বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ফেসবুক গ্রুপ হঠাৎ করেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে—এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানানো হয়নি। ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সাম্প্রতিক গণব্যানের পর, এবার অভিযোগ উঠেছে যে শিশু পালনের পরামর্শ, গেমিং, পোষা প্রাণী কিংবা কী-বোর্ড নিয়ে আলোচনা করা মত নিরীহ বিষয়বস্তুর গ্রুপগুলোও মুছে ফেলা হয়েছে।
অস্বচ্ছ ‘নিষেধাজ্ঞার কারণ’ নিয়ে উদ্বেগ
গ্রুপ অ্যাডমিনরা জানিয়েছেন, তারা এমন অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন যার মধ্যে “সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত” বা “অশ্লীলতা”র মতো অসংগত বিষয় ছিল—যা তারা পরিষ্কারভাবে অস্বীকার করেছেন। লক্ষাধিক সদস্যবিশিষ্ট অনেক বড় বড় গ্রুপ যেমন—একটি পারিবারিক পরিবেশের পোকেমন গ্রুপকে “বিপজ্জনক সংগঠন” বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, আবার একটি পাখির ছবি তোলার গ্রুপকে ভুল করে অশ্লীল কনটেন্ট ছড়ানোর অভিযোগে ব্যান করা হয়েছে।
মেটার প্রতিক্রিয়া, তবে অসন্তুষ্ট ব্যবহারকারীরা
মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন জানিয়েছেন, এটি একটি কারিগরি ত্রুটির ফলাফল। “আমরা বিষয়টি ঠিক করছি,” তিনি টেকক্রাঞ্চকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। অনেক অ্যাডমিন—বিশেষ করে যারা ‘মেটা ভেরিফায়েড’ সাবস্ক্রিপশন নেননি—তারা কোনো সহায়তাই পাননি।
অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও একই ধাঁচের ভুল
এটি কোনো একক ঘটনা নয়। পিন্টারেস্ট ও টাম্বলারেও সাম্প্রতিক সময়ে একই ধরনের কনটেন্ট মডারেশনের ভুল ঘটেছে। পিন্টারেস্ট জানিয়েছে, এটি একটি অভ্যন্তরীণ ত্রুটির ফল ছিল, যদিও তারা এআই ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে। টাম্বলার দাবি করেছে, এটি তাদের নতুন ফিল্টারিং সিস্টেম পরীক্ষার কারণে হয়েছে। ব্যবহারকারীরা মনে করছেন, এসব প্ল্যাটফর্মেই ত্রুটিপূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবস্থাই মূল সমস্যা।
প্রতিবাদ, আবেদন ও আইনি পদক্ষেপ শুরু
মেটার কাছে এই সমস্যা সমাধানের দাবিতে ইতোমধ্যে ১২ হাজারেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা একটি অনলাইন পিটিশন চালু হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী—বিশেষ করে যাদের পেশা বা ব্যবসা এসব গ্রুপের উপর নির্ভরশীল—তারা এখন আইনি পথ খুঁজছেন।
এই মুহূর্তে, মেটা এখনো পরিষ্কারভাবে জানায়নি যে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও গ্রুপ ব্যানে কী প্রযুক্তিগত ত্রুটি কাজ করছে—যার ফলে একের পর এক অনলাইন কমিউনিটি স্থগিত হয়ে যাচ্ছে।