০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

তেলের দামের লাফে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ঝুঁকির মুখে

ইরান-ইসরায়েলের সামরিক উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর সরাসরি ধাক্কা পড়েছে বৈশ্বিক তেলের বাজারে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম একদিনে ১০ শতাংশ বেড়ে ৭৪ ডলারে পৌঁছেছে।

বিশ্ববাজারের এই পরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তেলের আমদানি নির্ভরতায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রাস্ফীতি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্পখাত ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চাপে পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে ১৯.৭ বিলিয়ন ডলারে। তেলের দাম বাড়লে আমদানি ব্যয় আরো বাড়বে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে ১২৫ টাকায় পৌঁছানোর আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

মুদ্রাস্ফীতির দিক থেকেও বড় চাপ তৈরি হতে পারে। বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি রয়েছে ১০ শতাংশের ওপরে। নতুন সংকটে তা ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়ে সরকারের ভর্তুকির বোঝা বাড়তে পারে। চলতি অর্থবছরে এই ভর্তুকি ৬০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং মুডি’স ইতোমধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছে। মুডি’স বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে এনে ‘নেগেটিভ আউটলুক’ দিয়েছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিচ্ছে, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

শিল্পখাত বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পরিবহন ও উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা কমে যাবে। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের কাছ থেকে অস্থায়ী কর-ছাড় ও পরিবহন খরচে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকট দীর্ঘায়িত হলে সরকারকে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে: মুদ্রানীতিকে কঠোর করা, তেলের আমদানিতে হেজিং পদ্ধতি চালু করা, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা বাড়ানো।

এই সংকট সরকারকে অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার দিকেও বাড়তি মনোযোগ দিতে বাধ্য করবে।

তেলের দামের লাফে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ঝুঁকির মুখে

০৫:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েলের সামরিক উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর সরাসরি ধাক্কা পড়েছে বৈশ্বিক তেলের বাজারে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম একদিনে ১০ শতাংশ বেড়ে ৭৪ ডলারে পৌঁছেছে।

বিশ্ববাজারের এই পরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তেলের আমদানি নির্ভরতায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রাস্ফীতি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্পখাত ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চাপে পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে ১৯.৭ বিলিয়ন ডলারে। তেলের দাম বাড়লে আমদানি ব্যয় আরো বাড়বে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে ১২৫ টাকায় পৌঁছানোর আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

মুদ্রাস্ফীতির দিক থেকেও বড় চাপ তৈরি হতে পারে। বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি রয়েছে ১০ শতাংশের ওপরে। নতুন সংকটে তা ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়ে সরকারের ভর্তুকির বোঝা বাড়তে পারে। চলতি অর্থবছরে এই ভর্তুকি ৬০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং মুডি’স ইতোমধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছে। মুডি’স বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে এনে ‘নেগেটিভ আউটলুক’ দিয়েছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিচ্ছে, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

শিল্পখাত বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পরিবহন ও উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা কমে যাবে। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের কাছ থেকে অস্থায়ী কর-ছাড় ও পরিবহন খরচে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকট দীর্ঘায়িত হলে সরকারকে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে: মুদ্রানীতিকে কঠোর করা, তেলের আমদানিতে হেজিং পদ্ধতি চালু করা, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা বাড়ানো।

এই সংকট সরকারকে অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার দিকেও বাড়তি মনোযোগ দিতে বাধ্য করবে।