০৩:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

কীভাবে রবী কুমার কগনিজ্যান্টকে এআই যুগের জন্য রূপান্তর করছেন

শৈশবের সংগ্রাম থেকে নেতৃত্বের চূড়ায়

ভারতে বেড়ে ওঠা রবী কুমার নিজের সম্পর্কে বলেন, “আমি স্কুলে ভালো করিনি। ক্লাসের একদম নিচে ছিলাম। সাধারণত যারা নিচে থাকে তারা খেলাধুলা বা শিল্পকলায় ভালো হয়। কিন্তু আমি কিছুতেই ভালো ছিলাম না।”

এই পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকা সেই কিশোর পরে শিবাজি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সাফল্য অর্জন করেন। পরে ভারতের বিখ্যাত ভাভা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টারে (বার্ক) চাকরি পান। সেখানে আইআইটি থেকে আসা মেধাবীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নিজের সামর্থ্য উপলব্ধি করেন। এখন তিনি ৩৬ বিলিয়ন ডলারের বিশ্ব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কগনিজ্যান্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), যেখানে প্রায় ৩.৫ লাখ কর্মী কাজ করছে।

চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা কগনিজ্যান্টের হাল ধরলেন

১৯৯৪ সালে ডান অ্যান্ড ব্র্যাডস্ট্রিটের অধীনস্থ একটি প্রযুক্তি ইউনিট হিসেবে কগনিজ্যান্ট যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ভারত থেকে দক্ষ প্রযুক্তি শ্রমিক সরবরাহ করে পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর আউটসোর্সিং চাহিদা পূরণ করে আইটি সেবার জায়ান্টে পরিণত হয়। কিন্তু মহামারির পরে শেয়ারমূল্য প্রায় ৪০% পড়ে যায়। তখন এআই-এর উত্থান বহু পুরনো ব্যবসায়িক মডেলকে হুমকির মুখে ফেলে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সিইও হিসেবে যোগ দিয়ে রবী কুমার কেবল কোম্পানির স্থিতিশীলতাই ফিরিয়ে আনেননি, বরং ১ বিলিয়ন ডলার এআই বিনিয়োগে বরাদ্দ করেন। যা অনেকের চোখে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। তবে কুমারের বিশ্বাস ছিল— এআই দ্রুত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়া দখল করবে।

সায়েন্স থেকে প্রযুক্তি জগতে পদার্পণ

বেশিরভাগ ভারতীয় প্রযুক্তি নেতাদের মতো কুমার আইআইটি বা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি। তিনি বার্কে নিউক্লিয়ার সায়েন্সে কাজ করে সিদ্ধান্ত নেন প্রযুক্তি জগতে আসার। পরে এমবিএ করেন এবং ইনফোসিসে ২০ বছর কাজ করে প্রেসিডেন্ট পদে উন্নীত হন।

কুমার বলেন, “সায়েন্স ধীর ও পদ্ধতিগত ছিল, কিন্তু প্রযুক্তির গতি অনেক দ্রুত। আমি উচ্চগতির জগতে কাজ করতে চেয়েছিলাম।”

সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিজস্ব মডেল: গাটডেটাগাট

কুমার তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে বলেন “গাট, ডেটা, গাট” অর্থাৎ অন্তর্দৃষ্টি, তথ্য ও অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। তিনি মনে করেন, “আপনার কাছে যখন ৪০% তথ্য থাকবে, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করা উচিত। যখন ৭০% তথ্য পেয়ে যাবেন, তখন আর দেরি করা যাবে না।”

ইনফোসিসের সাবেক সহকর্মী শ্রীনিবাস কামাদি বলেন, “তিনি সব সময় নিজের ধারণাকে যাচাই করেন। কোনো বিষয়ে জনপ্রিয়তা বা সম্মতির চেয়ে বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দেন।”

কগনিজ্যান্টে এআই-এর ওপর সাহসী বাজি

কগনিজ্যান্টে কুমারের এআই বিনিয়োগ তার এই দৃষ্টিভঙ্গির বড় উদাহরণ। মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও গুগলের সঙ্গে প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফল তাকে আশ্বস্ত করেছিল। আজ কোম্পানির ২০% কোড এআই দ্বারা তৈরি হচ্ছে।

ভারতে তৈরি নেতৃত্বের দক্ষতা

ভারতের বিশৃঙ্খল পরিবেশেই লালিতপালিত হয়ে কুমার নেতৃত্বের জটিলতা সামলানোর দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি মজা করে বলেন, “ভারতে গাড়ি চালালে পৃথিবীর যে কোনো দেশে চালাতে পারবেন।” ভারতে ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ১,৭২,০০০ মানুষ মারা গেছে।

কমান্ড-কন্ট্রোল থেকে নেটওয়ার্ক নেতৃত্বে রূপান্তর

ডিজিটাল যুগে প্রতিষ্ঠানের কাঠামো পরিবর্তনের প্রসঙ্গে কুমার বলেন, “আগে উল্লম্ব কাঠামো ছিল, এখন নেটওয়ার্ক কাঠামোয় রূপান্তর হয়েছে। এখন নেতৃত্ব মানে শুধু নির্দেশ নয়, বরং সবাইকে বিশ্বাস করানো যে কিছু আসছে যা তারা এখনও দেখেনি।”

ইনফোসিসে তার সাবেক সহকর্মী শ্রীনিবাস উদাথা বলেন, “তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝাতে পারেন। সিইওকে ব্যবসায়িক সুবিধা বোঝান, আর সিএফওকে আর্থিক সুফল তুলে ধরেন।”

উদ্ভাবনের জন্য ব্লুবল্ট উদ্যোগ

কগনিজ্যান্টে কুমার ‘ব্লুবল্ট’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছেন যাতে সবাই উদ্ভাবনে অংশ নিতে পারে। ইতোমধ্যে ৩ লাখের বেশি আইডিয়া জমা পড়েছে। ছোট ছোট আইডিয়াগুলো থেকে বড় আইডিয়া খোঁজা হচ্ছে।

এআই যুগে ব্যবসার নতুন সংজ্ঞা

কগনিজ্যান্টের জন্মের সময় গ্লোবাল ব্যবসায় প্রযুক্তির চাহিদা তৈরি হচ্ছিল। কোম্পানিগুলো তাদের মূল কাজ ছাড়া বাকি কাজ আউটসোর্স করত। কিন্তু এআই এলে চিত্র বদলাচ্ছে। কুমার বলেন, “প্রতিটি শিল্পই এখন প্রযুক্তি শিল্পে রূপ নিচ্ছে। সফটওয়্যার প্রতিটি ব্যবসার রসায়ন।”

এআই তিনভাবে কাজ করছে:

১. কোড লেখা দ্রুত করা।
২. কোম্পানির কর্মপ্রবাহে এআই একীভূত করা।
৩. নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করা।

মেডিক্যাল ডিভাইস কোম্পানির এক গ্রাহকের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “যেখানে সিনিয়ররা ডিভাইস ব্যবহার করতে হিমশিম খায়, সেখানে আমরা ডিজিটাল নার্স তৈরি করেছি যা তাদের স্ব-সেবায় সহায়তা করবে।”

বিমা খাতেও বদল

কগনিজ্যান্ট আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সূর্য গুম্মাদি বলেন, “যেখানে আগে বিমা খাতের আন্ডাররাইটিং ছিল পুরোপুরি মানুষের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এখন এআই সেই প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ সামলাচ্ছে।”

নেতৃত্বে মানবিকতা

কুমার নেতৃত্বের মানবিক দিককে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমি নিজে দুর্বলতা স্বীকার করি, যাতে অন্যরাও নিশ্চিন্তে নিজেদের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করতে পারে।” এর ফলে কর্মীরা সাহস করে শিখতে পারে এবং নিজেকে উন্নত করতে পারে।

মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুনের কথায়, “প্রিন্টিং প্রেসের মতো এআই সমাজকে বদলে দেবে। তবে এটি মানুষের বুদ্ধিমত্তা বাড়াবে, বদলে দেবে না।”

Finding Opportunity in Uncertainty: How Ravi Kumar Is Transforming Cognizant  for the AI Era - Newsweek

শেখার প্রতি ক্ষুধা অব্যাহত

রবী কুমার এখনও শেখার প্রতি প্রবল আগ্রহী। একবার ভারতে একটি স্কুলে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। পরদিন নিজে থেকে আরও স্কুলে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেন।

কুমার বলেন, “আমি সবসময় শেখার প্রতি লালায়িত। আমি স্কুলে কেমন করেছিলাম তা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না।”

অনিশ্চয়তাকে সুযোগে রূপান্তর

একটি বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে গিয়ে রবী কুমার দেখিয়েছেন কিভাবে অনিশ্চয়তা থেকেও সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। এআই যুগে তিনি কগনিজ্যান্টকে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।

কীভাবে রবী কুমার কগনিজ্যান্টকে এআই যুগের জন্য রূপান্তর করছেন

১২:৪১:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

শৈশবের সংগ্রাম থেকে নেতৃত্বের চূড়ায়

ভারতে বেড়ে ওঠা রবী কুমার নিজের সম্পর্কে বলেন, “আমি স্কুলে ভালো করিনি। ক্লাসের একদম নিচে ছিলাম। সাধারণত যারা নিচে থাকে তারা খেলাধুলা বা শিল্পকলায় ভালো হয়। কিন্তু আমি কিছুতেই ভালো ছিলাম না।”

এই পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকা সেই কিশোর পরে শিবাজি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সাফল্য অর্জন করেন। পরে ভারতের বিখ্যাত ভাভা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টারে (বার্ক) চাকরি পান। সেখানে আইআইটি থেকে আসা মেধাবীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নিজের সামর্থ্য উপলব্ধি করেন। এখন তিনি ৩৬ বিলিয়ন ডলারের বিশ্ব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কগনিজ্যান্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), যেখানে প্রায় ৩.৫ লাখ কর্মী কাজ করছে।

চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা কগনিজ্যান্টের হাল ধরলেন

১৯৯৪ সালে ডান অ্যান্ড ব্র্যাডস্ট্রিটের অধীনস্থ একটি প্রযুক্তি ইউনিট হিসেবে কগনিজ্যান্ট যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ভারত থেকে দক্ষ প্রযুক্তি শ্রমিক সরবরাহ করে পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর আউটসোর্সিং চাহিদা পূরণ করে আইটি সেবার জায়ান্টে পরিণত হয়। কিন্তু মহামারির পরে শেয়ারমূল্য প্রায় ৪০% পড়ে যায়। তখন এআই-এর উত্থান বহু পুরনো ব্যবসায়িক মডেলকে হুমকির মুখে ফেলে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সিইও হিসেবে যোগ দিয়ে রবী কুমার কেবল কোম্পানির স্থিতিশীলতাই ফিরিয়ে আনেননি, বরং ১ বিলিয়ন ডলার এআই বিনিয়োগে বরাদ্দ করেন। যা অনেকের চোখে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। তবে কুমারের বিশ্বাস ছিল— এআই দ্রুত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়া দখল করবে।

সায়েন্স থেকে প্রযুক্তি জগতে পদার্পণ

বেশিরভাগ ভারতীয় প্রযুক্তি নেতাদের মতো কুমার আইআইটি বা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি। তিনি বার্কে নিউক্লিয়ার সায়েন্সে কাজ করে সিদ্ধান্ত নেন প্রযুক্তি জগতে আসার। পরে এমবিএ করেন এবং ইনফোসিসে ২০ বছর কাজ করে প্রেসিডেন্ট পদে উন্নীত হন।

কুমার বলেন, “সায়েন্স ধীর ও পদ্ধতিগত ছিল, কিন্তু প্রযুক্তির গতি অনেক দ্রুত। আমি উচ্চগতির জগতে কাজ করতে চেয়েছিলাম।”

সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিজস্ব মডেল: গাটডেটাগাট

কুমার তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে বলেন “গাট, ডেটা, গাট” অর্থাৎ অন্তর্দৃষ্টি, তথ্য ও অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। তিনি মনে করেন, “আপনার কাছে যখন ৪০% তথ্য থাকবে, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করা উচিত। যখন ৭০% তথ্য পেয়ে যাবেন, তখন আর দেরি করা যাবে না।”

ইনফোসিসের সাবেক সহকর্মী শ্রীনিবাস কামাদি বলেন, “তিনি সব সময় নিজের ধারণাকে যাচাই করেন। কোনো বিষয়ে জনপ্রিয়তা বা সম্মতির চেয়ে বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দেন।”

কগনিজ্যান্টে এআই-এর ওপর সাহসী বাজি

কগনিজ্যান্টে কুমারের এআই বিনিয়োগ তার এই দৃষ্টিভঙ্গির বড় উদাহরণ। মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও গুগলের সঙ্গে প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফল তাকে আশ্বস্ত করেছিল। আজ কোম্পানির ২০% কোড এআই দ্বারা তৈরি হচ্ছে।

ভারতে তৈরি নেতৃত্বের দক্ষতা

ভারতের বিশৃঙ্খল পরিবেশেই লালিতপালিত হয়ে কুমার নেতৃত্বের জটিলতা সামলানোর দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি মজা করে বলেন, “ভারতে গাড়ি চালালে পৃথিবীর যে কোনো দেশে চালাতে পারবেন।” ভারতে ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ১,৭২,০০০ মানুষ মারা গেছে।

কমান্ড-কন্ট্রোল থেকে নেটওয়ার্ক নেতৃত্বে রূপান্তর

ডিজিটাল যুগে প্রতিষ্ঠানের কাঠামো পরিবর্তনের প্রসঙ্গে কুমার বলেন, “আগে উল্লম্ব কাঠামো ছিল, এখন নেটওয়ার্ক কাঠামোয় রূপান্তর হয়েছে। এখন নেতৃত্ব মানে শুধু নির্দেশ নয়, বরং সবাইকে বিশ্বাস করানো যে কিছু আসছে যা তারা এখনও দেখেনি।”

ইনফোসিসে তার সাবেক সহকর্মী শ্রীনিবাস উদাথা বলেন, “তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝাতে পারেন। সিইওকে ব্যবসায়িক সুবিধা বোঝান, আর সিএফওকে আর্থিক সুফল তুলে ধরেন।”

উদ্ভাবনের জন্য ব্লুবল্ট উদ্যোগ

কগনিজ্যান্টে কুমার ‘ব্লুবল্ট’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছেন যাতে সবাই উদ্ভাবনে অংশ নিতে পারে। ইতোমধ্যে ৩ লাখের বেশি আইডিয়া জমা পড়েছে। ছোট ছোট আইডিয়াগুলো থেকে বড় আইডিয়া খোঁজা হচ্ছে।

এআই যুগে ব্যবসার নতুন সংজ্ঞা

কগনিজ্যান্টের জন্মের সময় গ্লোবাল ব্যবসায় প্রযুক্তির চাহিদা তৈরি হচ্ছিল। কোম্পানিগুলো তাদের মূল কাজ ছাড়া বাকি কাজ আউটসোর্স করত। কিন্তু এআই এলে চিত্র বদলাচ্ছে। কুমার বলেন, “প্রতিটি শিল্পই এখন প্রযুক্তি শিল্পে রূপ নিচ্ছে। সফটওয়্যার প্রতিটি ব্যবসার রসায়ন।”

এআই তিনভাবে কাজ করছে:

১. কোড লেখা দ্রুত করা।
২. কোম্পানির কর্মপ্রবাহে এআই একীভূত করা।
৩. নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করা।

মেডিক্যাল ডিভাইস কোম্পানির এক গ্রাহকের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “যেখানে সিনিয়ররা ডিভাইস ব্যবহার করতে হিমশিম খায়, সেখানে আমরা ডিজিটাল নার্স তৈরি করেছি যা তাদের স্ব-সেবায় সহায়তা করবে।”

বিমা খাতেও বদল

কগনিজ্যান্ট আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সূর্য গুম্মাদি বলেন, “যেখানে আগে বিমা খাতের আন্ডাররাইটিং ছিল পুরোপুরি মানুষের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এখন এআই সেই প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ সামলাচ্ছে।”

নেতৃত্বে মানবিকতা

কুমার নেতৃত্বের মানবিক দিককে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমি নিজে দুর্বলতা স্বীকার করি, যাতে অন্যরাও নিশ্চিন্তে নিজেদের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করতে পারে।” এর ফলে কর্মীরা সাহস করে শিখতে পারে এবং নিজেকে উন্নত করতে পারে।

মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুনের কথায়, “প্রিন্টিং প্রেসের মতো এআই সমাজকে বদলে দেবে। তবে এটি মানুষের বুদ্ধিমত্তা বাড়াবে, বদলে দেবে না।”

Finding Opportunity in Uncertainty: How Ravi Kumar Is Transforming Cognizant  for the AI Era - Newsweek

শেখার প্রতি ক্ষুধা অব্যাহত

রবী কুমার এখনও শেখার প্রতি প্রবল আগ্রহী। একবার ভারতে একটি স্কুলে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। পরদিন নিজে থেকে আরও স্কুলে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেন।

কুমার বলেন, “আমি সবসময় শেখার প্রতি লালায়িত। আমি স্কুলে কেমন করেছিলাম তা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না।”

অনিশ্চয়তাকে সুযোগে রূপান্তর

একটি বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে গিয়ে রবী কুমার দেখিয়েছেন কিভাবে অনিশ্চয়তা থেকেও সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। এআই যুগে তিনি কগনিজ্যান্টকে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।