০২:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা পাকিস্তানে সীমাহীন শ্রমিক শোষণ আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাসাদে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক: ক্লিওপেট্রা ও সিজারের কথোপকথন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯) বাংলাদেশে ইভ টিজিং- নারী মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতার সংকট এপি’র প্রতিবেদন: হাসিনা-বিরোধী বিদ্রোহের পরিণতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ মধুমতী নদী: দক্ষিনের যোগাযোগ পথ মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল ধ্বংস করা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর চিরসবুজ নায়িকা মৌসুমী: রূপালী পর্দার এক যুগের প্রতীক কাপ্তাই লেকের মাছের বৈচিত্র্য ও মাছ ধরার রীতি – পার্বত্য চট্টগ্রামের জলে জীবনের গল্প

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪০)

তারা ভিক্ষু আর প্রকৃত ধর্মের আদর জানে না। সেই জন্যেই বুদ্ধ সেখানে জন্মগ্রহণ করেন নি। তাদের মন সংকীর্ণ, আচরণ অশিষ্ট, অসংস্কৃত। সেইজন্যই ভারতের সাধু জ্ঞানীরা সেখানে যান নি।

হিউএনচাঙ উত্তর দিলেন, ‘বুদ্ধ চেয়েছিলেন যে, সব দেশেই তাঁর উপদেশ প্রচারিত হয়। তাঁর উপদেশে নিজে পরিতৃপ্ত হয়ে, অন্যকে পিপাসার বারি দিতে যারা পরাম্মুখ তারা কেমন লোক?’ তার পর তিনি স্বদেশের পক্ষ সমর্থন করলেন, ‘আমাদের দেশের বিচারকরা ন্যায়পরায়ণ আর অধিবাসীরা আইন মান্য করে। রাজা ধর্মনিষ্ঠ, প্রজারা রাজভক্ত, পিতারা স্নেহশীল, পুত্রেরা বাধ্য।

আমাদের দেশে দয়া ও ন্যায়পরায়ণতার সম্মান আছে, বৃদ্ধ ও জ্ঞানীদের সম্মান আছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের জ্ঞানও গভীর। তাঁরা আকাশের সপ্তগ্রহের গতি নিরূপণ করতে পারেন। নানাযন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, ছয়টি সুরের প্রভেদ জানেন,’ ইত্যাদি। তার পর বৌদ্ধধর্মের প্রসারের কথা বললেন, ‘বৌদ্ধধর্ম চীনদেশে প্রবেশ করার পর থেকে লোকে মহাযানকে ভক্তি করে, তারা ধর্ষকার্যে রত আর পুণ্যকর্ম দ্বারা দশবিধপূর্ণতা প্রাপ্তির জন্যে সর্বদা উৎসুক।

আপনারা কী করে বলছেন যে, বুদ্ধ সে দেশে জন্মান নি বলে এমন দেশ তুচ্ছ?’ অবশেষে বললেন, ‘সূর্য পৃথিবীর চার-দিকে ঘোরে কেন? অন্ধকার দূর করার জন্যেই তো? ঠিক এই জন্যেই আমি স্বদেশে ফিরবার ইচ্ছা করি।’

ভিক্ষুরা তখন হিউএনচাঙকে শীলভদ্রের কাছে নিয়ে গেলেন। শীলভদ্র জিজ্ঞাসা করলেন, কেন আপনি দেশে ফিরতে চাচ্ছেন? ধর্মগুরু জবাব দিলেন, বুদ্ধের জন্মভূমি এই দেশকে প্রীতির চোখে না দেখা অসম্ভব। কিন্তু আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত মানবের হিতার্থে তাঁর মহাধর্ম শিক্ষা করা। আমি এখানে আসার পর, আপনি মহাশয়, অনুগ্রহ করে আমাকে যোগাচার্যভূমিশাস্ত্র শিক্ষা দিয়েছেন। আমি আপনাদের নানাতীর্থ স্থান দর্শন করেছি, নানা সম্প্রদায়ের শাস্ত্র আলোচনা শুনেছি। এতে আমার যৎপরোনাস্তি আনন্দ হয়েছে। এখন আমি চাই যে, স্বদেশে ফিরে গিয়ে অন্যদেরও এইসব কথা বুঝাই, তাতে আমি ছাড়া অন্যরাও আপনার কাছে কৃতজ্ঞ হতে, পারবে। এইজন্যেই আমি ফিরতে বিলম্ব করতে চাই না।

শীলভদ্র আনন্দে বললেন, ‘এ যা আপনি চিন্তা করেছেন, তা বোধিসত্ত্বেরই উপযুক্ত। আমার হৃদয়ও আপনার ইচ্ছাই সমর্থন করছে।

আমি আপনার যাবার বন্দোবস্ত করে দেব। আর বন্ধুরা! একে আর বাধা দেবেন না।’

এই বলে তিনি তাঁর ঘরে ফিরে গেলেন।

(চলবে)

শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪০)

০৯:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

তারা ভিক্ষু আর প্রকৃত ধর্মের আদর জানে না। সেই জন্যেই বুদ্ধ সেখানে জন্মগ্রহণ করেন নি। তাদের মন সংকীর্ণ, আচরণ অশিষ্ট, অসংস্কৃত। সেইজন্যই ভারতের সাধু জ্ঞানীরা সেখানে যান নি।

হিউএনচাঙ উত্তর দিলেন, ‘বুদ্ধ চেয়েছিলেন যে, সব দেশেই তাঁর উপদেশ প্রচারিত হয়। তাঁর উপদেশে নিজে পরিতৃপ্ত হয়ে, অন্যকে পিপাসার বারি দিতে যারা পরাম্মুখ তারা কেমন লোক?’ তার পর তিনি স্বদেশের পক্ষ সমর্থন করলেন, ‘আমাদের দেশের বিচারকরা ন্যায়পরায়ণ আর অধিবাসীরা আইন মান্য করে। রাজা ধর্মনিষ্ঠ, প্রজারা রাজভক্ত, পিতারা স্নেহশীল, পুত্রেরা বাধ্য।

আমাদের দেশে দয়া ও ন্যায়পরায়ণতার সম্মান আছে, বৃদ্ধ ও জ্ঞানীদের সম্মান আছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের জ্ঞানও গভীর। তাঁরা আকাশের সপ্তগ্রহের গতি নিরূপণ করতে পারেন। নানাযন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, ছয়টি সুরের প্রভেদ জানেন,’ ইত্যাদি। তার পর বৌদ্ধধর্মের প্রসারের কথা বললেন, ‘বৌদ্ধধর্ম চীনদেশে প্রবেশ করার পর থেকে লোকে মহাযানকে ভক্তি করে, তারা ধর্ষকার্যে রত আর পুণ্যকর্ম দ্বারা দশবিধপূর্ণতা প্রাপ্তির জন্যে সর্বদা উৎসুক।

আপনারা কী করে বলছেন যে, বুদ্ধ সে দেশে জন্মান নি বলে এমন দেশ তুচ্ছ?’ অবশেষে বললেন, ‘সূর্য পৃথিবীর চার-দিকে ঘোরে কেন? অন্ধকার দূর করার জন্যেই তো? ঠিক এই জন্যেই আমি স্বদেশে ফিরবার ইচ্ছা করি।’

ভিক্ষুরা তখন হিউএনচাঙকে শীলভদ্রের কাছে নিয়ে গেলেন। শীলভদ্র জিজ্ঞাসা করলেন, কেন আপনি দেশে ফিরতে চাচ্ছেন? ধর্মগুরু জবাব দিলেন, বুদ্ধের জন্মভূমি এই দেশকে প্রীতির চোখে না দেখা অসম্ভব। কিন্তু আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত মানবের হিতার্থে তাঁর মহাধর্ম শিক্ষা করা। আমি এখানে আসার পর, আপনি মহাশয়, অনুগ্রহ করে আমাকে যোগাচার্যভূমিশাস্ত্র শিক্ষা দিয়েছেন। আমি আপনাদের নানাতীর্থ স্থান দর্শন করেছি, নানা সম্প্রদায়ের শাস্ত্র আলোচনা শুনেছি। এতে আমার যৎপরোনাস্তি আনন্দ হয়েছে। এখন আমি চাই যে, স্বদেশে ফিরে গিয়ে অন্যদেরও এইসব কথা বুঝাই, তাতে আমি ছাড়া অন্যরাও আপনার কাছে কৃতজ্ঞ হতে, পারবে। এইজন্যেই আমি ফিরতে বিলম্ব করতে চাই না।

শীলভদ্র আনন্দে বললেন, ‘এ যা আপনি চিন্তা করেছেন, তা বোধিসত্ত্বেরই উপযুক্ত। আমার হৃদয়ও আপনার ইচ্ছাই সমর্থন করছে।

আমি আপনার যাবার বন্দোবস্ত করে দেব। আর বন্ধুরা! একে আর বাধা দেবেন না।’

এই বলে তিনি তাঁর ঘরে ফিরে গেলেন।

(চলবে)