১২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও: পরিবর্তনের ভেতর টিকে থাকার অভিনয়শিল্পী কেপপ ডেমন হান্টার্স: আবেগ থেকে বৈশ্বিক উন্মাদনা, এক অ্যানিমেশনের অসম্ভব জয়যাত্রা ভেনিজুয়েলা প্রশ্নে ট্রাম্পে আস্থা, মাদুরো হটাতে পারলেই সব ক্ষমা ডোরালের নির্বাসিতদের কণ্ঠ যুদ্ধবিরতি ছাড়াই শেষ আসিয়ান বৈঠক, আবার আলোচনায় বসছে থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডেটা সেন্টারে বড় ঝাঁপ আদানির, পারমাণবিক বিদ্যুৎ নিয়েও ভাবনা হাদি হত্যায় তিন শ’ আসনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা শঙ্কা: জামায়াত চীনের নববর্ষে পর্যটনে উল্লম্ফন, ঘরোয়া ভোগ ব্যয়ে নতুন গতি শিশু যত্নসেবায় নতুন দিগন্ত: জাতীয় আইন আনছে চীন রাশিয়ার রাজধানীতে গাড়িবোমা হামলা, শীর্ষ সেনা জেনারেল নিহত চিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে চার হাজার তিনশো মিটার উচ্চতায় প্রাগৈতিহাসিক মানুষের চিহ্ন, ইতিহাসে নতুন দিগন্ত

ধনসিরি নদী বাঁচাতে নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা

নাগাল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহ ধনসিরি নদী গত কয়েক বছরে দ্রুত দূষিত হয়ে উঠেছে। শহরায়ন, পৌর বর্জ্য, কৃষিজ রাসায়নিক এবং অনিয়ন্ত্রিত গৃহস্থালি আবর্জনা সরাসরি নদীতে পড়ায় নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বলে গবেষকরা সতর্ক করেছেন।

গবেষণা পদ্ধতি ও মূল্যায়ন

নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম রোমিও সিংহের নেতৃত্বে একটি দল চার মৌসুম ধরে নদীর উজান, মধ্য ও ভাটিতে পানি সংগ্রহ করে রাসায়নিক ও ভৌত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেছে। প্রতি মৌসুমের তথ্য দিয়ে পানি-মান সূচক (WQI) নির্ধারণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থানেই পানির মান মানব ব্যবহারের উপযোগী সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

দূষণের মূল কারণ

শহর ও বাজার এলাকার অপ্রস্তুত নর্দমা ও ড্রেনেজ
কৃষিজ ক্ষেতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পৃষ্ঠ-প্রবাহ
নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় সরাসরি নদীতে বর্জ্য নিক্ষেপ
গৃহস্থালি বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রীর অনিয়ন্ত্রিত ফেলা

সুপারিশ: দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগ

গবেষকদলের প্রস্তাবনা অনুযায়ী—

বর্জ্য ফেলার স্থান নদী-তীর থেকে সরিয়ে নিতে হবে।

সরাসরি ময়লা ও নর্দমা নদীতে নিক্ষেপ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।

উন্নত বর্জ্যজল পরিশোধন ব্যবস্থা (প্রি-ট্রিটমেন্ট ও বায়োলজিক্যাল ফিল্টার) চালু করতে হবে।

পৌর ড্রেনেজ ও নর্দমা লাইনের কাঠামো সংস্কার ও প্রশস্ত করতে হবে।

আঞ্চলিক পর্যায়ে শক্তিশালী পানি-ব্যবস্থাপনা নীতি ও নিয়মিত মান-পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সচেতনতা ও সামাজিক অংশগ্রহণ

গবেষণা প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, শুধু নীতি গ্রহণ যথেষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করতে হবে এবং স্কুল পর্যায় থেকেই পরিবেশশিক্ষা জোরদার করতে হবে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রকাশ জনসচেতনতা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

বিশেষজ্ঞের মন্তব্য

ড. সিংহ বলেন, “এই গবেষণা ধনসিরি নদীসহ দেশের অন্যান্য অবহেলিত নদী পুনরুদ্ধারের টেকসই ভিত্তি তৈরি করতে পারে। বৈজ্ঞানিক তথ্য, জনসম্পৃক্ততা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি একত্রে বাস্তবায়ন করা গেলে নদীর জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনা ও মানুষের নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

দলের মতে, সুপারিশগুলো দ্রুত কার্যকর করা হলে ধনসিরির পানি-গুণমান পর্যায়ক্রমে উন্নত হবে এবং নদী-কেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিও রক্ষা পাবে। গবেষকরা আশা করেন, এই মডেল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য নদী পুনরুজ্জীবনেরও পথ দেখাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও: পরিবর্তনের ভেতর টিকে থাকার অভিনয়শিল্পী

ধনসিরি নদী বাঁচাতে নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা

১২:১০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

নাগাল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহ ধনসিরি নদী গত কয়েক বছরে দ্রুত দূষিত হয়ে উঠেছে। শহরায়ন, পৌর বর্জ্য, কৃষিজ রাসায়নিক এবং অনিয়ন্ত্রিত গৃহস্থালি আবর্জনা সরাসরি নদীতে পড়ায় নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বলে গবেষকরা সতর্ক করেছেন।

গবেষণা পদ্ধতি ও মূল্যায়ন

নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম রোমিও সিংহের নেতৃত্বে একটি দল চার মৌসুম ধরে নদীর উজান, মধ্য ও ভাটিতে পানি সংগ্রহ করে রাসায়নিক ও ভৌত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেছে। প্রতি মৌসুমের তথ্য দিয়ে পানি-মান সূচক (WQI) নির্ধারণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থানেই পানির মান মানব ব্যবহারের উপযোগী সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

দূষণের মূল কারণ

শহর ও বাজার এলাকার অপ্রস্তুত নর্দমা ও ড্রেনেজ
কৃষিজ ক্ষেতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পৃষ্ঠ-প্রবাহ
নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় সরাসরি নদীতে বর্জ্য নিক্ষেপ
গৃহস্থালি বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রীর অনিয়ন্ত্রিত ফেলা

সুপারিশ: দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগ

গবেষকদলের প্রস্তাবনা অনুযায়ী—

বর্জ্য ফেলার স্থান নদী-তীর থেকে সরিয়ে নিতে হবে।

সরাসরি ময়লা ও নর্দমা নদীতে নিক্ষেপ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।

উন্নত বর্জ্যজল পরিশোধন ব্যবস্থা (প্রি-ট্রিটমেন্ট ও বায়োলজিক্যাল ফিল্টার) চালু করতে হবে।

পৌর ড্রেনেজ ও নর্দমা লাইনের কাঠামো সংস্কার ও প্রশস্ত করতে হবে।

আঞ্চলিক পর্যায়ে শক্তিশালী পানি-ব্যবস্থাপনা নীতি ও নিয়মিত মান-পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সচেতনতা ও সামাজিক অংশগ্রহণ

গবেষণা প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, শুধু নীতি গ্রহণ যথেষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করতে হবে এবং স্কুল পর্যায় থেকেই পরিবেশশিক্ষা জোরদার করতে হবে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রকাশ জনসচেতনতা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

বিশেষজ্ঞের মন্তব্য

ড. সিংহ বলেন, “এই গবেষণা ধনসিরি নদীসহ দেশের অন্যান্য অবহেলিত নদী পুনরুদ্ধারের টেকসই ভিত্তি তৈরি করতে পারে। বৈজ্ঞানিক তথ্য, জনসম্পৃক্ততা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি একত্রে বাস্তবায়ন করা গেলে নদীর জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনা ও মানুষের নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

দলের মতে, সুপারিশগুলো দ্রুত কার্যকর করা হলে ধনসিরির পানি-গুণমান পর্যায়ক্রমে উন্নত হবে এবং নদী-কেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিও রক্ষা পাবে। গবেষকরা আশা করেন, এই মডেল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য নদী পুনরুজ্জীবনেরও পথ দেখাবে।