনজীবীরা
হাইকোর্টের রায়ের পর ইশরাকের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “এখন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে গড়িমসি না করে ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করা। যদি তা না করা হয়, তা হলে সেটা হবে আদালত অবমাননা।”
রিটকারী আপিল করবেন
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন রায়ের পর বলেন, তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
রিটের পটভূমি
গত ১৫ মে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ। তিনি ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট বাতিলের আবেদন করেন এবং তাকে শপথ না পড়াতে নির্দেশনা চান। সেই সঙ্গে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও দাবি করেন।
শুনানির সময় কে ছিলেন?
- রিটের পক্ষে শুনানি করেন: অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন
- রাষ্ট্রপক্ষে: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন
- ইশরাকের পক্ষে: ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল
- সহকারী হিসেবে ছিলেন: ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ
পটভূমি: ২০২০ সালের নির্বাচন ও ট্রাইব্যুনালের রায়
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। তবে গত ২৭ মার্চ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এই ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ের ফলে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা নেই। এখন দেখার বিষয়, সরকার কত দ্রুত তাকে শপথ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়।