জোনাকি
বুলুরা কি কামরানের সঙ্গেই বেরিয়েছে? ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে পড়লেন আবুল হোসেন। শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করেই ফেললেন মরিয়মকে।
মরিয়ম বললে, ‘এতো উতলা হবার কি আছে।’
‘এটা কোনো উত্তর হলো?’
‘বেড়াতে গেছে বুলু। নাগা আছে ওর সঙ্গে-‘
‘তাই ব’লে সময়-অসময় নেই। একটা মেয়েকে কেউ এমন ছাড়াগরু করে রাখে? নাগাটা তো একটা রাঙ্কেল, কোন্ ভরসায় তুমি ওর সঙ্গে বাইরে পাঠালে, ভয়ডর নেই, সময়টা কি যাচ্ছে ভেবে দেখবে না।’
মরিয়ম বললে, ‘তোমার লেকচার শুনতে শুনতে কান পচে গেছে আমার। চিরকাল চেয়েছো আমাকে বস্তাবন্দি করে রাখতে। গোবরগাদায় পড়ে জীবনভর শুধু দাঁত সিঁটকানি দেখে গেলাম। পারলে নখে তুলে উকুনমারা করো। আর কতোদিন নাকে দড়ি দিয়ে ওদের বেঁধে রাখবে? খুঁটে খেতে শেখার বয়েস হয়নি ওদের? নিজের যোগ্যতার কথা ভেবে দ্যাখো না কেন, লজ্জা হয় না তোমার?’
আবুল হোসেন নিজের অগোচরে সংযম হারিয়ে ফেললেন। স্নায়বিক উত্তেজনার প্রবল আলোড়নে বেসামাল হয়ে বললেন, ‘আস্কারা দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছ তুমি ওদের, লোভী ক’রে তুলেছ ছেলেমেয়েকে-‘
মরিয়ম রুখে উঠে বললে, ‘তার মানে? কি বলতে চাও কি তুমি?’
‘যা বলতে চাই তুমি তা ভালো ক’রেই বোঝো, কচিখুকির মতো ন্যাকামি কোরো না-‘
মরিয়ম বললে, ‘মুখ সামলে কথা বলবে, ভালো হবে না কিন্তু! তোমার গুষ্টি উদ্ধার ক’রে ছেড়ে দেব। ঢের সহ্য করেছি আর নয়। তোমার বাপ-দাদার পুণ্যি যে আমার মতো মেয়েমানুষ এই বজবজে আঁস্তাকুড়ে জীবনভর হাড়মাংস কালি করে গেল-‘
‘সে তো বটেই-‘