নালন্দা
আমাদের কিছু সৌভাগ্যবশতঃ চৈনিক পরিব্রাজকরা মুসলমান আক্রমণের প্রায় অব্যবহিত পূর্বে ভারতে এসে ভারতীয় সভ্যতার কিছু কিছু বিবরণ দিয়ে গিয়েছেন। তা না হলে নালন্দার মত একটা আশ্চর্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে আমরা বস্তুত কিছুই জানতে পারতাম না।
হিউএনচাঙ এযাত্রা এখানে প্রায় দেড় বছর কাটিয়েছিলেন। তার পর পূর্ব ও দক্ষিণ ভারত ভ্রমণের শেষে আবার আট নয় মাস এখানে ছিলেন। তিনি নালন্দা সম্বন্ধে যা বলেছেন, বৌদ্ধপৌরাণিক কাহিনীগুলি বাদ দিয়ে তার প্রায় সমস্তটাই সংকলন করে দিলাম।
হিউএনচাঙ বলেন, বুদ্ধের পরিনির্বাণের অল্প কিছুদিন পরে শত্রুাদিত্য নামক এক বৌদ্ধ রাজা এখানে প্রথম সঙ্ঘারাম তৈয়ারি করেন। তার পর গুপ্তবংশীয় চারজন সম্রাট-বুদ্ধগুপ্ত, তথাগতগুপ্ত, বালাদিত্য ও বজ্র, আর চারটি সঙ্ঘারাম তৈয়ারী করে দিয়েছেন।
তা ছাড়া মধ্য ভারতের এক রাজাও এখানে এক প্রকাণ্ড সঙ্ঘারাম তৈয়ারী করেছেন। এ ছয়টি সঙ্ঘারামের সমস্ত সৌধগুলি ঘিরে একটা খুব উঁচু ইঁটের প্রাচীর তৈয়ারী হয়েছে। ঢুকবার জন্যে কেবল একটি তোরণ আছে।
এত রাজা এখানে এত সৌধ নির্মাণ করেছেন যে এখন এ জায়গাটা একটা অদ্ভুত দৃশ্য, আর এখানকার ভাস্কর্য সত্যই অপরূপ। এখানে হাজার হাজার ভিক্ষু আছেন। এরা সকলেই অসাধারণ জ্ঞানী আর গুণবান। শত শত পণ্ডিত আছেন যাঁদের যশ বহু দূরদেশ পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে।
(চলবে)
সত্যেন্দ্রকুমার বসু 



















