১১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
বাংলা সাহিত্য অবলম্বিত চলচ্চিত্র, সাইবারক্রাইম থ্রিলার ও আন্তর্জাতিক কনটেন্টে জমজমাট সপ্তাহ ক্যাটসআই: আধুনিক গার্ল গ্রুপের নতুন নকশা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১০টার পর সব অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নিচ্ছে:রাজধানীর জনবহুল এলাকায় ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণ— আগুনে মোটরসাইকেল পুড়ে গেল গাজীপুরে চলন্ত বাসে হঠাৎ আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেল যাত্রীরা গ্রেফতার ও বিচার থেকে আজীবন দায়মুক্তি পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অফিসকেন্দ্রিক জীবনযাপন ও স্ট্রেস একসঙ্গে বাড়াচ্ছে ডায়াবেটিসের বিস্তার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৬) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে আহত ২০ জন, বাড়িঘর ভাঙচুর ৩৫ বলে শতক হাঁকালেন হাবিবুর, বাংলাদেশের দ্রুততম টি–২০ সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড

মাঠে মেশিন, হাতে স্বপ্ন: বাংলাদেশের নারী কৃষকের নতুন পরিচয়

এক সময় যেখানে নারীর কাজ সীমিত ছিল রান্নাঘর বা ক্ষেতের প্রান্তে, আজ সেখানেই তারা চালাচ্ছে পাওয়ার টিলার, ব্যবহার করছে বুম স্প্রেয়ার, আর ডিজিটাল অ্যাপে শিখছে আধুনিক চাষের কৌশল। এই প্রতিবেদন একজন নারী কৃষকের গল্প নয় শুধু, বরং হাজারো সংগ্রামী নারীর কণ্ঠস্বর যারা প্রযুক্তির হাত ধরে বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের কৃষিচিত্র।

যশোরের সাবিনা খাতুন

যশোরের শার্শা উপজেলার নারী চাষি সাবিনা খাতুন। বয়স চল্লিশের ঘরে। বছর চারেক আগেও তিনি ছিলেন স্বামীনির্ভর একজন গৃহবধূ। এখন তাঁর পরিচয়—একজন সফল ধানচাষি, বুম স্প্রেয়ার চালক, এবং স্থানীয় কৃষক প্রশিক্ষক।

সাবিনা বলেন,

“প্রথমে তো সবাই হাসাহাসি করতো। ‘নারী হয়ে মেশিন চালাবে?’ এখন আমাকে দেখে আরও তিনজন মহিলা শিখেছে পাওয়ার টিলার চালানো।”

আসুন আমরা কীটনাশককে 'না' বলি | Barcik News Portal

প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ: মাঠে ডিজিটালের ছোঁয়া

সাবিনা প্রথম বুম স্প্রেয়ার ব্যবহার শেখেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার মোবাইল অ্যাপে ভিডিও দেখে।
“ভিডিওটা বারবার দেখি। ইউটিউবেও দেখি। পরে প্রশিক্ষণে যাই কৃষি অফিসে।”
এখন তিনি শুধু নিজে ব্যবহার করেন না, পাশের গ্রামের নারীদেরও শেখান কীভাবে কীটনাশক কম খরচে ছিটাতে হয়।

সামাজিক বাধা: মেয়েদের কাজ এটা না

শুরুতে পরিবার ও সমাজ থেকে নানা কথা শুনতে হয়েছে।
“শাশুড়ি বলতো, ‘কাজ করতে গেলে মেয়ে মানুষ অপমান হয়’। আমি বলেছি, অপমান না, সম্মান পাই আমি।”

ডাক ফার্মিং কতটা লাভজনক? কিভাবে শুরু করবেন?

অর্থনৈতিক পরিবর্তন: নিজের টাকায় হাঁসের খামার

এক মৌসুমে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে লাভ করেন ৪০ হাজার টাকা। সেই টাকায় হাঁসের খামার দেন। এখন তাঁর খামারে ১০০টির বেশি হাঁস।
“এই টাকা আমি কারো কাছ থেকে চেয়ে বা দয়ায় নেইনি । নিজের কামাই নিজের হাতে।”

নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা

সাবিনার মেয়ে এখন কলেজে পড়ে।
“মা মাঠে যন্ত্র চালায় দেখে আমি আর লজ্জা পাই না। গর্ব হয়,”—বলে মেয়ে শিমু।

সাবিনারা এখন আর একা নন। পিরোজপুর, গাইবান্ধা, কুমিল্লা—সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এই পরিবর্তন। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নারীরা শুধু কৃষক নন, হচ্ছেন প্রশিক্ষক, উদ্যোক্তা, আর সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলা সাহিত্য অবলম্বিত চলচ্চিত্র, সাইবারক্রাইম থ্রিলার ও আন্তর্জাতিক কনটেন্টে জমজমাট সপ্তাহ

মাঠে মেশিন, হাতে স্বপ্ন: বাংলাদেশের নারী কৃষকের নতুন পরিচয়

১০:০০:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

এক সময় যেখানে নারীর কাজ সীমিত ছিল রান্নাঘর বা ক্ষেতের প্রান্তে, আজ সেখানেই তারা চালাচ্ছে পাওয়ার টিলার, ব্যবহার করছে বুম স্প্রেয়ার, আর ডিজিটাল অ্যাপে শিখছে আধুনিক চাষের কৌশল। এই প্রতিবেদন একজন নারী কৃষকের গল্প নয় শুধু, বরং হাজারো সংগ্রামী নারীর কণ্ঠস্বর যারা প্রযুক্তির হাত ধরে বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের কৃষিচিত্র।

যশোরের সাবিনা খাতুন

যশোরের শার্শা উপজেলার নারী চাষি সাবিনা খাতুন। বয়স চল্লিশের ঘরে। বছর চারেক আগেও তিনি ছিলেন স্বামীনির্ভর একজন গৃহবধূ। এখন তাঁর পরিচয়—একজন সফল ধানচাষি, বুম স্প্রেয়ার চালক, এবং স্থানীয় কৃষক প্রশিক্ষক।

সাবিনা বলেন,

“প্রথমে তো সবাই হাসাহাসি করতো। ‘নারী হয়ে মেশিন চালাবে?’ এখন আমাকে দেখে আরও তিনজন মহিলা শিখেছে পাওয়ার টিলার চালানো।”

আসুন আমরা কীটনাশককে 'না' বলি | Barcik News Portal

প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ: মাঠে ডিজিটালের ছোঁয়া

সাবিনা প্রথম বুম স্প্রেয়ার ব্যবহার শেখেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার মোবাইল অ্যাপে ভিডিও দেখে।
“ভিডিওটা বারবার দেখি। ইউটিউবেও দেখি। পরে প্রশিক্ষণে যাই কৃষি অফিসে।”
এখন তিনি শুধু নিজে ব্যবহার করেন না, পাশের গ্রামের নারীদেরও শেখান কীভাবে কীটনাশক কম খরচে ছিটাতে হয়।

সামাজিক বাধা: মেয়েদের কাজ এটা না

শুরুতে পরিবার ও সমাজ থেকে নানা কথা শুনতে হয়েছে।
“শাশুড়ি বলতো, ‘কাজ করতে গেলে মেয়ে মানুষ অপমান হয়’। আমি বলেছি, অপমান না, সম্মান পাই আমি।”

ডাক ফার্মিং কতটা লাভজনক? কিভাবে শুরু করবেন?

অর্থনৈতিক পরিবর্তন: নিজের টাকায় হাঁসের খামার

এক মৌসুমে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে লাভ করেন ৪০ হাজার টাকা। সেই টাকায় হাঁসের খামার দেন। এখন তাঁর খামারে ১০০টির বেশি হাঁস।
“এই টাকা আমি কারো কাছ থেকে চেয়ে বা দয়ায় নেইনি । নিজের কামাই নিজের হাতে।”

নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা

সাবিনার মেয়ে এখন কলেজে পড়ে।
“মা মাঠে যন্ত্র চালায় দেখে আমি আর লজ্জা পাই না। গর্ব হয়,”—বলে মেয়ে শিমু।

সাবিনারা এখন আর একা নন। পিরোজপুর, গাইবান্ধা, কুমিল্লা—সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এই পরিবর্তন। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নারীরা শুধু কৃষক নন, হচ্ছেন প্রশিক্ষক, উদ্যোক্তা, আর সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত।