ইহাদের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত হওয়ায়, অবশেষে সকাউন্সিল গবর্ণর জেনারেলের উপর বিবাদ মীমাংসার ভার পতিত হয়। বলা বাহুল্য, গবর্ণর জেনারেল গঙ্গাগোবিন্দকে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন যে, কে প্রকৃত উত্তরাধিকারী? গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ বলেন যে, যখন রাধানাথকে বৈদ্যনাথ দত্তকপুত্র গ্রহণ করিয়া গিয়াছেন, তখন হিন্দু নিয়মানুসারে তিনি বাস্তবিকই অধিকারী; সুতরাং তাঁহাকেই জমিদারী প্রদান করা কর্তব্য; কান্তনাথ বৈদ্যনাথের সম্পত্তির অধিকারী হইতে পারেন না।
যদি রাধানাথকে বৈদ্যনাথ পোষ্যপুত্র গ্রহণ না করিতেন, তাহা হইলে, কান্তনাথ বিষয় পাইলেও পাইতে পারিতেন। আবার গোপনে গোপনে গবর্ণমেন্টকে বুঝাইয়া দিলেন যে, তখন তাঁহার জমিদারীর ভার রাধানাথের বয়স যখন ৫/৬ বৎসর মাত্র, গবর্ণমেন্টের হস্তেই পতিত হইবে। এবং তিনি প্রকৃত উত্তরাধিকারী; তাহাতে আবার তাঁহাদের হস্তে বিষয়ের ভার পতিত হইলে, তাহাদেরও যথেষ্ট সুবিধা ঘটিবে।
অতএব রাধা-নাথকে না দিয়া, কান্তনাথকে জমিদারী দেওয়া যুক্তিযুক্ত নহে। সুতরাং গবর্ণর জেনারেল রাধানাথকে জমিদারী প্রদান করিলেন। রাধানাথ অপ্রাপ্তবয়স্ক বলিয়া গবর্ণমেন্টকেই তাঁহার তত্ত্বাবধানের ভার লইতে হইল। সমিতির দেওয়ান তাহার সুবন্দোবস্তের জন্য আদিষ্ট হইলেন। হেষ্টিংস সাহেবের নিজ মনোমত লোকের অভাব কোথায়?
অমনি দিনাজপুরের নাবালগ রাঙ্গার তত্ত্বাবধানের জন্য গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের পরামর্শানুসারে সুবিখ্যাত দেবীসিংহ নিযুক্ত হইলেন। সাধারণে ভাবিল যে, রাধানাথ যখন বৈদ্যনাথের দত্তক, তখন গবর্ণর জেনারেল তাঁহাকে জমিদারী দিয়া ভালই করিয়াছেন। কিন্তু ভিতরের কথা এক্ষণে প্রকাশ করিয়া বলা আবশ্যক।