০২:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৬)

যদিও এ সম্বন্ধে প্রমাণ হইয়াছিল যে, হেষ্টিংস তাহাদের নিকট হইতে ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়াছিলেন বটে, তথাপি দিনাজপুরের ন্যায় স্পষ্টতঃ গঙ্গাগোবিন্দের দ্বারা তাহা গ্রহণ করা হইয়াছিল কি না, তদ্বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। কিন্তু ইয়ং, এণ্ডাসন, মুর প্রভৃতি হেষ্টিংসের বিচারে সাক্ষ্য-প্রদানকালে বলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন যে, তাঁহারা শুনিয়াছেন, গঙ্গা-গোবিন্দের দ্বারাই হেষ্টিংস খেলারাম ও কল্যাণ সিংহের নিকট হইতে উক্ত ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন।

গঙ্গাগোবিন্দ যে তাহাদের নিকট হইতে সেই ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। কারণ সে সময়ে তিনি রাজস্ববিষয়ে সর্ব্বেসর্ব্বা। সমিতির দেওয়ান হওয়ায় তাঁহার প্রতি রাজস্ব-সম্বন্ধীয় যাবতীয় প্রমাণের ভার অর্পিত ছিল, এবং খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে বিহারের ইজারা ও কল্যাণ সিংহকে দেওয়ান নিযুক্ত করা যে, তাঁহার দ্বারা সম্পন্ন হইয়াছিল, ইহারও বেশ প্রমাণ পাওয়া যায়।

সুতরাং তিনি যে তাহাদের নিকট হইতে টাকা লইয়াছিলেন, তাহা অনায়াসে বলা যাইতে পারে। দিনাজপুরের স্নায় এখানেও ২ লক্ষ টাকা অনাদায়ের কথাও শুনা যায়।। অবশিষ্ট টাকার কি হইল, অথবা তাহা আদায় হইয়াও অনাদায়ের ন্যায় গণ্য হইয়াছে, এ সমস্ত রহস্তজনক কথা হেষ্টিংস ও দেওয়ানজী ব্যতীত আর কেহই অবগত নহেন।

হেষ্টিংস স্পষ্টতঃ স্বীকার না করিলেও অন্তান্ত প্রমাণ হইতেও বেশ বুঝা যায় যে, বিহারের উৎকোচ-ব্যাপারে তাহার প্রিয়বন্ধু গঙ্গাগোবিন্দই লিপ্ত ছিলেন এবং দিনাজপুরের ন্যায় বিহারেও দেওয়ানজী নিজের ও নিজ প্রভুর উদর পূরণের জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন।

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৬)

১১:০০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

যদিও এ সম্বন্ধে প্রমাণ হইয়াছিল যে, হেষ্টিংস তাহাদের নিকট হইতে ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়াছিলেন বটে, তথাপি দিনাজপুরের ন্যায় স্পষ্টতঃ গঙ্গাগোবিন্দের দ্বারা তাহা গ্রহণ করা হইয়াছিল কি না, তদ্বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। কিন্তু ইয়ং, এণ্ডাসন, মুর প্রভৃতি হেষ্টিংসের বিচারে সাক্ষ্য-প্রদানকালে বলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন যে, তাঁহারা শুনিয়াছেন, গঙ্গা-গোবিন্দের দ্বারাই হেষ্টিংস খেলারাম ও কল্যাণ সিংহের নিকট হইতে উক্ত ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন।

গঙ্গাগোবিন্দ যে তাহাদের নিকট হইতে সেই ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। কারণ সে সময়ে তিনি রাজস্ববিষয়ে সর্ব্বেসর্ব্বা। সমিতির দেওয়ান হওয়ায় তাঁহার প্রতি রাজস্ব-সম্বন্ধীয় যাবতীয় প্রমাণের ভার অর্পিত ছিল, এবং খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে বিহারের ইজারা ও কল্যাণ সিংহকে দেওয়ান নিযুক্ত করা যে, তাঁহার দ্বারা সম্পন্ন হইয়াছিল, ইহারও বেশ প্রমাণ পাওয়া যায়।

সুতরাং তিনি যে তাহাদের নিকট হইতে টাকা লইয়াছিলেন, তাহা অনায়াসে বলা যাইতে পারে। দিনাজপুরের স্নায় এখানেও ২ লক্ষ টাকা অনাদায়ের কথাও শুনা যায়।। অবশিষ্ট টাকার কি হইল, অথবা তাহা আদায় হইয়াও অনাদায়ের ন্যায় গণ্য হইয়াছে, এ সমস্ত রহস্তজনক কথা হেষ্টিংস ও দেওয়ানজী ব্যতীত আর কেহই অবগত নহেন।

হেষ্টিংস স্পষ্টতঃ স্বীকার না করিলেও অন্তান্ত প্রমাণ হইতেও বেশ বুঝা যায় যে, বিহারের উৎকোচ-ব্যাপারে তাহার প্রিয়বন্ধু গঙ্গাগোবিন্দই লিপ্ত ছিলেন এবং দিনাজপুরের ন্যায় বিহারেও দেওয়ানজী নিজের ও নিজ প্রভুর উদর পূরণের জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন।