০৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
চিতা-বাঘের শেষ আলোঝলক ঢাকা শহরের বাস সেবা: আধুনিকায়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে

হিন্দি ভাষা নিয়ে ভারতজুড়ে সংঘাত

জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) ২০২০-এর তিন-ভাষা নীতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি পৃষ্ঠপোষকতা নতুন করে একাধিক রাজ্যের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। তামিলনাড়ু থেকে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব থেকে কেরালা—বহুভাষিক ভারত জুড়ে “হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া” নিয়ে উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর আদালতযুদ্ধ

মে মাসের শেষ দিকে তামিলনাড়ু সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়, অভিযোগ করে যে সমগ্ৰ শিক্ষা প্রকল্পের (সমগ্র শিখ্ষা) প্রায় ২,০০০ কোটি রুপির তহবিল রোধ করে রাজ্যকে এনইপি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে চাওয়া হচ্ছে। এর আগে ৯ মে এক আইনজীবীর আবেদনে তামিলনাড়ু, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গকে নীতি কার্যকর করতে নির্দেশনা চাইলে শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে জানায়—রাজ্য নীতি নির্ধারণ আদালতের এখতিয়ার নয়। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্টালিন এনইপি-কে “হিন্দি উপনিবেশবাদের হাতিয়ার” বলে কটাক্ষ করেছেন; উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্টালিন একে “ভাষাই নয়, জাতিসত্তার লড়াই” বলে অভিহিত করেন।

মহারাষ্ট্রে বাধা ও প্রতিবাদ

এপ্রিলের মাঝামাঝি মহারাষ্ট্র সরকার প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মারাঠি ও ইংরেজির সঙ্গে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিলে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব), সিপিএম, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনাসহ বিভিন্ন দল একসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানায়। প্রবল আপত্তির মুখে স্কুল শিক্ষা দপ্তর ২২ এপ্রিল আদেশ স্থগিত করে। স্থানীয় নির্বাচন সামনে রেখে ‘অ- মারাঠি ভাবমূর্তি’ নিয়ে চাপের মুখে বিজেপি-শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) জোট পিছিয়ে যায়। তবু রাজ্য মন্ত্রী প্রতাপ সারণাইক প্রকাশ্যে দাবি করেন, “মুম্বাইয়ের বাক্‌বিন্যাস এখন হিন্দিই।”

অন্যান্য রাজ্যের প্রতিক্রিয়া

  • পঞ্জাব—এক দশম শ্রেণি পাসের শর্ত হিসেবে পঞ্জাবিকে বাধ্যতামূলক করেছে; সিবিএসই-র দ্বিবার্ষিক বোর্ড পরীক্ষায় পঞ্জাবিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া নিয়েও আপত্তি তুলেছে।
  • তেলেঙ্গানা—সব স্কুলে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তেলুগু শেখা বাধ্যতামূলক করেছে।
  • পশ্চিমবঙ্গ—রাজ্য শিক্ষানীতি ২০২৩-এ এনইপি-র মতো সেমিস্টার পদ্ধতি, আন্তঃবিষয়ক পড়াশোনা, চার-বছরব্যাপী স্নাতক কোর্স চালু হলেও হিন্দি সংবেদনশীল বিষয় থেকেই গেছে।

পাঠ্যবই ও পাঠক্রম বিতর্ক

এনসিইআরটি ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের নাম বদলে ‘হানিসাকল’ ও ‘হানিকম্ব’-এর জায়গায় ‘পূর্বী’ করেছে, গণিত বইয়ের নতুন নাম ‘গণিত প্রকাশ’। কেরালা সরকার একে “সংঘবদ্ধ হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া” এবং “যোগাযোগহীন ইতিহাস পুনর্লিখন” বলে সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে সপ্তম শ্রেণির বইয়ে মুঘল ও দিল্লি সুলতানত অধ্যায় বাদ দেওয়া ও ‘কুম্ভ মেলা’, ‘পবিত্র ভূগোল’ ইত্যাদি সংযোজন নিয়ে। এনসিইআরটি দাবি করছে—নতুন নামগুলি ‘বাঁসুরি’, ‘মলহার’, ‘সরঙ্গি’, ‘খেয়াল’-এর মতো সর্বভারতীয় সুরযন্ত্র ও রাগের ওপর ভিত্তি করে এবং “আনন্দময় শিক্ষানীতি”কেই তুলে ধরে।

অভিবাসনজনসংখ্যা ও ভাষার রাজনীতি

হিন্দিভাষী দুর্বল রাজ্যগুলো থেকে অর্থনৈতিক অভিবাসন বাড়ছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মুম্বাইয়ে হিন্দিকে মাতৃভাষা বলা মানুষের সংখ্যা ২০০১-এর ২৬ লাখ থেকে ৩৬ লাখে বেড়েছে; বিপরীতে মারাঠিভাষীর সংখ্যা সামান্য কমেছে। গ্রাম-শহর মিলিয়ে হিন্দিভাষী শ্রমিকের উপস্থিতি বাড়ায় শিবসেনা ও এমএনএস-এর মতো আঞ্চলিক দল ‘স্থানীয় সংস্কৃতি সুরক্ষা’র কথা বলে হিন্দি বিরোধিতায় সোচ্চার।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

  • জি.এন. দেবী—জনগণনায় ৫২৮ মিলিয়ন ‘হিন্দি ভাষী’ রেকর্ড হলেও এর মধ্যে ভোজপুরি, ছত্তিশগড়ি, কুমায়ুনি প্রভৃতি ২০৬ মিলিয়ন মানুষকে গোনা হয়েছে। প্রকৃত মাতৃভাষা-হিন্দি মানুষ প্রায় ৩২০ মিলিয়ন, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। “৩০ শতাংশের ভাষা ৭০ শতাংশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্রসিদ্ধ নয়।”
  • মানু এস. পিল্লাই—“এক রাষ্ট্র, এক ভাষা-র ধ্যানধারণা পুরনো। বহুভাষিক বৈচিত্র্যই ভারতের স্বাভাবিক রূপ।”
  • আপূর্বানন্দ—“ষাটের দশকের তিন-ভাষা সূত্র ছিল আন্তঃরাজ্য সংহতির উদ্দেশ্যে; কিন্তু হিন্দি রাজ্যগুলো নিজেরা অন্য ভাষা শেখেনি, উল্টো অন্য রাজ্যগুলোকে হিন্দি শিখতে বাধ্য করছে।”

  • বিজেপি মুখপাত্র প্রেম শুক্লা—“তিন-ভাষা নীতি তো ষাটের দশক থেকেই আছে; এনইপি আসলে পঠন-পাঠনে আরও স্বাধীনতা দিয়েছে।”

সাংস্কৃতিক আধিপত্যের প্রশ্ন

এমএনএস নেতা অনিল শিদোরে মনে করেন, পাঠ্যক্রম, ব্যাংকিং লেনদেনের ভাষা, এমনকি সাইনবোর্ড—সবক্ষেত্রে হিন্দিকে বিশেষ জায়গা দিয়ে “সংঘের সফট-পাওয়ার কৌশল” বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয় নিয়ে পারস্পরিক সম্মান না থাকলে তা বৈচিত্র্যকে সংকুচিত করে।

ভারতীয় সংবিধানের মূলে রয়েছে ভাষা ও সংস্কৃতির বহুত্বের স্বীকৃতি। সমন্বয় রক্ষার বদলে যদি এক ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদের পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়, তবে সেটি কেবল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়—ভারতের ইতিহাস-সংস্কৃতির বহুবর্ণ রূপকেও চ্যালেঞ্জ করে। জি.এন. দেবীর ভাষায়, “ভারতের ভাবনা কখনও একমাত্রিক হতে পারে না; বহুত্ব ও বৈচিত্র্যই এর অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য।”

চিতা-বাঘের শেষ আলোঝলক

হিন্দি ভাষা নিয়ে ভারতজুড়ে সংঘাত

০৫:৩১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) ২০২০-এর তিন-ভাষা নীতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি পৃষ্ঠপোষকতা নতুন করে একাধিক রাজ্যের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। তামিলনাড়ু থেকে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব থেকে কেরালা—বহুভাষিক ভারত জুড়ে “হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া” নিয়ে উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর আদালতযুদ্ধ

মে মাসের শেষ দিকে তামিলনাড়ু সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়, অভিযোগ করে যে সমগ্ৰ শিক্ষা প্রকল্পের (সমগ্র শিখ্ষা) প্রায় ২,০০০ কোটি রুপির তহবিল রোধ করে রাজ্যকে এনইপি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে চাওয়া হচ্ছে। এর আগে ৯ মে এক আইনজীবীর আবেদনে তামিলনাড়ু, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গকে নীতি কার্যকর করতে নির্দেশনা চাইলে শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে জানায়—রাজ্য নীতি নির্ধারণ আদালতের এখতিয়ার নয়। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্টালিন এনইপি-কে “হিন্দি উপনিবেশবাদের হাতিয়ার” বলে কটাক্ষ করেছেন; উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্টালিন একে “ভাষাই নয়, জাতিসত্তার লড়াই” বলে অভিহিত করেন।

মহারাষ্ট্রে বাধা ও প্রতিবাদ

এপ্রিলের মাঝামাঝি মহারাষ্ট্র সরকার প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মারাঠি ও ইংরেজির সঙ্গে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিলে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব), সিপিএম, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনাসহ বিভিন্ন দল একসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানায়। প্রবল আপত্তির মুখে স্কুল শিক্ষা দপ্তর ২২ এপ্রিল আদেশ স্থগিত করে। স্থানীয় নির্বাচন সামনে রেখে ‘অ- মারাঠি ভাবমূর্তি’ নিয়ে চাপের মুখে বিজেপি-শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) জোট পিছিয়ে যায়। তবু রাজ্য মন্ত্রী প্রতাপ সারণাইক প্রকাশ্যে দাবি করেন, “মুম্বাইয়ের বাক্‌বিন্যাস এখন হিন্দিই।”

অন্যান্য রাজ্যের প্রতিক্রিয়া

  • পঞ্জাব—এক দশম শ্রেণি পাসের শর্ত হিসেবে পঞ্জাবিকে বাধ্যতামূলক করেছে; সিবিএসই-র দ্বিবার্ষিক বোর্ড পরীক্ষায় পঞ্জাবিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া নিয়েও আপত্তি তুলেছে।
  • তেলেঙ্গানা—সব স্কুলে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তেলুগু শেখা বাধ্যতামূলক করেছে।
  • পশ্চিমবঙ্গ—রাজ্য শিক্ষানীতি ২০২৩-এ এনইপি-র মতো সেমিস্টার পদ্ধতি, আন্তঃবিষয়ক পড়াশোনা, চার-বছরব্যাপী স্নাতক কোর্স চালু হলেও হিন্দি সংবেদনশীল বিষয় থেকেই গেছে।

পাঠ্যবই ও পাঠক্রম বিতর্ক

এনসিইআরটি ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের নাম বদলে ‘হানিসাকল’ ও ‘হানিকম্ব’-এর জায়গায় ‘পূর্বী’ করেছে, গণিত বইয়ের নতুন নাম ‘গণিত প্রকাশ’। কেরালা সরকার একে “সংঘবদ্ধ হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া” এবং “যোগাযোগহীন ইতিহাস পুনর্লিখন” বলে সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে সপ্তম শ্রেণির বইয়ে মুঘল ও দিল্লি সুলতানত অধ্যায় বাদ দেওয়া ও ‘কুম্ভ মেলা’, ‘পবিত্র ভূগোল’ ইত্যাদি সংযোজন নিয়ে। এনসিইআরটি দাবি করছে—নতুন নামগুলি ‘বাঁসুরি’, ‘মলহার’, ‘সরঙ্গি’, ‘খেয়াল’-এর মতো সর্বভারতীয় সুরযন্ত্র ও রাগের ওপর ভিত্তি করে এবং “আনন্দময় শিক্ষানীতি”কেই তুলে ধরে।

অভিবাসনজনসংখ্যা ও ভাষার রাজনীতি

হিন্দিভাষী দুর্বল রাজ্যগুলো থেকে অর্থনৈতিক অভিবাসন বাড়ছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মুম্বাইয়ে হিন্দিকে মাতৃভাষা বলা মানুষের সংখ্যা ২০০১-এর ২৬ লাখ থেকে ৩৬ লাখে বেড়েছে; বিপরীতে মারাঠিভাষীর সংখ্যা সামান্য কমেছে। গ্রাম-শহর মিলিয়ে হিন্দিভাষী শ্রমিকের উপস্থিতি বাড়ায় শিবসেনা ও এমএনএস-এর মতো আঞ্চলিক দল ‘স্থানীয় সংস্কৃতি সুরক্ষা’র কথা বলে হিন্দি বিরোধিতায় সোচ্চার।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

  • জি.এন. দেবী—জনগণনায় ৫২৮ মিলিয়ন ‘হিন্দি ভাষী’ রেকর্ড হলেও এর মধ্যে ভোজপুরি, ছত্তিশগড়ি, কুমায়ুনি প্রভৃতি ২০৬ মিলিয়ন মানুষকে গোনা হয়েছে। প্রকৃত মাতৃভাষা-হিন্দি মানুষ প্রায় ৩২০ মিলিয়ন, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। “৩০ শতাংশের ভাষা ৭০ শতাংশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্রসিদ্ধ নয়।”
  • মানু এস. পিল্লাই—“এক রাষ্ট্র, এক ভাষা-র ধ্যানধারণা পুরনো। বহুভাষিক বৈচিত্র্যই ভারতের স্বাভাবিক রূপ।”
  • আপূর্বানন্দ—“ষাটের দশকের তিন-ভাষা সূত্র ছিল আন্তঃরাজ্য সংহতির উদ্দেশ্যে; কিন্তু হিন্দি রাজ্যগুলো নিজেরা অন্য ভাষা শেখেনি, উল্টো অন্য রাজ্যগুলোকে হিন্দি শিখতে বাধ্য করছে।”

  • বিজেপি মুখপাত্র প্রেম শুক্লা—“তিন-ভাষা নীতি তো ষাটের দশক থেকেই আছে; এনইপি আসলে পঠন-পাঠনে আরও স্বাধীনতা দিয়েছে।”

সাংস্কৃতিক আধিপত্যের প্রশ্ন

এমএনএস নেতা অনিল শিদোরে মনে করেন, পাঠ্যক্রম, ব্যাংকিং লেনদেনের ভাষা, এমনকি সাইনবোর্ড—সবক্ষেত্রে হিন্দিকে বিশেষ জায়গা দিয়ে “সংঘের সফট-পাওয়ার কৌশল” বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয় নিয়ে পারস্পরিক সম্মান না থাকলে তা বৈচিত্র্যকে সংকুচিত করে।

ভারতীয় সংবিধানের মূলে রয়েছে ভাষা ও সংস্কৃতির বহুত্বের স্বীকৃতি। সমন্বয় রক্ষার বদলে যদি এক ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদের পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়, তবে সেটি কেবল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়—ভারতের ইতিহাস-সংস্কৃতির বহুবর্ণ রূপকেও চ্যালেঞ্জ করে। জি.এন. দেবীর ভাষায়, “ভারতের ভাবনা কখনও একমাত্রিক হতে পারে না; বহুত্ব ও বৈচিত্র্যই এর অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য।”