০১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও লাভে এগিয়ে টয়োটা, ট্রাম্পের শুল্কের মাঝেও বিক্রিতে রেকর্ড মার্থা ওয়াশিংটন থেকে মেলানিয়া ট্রাম্প: যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিদের পোশাকে ইতিহাস, রাজনীতি ও শক্তির প্রতিচ্ছবি চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলির ঘটনায় কী জানা যাচ্ছে; দলগুলো কেন ক্যাডার রাখে? ট্রাম্প যখন যুদ্ধ শেষের দম্ভ দেখাচ্ছেন, চীন তখন নীরবে শান্তির পথে কাজ করছে অটিজম চিকিৎসার অপ্রতিষ্ঠিত পথে প্রতিটি পরিবার সাত দশক পর ব্রিটিশ মিউজিক্যালে নতুন জীবন পেল প্রিয় ভালুক সম্পর্কের উষ্ণতা ধরে রাখা উচিৎ, পারিবারিক সীমারেখা রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের জ্ঞান শৈশবের গভীর ক্ষত থেকে লেখা এক রন্ধনশিল্পীর আত্মস্বীকারোক্তি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪) ক্ষমতার নৃত্য: ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পে দানের আড়ালে ব্যবসায়িক স্বার্থের খেলা

পুরনো ঢাকার পাঁউরুটি-গন্ধে মোড়া সকাল: কুম্বস অ্যান্ড কো বেকারির গল্প [প্রথম পর্ব]

ঢাকা শহরের পুরনো অলিগলির মাঝে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, এবং প্রজন্মের স্বাদ স্মৃতি। আজকের এই ফিচার সিরিজের প্রথম পর্বে আমরা জানবো সেইসব পুরনো দিনের রুটি-কেক-বিস্কুটের আদি ঘাঁটি Coombs & Co. Bakery–র কথা। এ বেকারির গল্প একাধারে উপনিবেশিক ঢাকার স্মৃতি, ব্যবসায়িক উদ্ভাবনা ও শহরের রসনার চর্চাকে ছুঁয়ে যায়।

প্রতিষ্ঠার পটভূমি: ইংরেজদের শহরে ইউরোপীয় স্বাদের সন্ধান

১৮৫০-এর দশকে ঢাকায় ব্রিটিশ শাসনের সময় ‘বাঙালি বাবু’ ও সাহেবদের জীবনযাত্রায় এক ধরনের ইউরোপীয় রুচির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এ সময়ের শহর জুড়ে গড়ে উঠতে থাকে ক্লাব, চা ঘর, ও প্যাস্ট্রি দোকান। তেমনই এক সময় ইংরেজ ব্যবসায়ী হ্যারি কুম্বস ঢাকায় এসে স্থাপন করেন এই বেকারি—Coombs & Co.

সেই সময় ঢাকায় ‘ওভেনে বানানো’ রুটি বা কেক ছিল অভিজাতদের খাবার। সাধারণ মানুষ জানতো মাটির চুলায় বানানো রুটি বা মুড়ি-চিড়ার স্বাদ। হ্যারি কুম্বস এই ব্যবধান ঘোচানোর সাহসী উদ্যোগ নেন। পুরান ঢাকার লক্ষীবাজারে ছোট্ট একটি দোকান নিয়ে যাত্রা শুরু হয় কুম্বস অ্যান্ড কো. বেকারির।

ব্যবসার প্রসার: শুরুর শঙ্কা থেকে শহরের আস্থার নাম

শুরুর দিকে ব্যবসা ছিল সীমিত। প্রতিদিন সকালে তৈরি হতো মাত্র ২০-৩০টা ব্রেড, কিছু মাখন বিস্কুট আর ‘রাজ কেক’। কাস্টমার ছিলেন মূলত ইউরোপীয় সাহেব ও জজ-ব্যারিস্টাররা। তবে হ্যারি কুম্বস বাঙালিদের মধ্যে ধীরে ধীরে ইউরোপীয় বেকিং-এর স্বাদ ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন।

১৯০৫ সালের দিকে বেকারিটি যখন স্থানীয় কর্মী ও শিক্ষানবিশ বেকারদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে, তখন এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে। বিশেষত নবাবপুর, সূত্রাপুর, এবং আরমানিটোলার অনেক পরিবার সকালের নাশতার জন্য কুম্বস অ্যান্ড কো.-র রুটি কিনতেন।

ব্রিটিশ আমলের শেষে এবং পাকিস্তান পর্বে এসে বেকারিটির মালিকানা বদলায়। হ্যারি কুম্বসের ছেলে বিল কুম্বস ১৯৪৭-এ চলে যান ইংল্যান্ড। এরপর এটি চলে আসে একজন অ্যাংলো-বাঙালি ব্যবসায়ী মোজেস রোজার অধীনে।

ঐতিহাসিক পণ্য: কুম্বস স্পেশাল মিল্ক ব্রেড

যদিও কেক, ড্যানিশ পেস্ট্রি ও বিস্কুট সবই পাওয়া যেত এখানে, তবে Coombs Special Milk Bread ছিল এই বেকারির সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য। নরম, তুলতুলে ও হালকা মিষ্টি স্বাদের এই রুটি একসময় ঢাকায় সকালের ‘প্রেস্টিজ ব্রেকফাস্ট’-এর প্রতীক ছিল। যাদের বাড়িতে কুম্বসের দুধরুটি আসতো, তারা ছিলেন মধ্যবিত্ত সমাজে ‘প্রগতিশীল’ হিসেবে পরিচিত।

এছাড়াও, ‘ফ্রুট কেক’ ও ‘বাটার কুকিজ’-এর জন্যও বিখ্যাত ছিল বেকারিটি। বিশেষ করে বড়দিন ও ঈদের সময়ে অর্ডার নেওয়া হতো সপ্তাহ খানেক আগে থেকে। পুরান ঢাকার বহু পরিবার এখনও সেই স্মৃতি চারণ করে বলেন—“ঈদের সকালে কুম্বসের ফ্রুট কেক না হলে যেন উৎসবই পূর্ণ হতো না!”

ঐতিহ্যের ভার বহন: অটোমেশন নয়হাতে বানানো বেকিং

আজকের আধুনিক বেকারিগুলোর মতো Coombs & Co. কখনোই পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর হয়নি। এখানকার এক বড় গুণ ছিল তাদের হস্তনির্মিত পদ্ধতি। রুটি বানানোর ময়দা মাখা থেকে শুরু করে ব্রেড ঢালার ছাঁচ পর্যন্ত—সবই হতো হাতে।

১৯৭০-এর দশকে রাশেদ মঈন নামে একজন বেকারি কর্মী জানান—“একেকটা মিল্ক ব্রেড বানাতে ৩ ঘণ্টা লাগত। কিন্তু স্বাদ এমন ছিল, কেউ প্রথমবার খেয়ে ভুলতে পারত না।”

সেই হাতে বানানো ওভেন এখনো সংরক্ষিত আছে বেকারির পেছনের ঘরে। যদিও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি কার্যকর নয়, তবে প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বে এটি সংরক্ষণের দাবি উঠেছে বিভিন্ন গবেষকের পক্ষ থেকে।

পতনের শুরু: সুপার শপ সংস্কৃতির ধাক্কা

১৯৯০-এর পর থেকে ঢাকার বেকারি সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসে। উঠে আসে সুপার শপ, ফ্র্যাঞ্চাইজি বেকারি ও বিদেশি ব্র্যান্ড। এদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে Coombs & Co.। ২০০৫ সালে তাদের মূল দোকানটি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এখন কিছু প্রাক্তন কর্মী ও নস্টালজিক পরিবার উদ্যোগ নিয়েছেন এটি রিস্টোর করার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান বলেন—“কুম্বস অ্যান্ড কো. শুধু একটি বেকারি নয়, এটি ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত রসনাচর্চার নীরব সাক্ষ্য।”

ভবিষ্যৎ ভাবনা: যাদুঘর না রিস্টোরেশন?

বর্তমানে কুম্বস অ্যান্ড কো.-র ভবনটি প্রায় জীর্ণ। তবে পুরান ঢাকার কয়েকজন উদ্যোক্তা, স্থপতি ও খাদ্য ঐতিহ্য গবেষক মিলে একটি পরিকল্পনা করেছেন—‘Heritage Bakery Revival Project’, যেখানে কুম্বসকে আবার চালু করে ঐতিহ্যবাহী হস্তনির্মিত বেকিং-এর প্রদর্শনী কেন্দ্র করা হবে।

পুরাতন ওভেন, হ্যান্ড মিক্সার, রেসিপি বুক—সবই রয়েছে যথাস্থানে। শুধু দরকার যত্ন, গবেষণা ও পরিকল্পিত পুনরুজ্জীবন।

শেষ কথা

Coombs & Co. এখন শুধু পুরনো ধুলোমলিন একটি সাইনবোর্ড নয়, বরং এটি ঢাকার বহু মানুষের রুচির স্মৃতি। ইতিহাস ধরে রাখতে হলে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরেই তৈরি করতে হবে আমাদের খাবারের ঐতিহ্যচর্চা। একদিন হয়তো আবার মিল্ক ব্রেডের গন্ধে ভরে উঠবে লক্ষীবাজারের সেই ছোট্ট গলি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও লাভে এগিয়ে টয়োটা, ট্রাম্পের শুল্কের মাঝেও বিক্রিতে রেকর্ড

পুরনো ঢাকার পাঁউরুটি-গন্ধে মোড়া সকাল: কুম্বস অ্যান্ড কো বেকারির গল্প [প্রথম পর্ব]

০৬:০০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

ঢাকা শহরের পুরনো অলিগলির মাঝে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, এবং প্রজন্মের স্বাদ স্মৃতি। আজকের এই ফিচার সিরিজের প্রথম পর্বে আমরা জানবো সেইসব পুরনো দিনের রুটি-কেক-বিস্কুটের আদি ঘাঁটি Coombs & Co. Bakery–র কথা। এ বেকারির গল্প একাধারে উপনিবেশিক ঢাকার স্মৃতি, ব্যবসায়িক উদ্ভাবনা ও শহরের রসনার চর্চাকে ছুঁয়ে যায়।

প্রতিষ্ঠার পটভূমি: ইংরেজদের শহরে ইউরোপীয় স্বাদের সন্ধান

১৮৫০-এর দশকে ঢাকায় ব্রিটিশ শাসনের সময় ‘বাঙালি বাবু’ ও সাহেবদের জীবনযাত্রায় এক ধরনের ইউরোপীয় রুচির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এ সময়ের শহর জুড়ে গড়ে উঠতে থাকে ক্লাব, চা ঘর, ও প্যাস্ট্রি দোকান। তেমনই এক সময় ইংরেজ ব্যবসায়ী হ্যারি কুম্বস ঢাকায় এসে স্থাপন করেন এই বেকারি—Coombs & Co.

সেই সময় ঢাকায় ‘ওভেনে বানানো’ রুটি বা কেক ছিল অভিজাতদের খাবার। সাধারণ মানুষ জানতো মাটির চুলায় বানানো রুটি বা মুড়ি-চিড়ার স্বাদ। হ্যারি কুম্বস এই ব্যবধান ঘোচানোর সাহসী উদ্যোগ নেন। পুরান ঢাকার লক্ষীবাজারে ছোট্ট একটি দোকান নিয়ে যাত্রা শুরু হয় কুম্বস অ্যান্ড কো. বেকারির।

ব্যবসার প্রসার: শুরুর শঙ্কা থেকে শহরের আস্থার নাম

শুরুর দিকে ব্যবসা ছিল সীমিত। প্রতিদিন সকালে তৈরি হতো মাত্র ২০-৩০টা ব্রেড, কিছু মাখন বিস্কুট আর ‘রাজ কেক’। কাস্টমার ছিলেন মূলত ইউরোপীয় সাহেব ও জজ-ব্যারিস্টাররা। তবে হ্যারি কুম্বস বাঙালিদের মধ্যে ধীরে ধীরে ইউরোপীয় বেকিং-এর স্বাদ ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন।

১৯০৫ সালের দিকে বেকারিটি যখন স্থানীয় কর্মী ও শিক্ষানবিশ বেকারদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে, তখন এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে। বিশেষত নবাবপুর, সূত্রাপুর, এবং আরমানিটোলার অনেক পরিবার সকালের নাশতার জন্য কুম্বস অ্যান্ড কো.-র রুটি কিনতেন।

ব্রিটিশ আমলের শেষে এবং পাকিস্তান পর্বে এসে বেকারিটির মালিকানা বদলায়। হ্যারি কুম্বসের ছেলে বিল কুম্বস ১৯৪৭-এ চলে যান ইংল্যান্ড। এরপর এটি চলে আসে একজন অ্যাংলো-বাঙালি ব্যবসায়ী মোজেস রোজার অধীনে।

ঐতিহাসিক পণ্য: কুম্বস স্পেশাল মিল্ক ব্রেড

যদিও কেক, ড্যানিশ পেস্ট্রি ও বিস্কুট সবই পাওয়া যেত এখানে, তবে Coombs Special Milk Bread ছিল এই বেকারির সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য। নরম, তুলতুলে ও হালকা মিষ্টি স্বাদের এই রুটি একসময় ঢাকায় সকালের ‘প্রেস্টিজ ব্রেকফাস্ট’-এর প্রতীক ছিল। যাদের বাড়িতে কুম্বসের দুধরুটি আসতো, তারা ছিলেন মধ্যবিত্ত সমাজে ‘প্রগতিশীল’ হিসেবে পরিচিত।

এছাড়াও, ‘ফ্রুট কেক’ ও ‘বাটার কুকিজ’-এর জন্যও বিখ্যাত ছিল বেকারিটি। বিশেষ করে বড়দিন ও ঈদের সময়ে অর্ডার নেওয়া হতো সপ্তাহ খানেক আগে থেকে। পুরান ঢাকার বহু পরিবার এখনও সেই স্মৃতি চারণ করে বলেন—“ঈদের সকালে কুম্বসের ফ্রুট কেক না হলে যেন উৎসবই পূর্ণ হতো না!”

ঐতিহ্যের ভার বহন: অটোমেশন নয়হাতে বানানো বেকিং

আজকের আধুনিক বেকারিগুলোর মতো Coombs & Co. কখনোই পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর হয়নি। এখানকার এক বড় গুণ ছিল তাদের হস্তনির্মিত পদ্ধতি। রুটি বানানোর ময়দা মাখা থেকে শুরু করে ব্রেড ঢালার ছাঁচ পর্যন্ত—সবই হতো হাতে।

১৯৭০-এর দশকে রাশেদ মঈন নামে একজন বেকারি কর্মী জানান—“একেকটা মিল্ক ব্রেড বানাতে ৩ ঘণ্টা লাগত। কিন্তু স্বাদ এমন ছিল, কেউ প্রথমবার খেয়ে ভুলতে পারত না।”

সেই হাতে বানানো ওভেন এখনো সংরক্ষিত আছে বেকারির পেছনের ঘরে। যদিও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি কার্যকর নয়, তবে প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বে এটি সংরক্ষণের দাবি উঠেছে বিভিন্ন গবেষকের পক্ষ থেকে।

পতনের শুরু: সুপার শপ সংস্কৃতির ধাক্কা

১৯৯০-এর পর থেকে ঢাকার বেকারি সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসে। উঠে আসে সুপার শপ, ফ্র্যাঞ্চাইজি বেকারি ও বিদেশি ব্র্যান্ড। এদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে Coombs & Co.। ২০০৫ সালে তাদের মূল দোকানটি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এখন কিছু প্রাক্তন কর্মী ও নস্টালজিক পরিবার উদ্যোগ নিয়েছেন এটি রিস্টোর করার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান বলেন—“কুম্বস অ্যান্ড কো. শুধু একটি বেকারি নয়, এটি ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত রসনাচর্চার নীরব সাক্ষ্য।”

ভবিষ্যৎ ভাবনা: যাদুঘর না রিস্টোরেশন?

বর্তমানে কুম্বস অ্যান্ড কো.-র ভবনটি প্রায় জীর্ণ। তবে পুরান ঢাকার কয়েকজন উদ্যোক্তা, স্থপতি ও খাদ্য ঐতিহ্য গবেষক মিলে একটি পরিকল্পনা করেছেন—‘Heritage Bakery Revival Project’, যেখানে কুম্বসকে আবার চালু করে ঐতিহ্যবাহী হস্তনির্মিত বেকিং-এর প্রদর্শনী কেন্দ্র করা হবে।

পুরাতন ওভেন, হ্যান্ড মিক্সার, রেসিপি বুক—সবই রয়েছে যথাস্থানে। শুধু দরকার যত্ন, গবেষণা ও পরিকল্পিত পুনরুজ্জীবন।

শেষ কথা

Coombs & Co. এখন শুধু পুরনো ধুলোমলিন একটি সাইনবোর্ড নয়, বরং এটি ঢাকার বহু মানুষের রুচির স্মৃতি। ইতিহাস ধরে রাখতে হলে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরেই তৈরি করতে হবে আমাদের খাবারের ঐতিহ্যচর্চা। একদিন হয়তো আবার মিল্ক ব্রেডের গন্ধে ভরে উঠবে লক্ষীবাজারের সেই ছোট্ট গলি।