১১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময় কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পুলিশের মৃত্যু রবিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ভিয়েতনামী ঔপন্যাসিক ড. ফান কুয়ে মাই শারজাহ বইমেলায় পাঠকদের মুগ্ধ করলেন মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু শাহবাগে শিক্ষকদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গে পুলিশের পদক্ষেপের পক্ষে ডিএমপি

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩২)

দলবেঁধে ঢাকায় এসে এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকত ওরা। এদের প্রধান পেশা ছিল বিভিন্ন রকম শুকনো ফল বা হিং বিক্রি করা এবং কড়া সুদে টাকা ধার দেয়া।

কাবুলিয়ালা

বিশ শতকের খুব সম্ভব দ্বিতীয়-তৃতীয় শতক থেকে ঢাকায় কাবুলিওয়ালারা বিশেষ দ্রষ্টব্য। গত শতকের ষাটের দশকেও আমি পুরনো ঢাকায় কাবুলিওয়ালাদের দেখেছি। এরা আফগানিস্তান থেকে শাল, ফল এসব এনে বিক্রি করত। তবে আসল ব্যবসা ছিল সুদে টাকা দেওয়া। ঋণী আসল শোধ করুক, তা তারা চাইত না। সুদটা নিয়মিত শোধ করলেই খুশি। আনোয়ার হোসেন গত শতকের।

চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকে কাবুলিওয়ালাদের নিয়ে লিখেছেন-ঢাকার “পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে বংশালে অনেক কাবুলিওয়ালা দেখতাম। দলবেঁধে ঢাকায় এসে এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকত ওরা। এদের প্রধান পেশা ছিল বিভিন্ন রকম শুকনো ফল বা হিং বিক্রি করা এবং কড়া সুদে টাকা ধার দেয়া। কেউ আবার শুধু জিনিস, বিশেষ করে পরিধেয় বস্ত্র দিয়ে যেত। যারা কাপড় দিত তারা ঝোলাতে করে শাড়ি, লুঙ্গিসহ অনেক রকম কাপড় নিয়ে আসত। প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে ৪ আনা বা ৮ আনা করে আদায় করত ওরা। আর হিসাবেও ছিল খুব পাকা। লেখালেখি করতই না বলতে গেলে, তারপরও কার কাছে কত টাকা পাবে সে-হিসাব মনে রাখতে পারত নিখুঁতভাবে।

কাবুলিওয়ালারা ছিল সহজ সরল। বাচ্চাদের দেয়ার জন্য সঙ্গে খোরমা-খেজুর রাখত ওরা। আরেকটা বৈশিষ্ট্য দেখেছি ওদের এককথার মানুষ ছিল ওরা। যদি কাউকে একবার বিশ্বাস করত, তাহলে সেই বিশ্বাস সহজে নষ্ট হতো না। আর কাউকে একবার অবিশ্বাস করলে তাকে দ্বিতীয়বার বিশ্বাস করতে সময় নিত। ”

তিনি আরো লিখেছেন, “সুদখোর বললে তারা মনে কষ্ট পেত। কাউকে কাউকে দেখতাম শুধু ওই একটা শব্দ শুনেই এত মুষড়ে পড়ত যে, রাস্তার একধারে বসে এমনকি কাঁদতও। বলত, ‘আমি সুদ খাই না। তোমাদের কাছে এই জিনিসটা একবারে কেনার মতো টাকা নেই। আমি তোমাদের বাকি দিচ্ছি। বিনিময়ে সপ্তাহে সপ্তাহে চার আনা আট আনা করে নিচ্ছি। এখানে সুদ কীভাবে হলো বোঝাও তো দেখি?”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩১)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩১)

জনপ্রিয় সংবাদ

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময়

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩২)

০৭:০০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

দলবেঁধে ঢাকায় এসে এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকত ওরা। এদের প্রধান পেশা ছিল বিভিন্ন রকম শুকনো ফল বা হিং বিক্রি করা এবং কড়া সুদে টাকা ধার দেয়া।

কাবুলিয়ালা

বিশ শতকের খুব সম্ভব দ্বিতীয়-তৃতীয় শতক থেকে ঢাকায় কাবুলিওয়ালারা বিশেষ দ্রষ্টব্য। গত শতকের ষাটের দশকেও আমি পুরনো ঢাকায় কাবুলিওয়ালাদের দেখেছি। এরা আফগানিস্তান থেকে শাল, ফল এসব এনে বিক্রি করত। তবে আসল ব্যবসা ছিল সুদে টাকা দেওয়া। ঋণী আসল শোধ করুক, তা তারা চাইত না। সুদটা নিয়মিত শোধ করলেই খুশি। আনোয়ার হোসেন গত শতকের।

চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকে কাবুলিওয়ালাদের নিয়ে লিখেছেন-ঢাকার “পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে বংশালে অনেক কাবুলিওয়ালা দেখতাম। দলবেঁধে ঢাকায় এসে এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকত ওরা। এদের প্রধান পেশা ছিল বিভিন্ন রকম শুকনো ফল বা হিং বিক্রি করা এবং কড়া সুদে টাকা ধার দেয়া। কেউ আবার শুধু জিনিস, বিশেষ করে পরিধেয় বস্ত্র দিয়ে যেত। যারা কাপড় দিত তারা ঝোলাতে করে শাড়ি, লুঙ্গিসহ অনেক রকম কাপড় নিয়ে আসত। প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে ৪ আনা বা ৮ আনা করে আদায় করত ওরা। আর হিসাবেও ছিল খুব পাকা। লেখালেখি করতই না বলতে গেলে, তারপরও কার কাছে কত টাকা পাবে সে-হিসাব মনে রাখতে পারত নিখুঁতভাবে।

কাবুলিওয়ালারা ছিল সহজ সরল। বাচ্চাদের দেয়ার জন্য সঙ্গে খোরমা-খেজুর রাখত ওরা। আরেকটা বৈশিষ্ট্য দেখেছি ওদের এককথার মানুষ ছিল ওরা। যদি কাউকে একবার বিশ্বাস করত, তাহলে সেই বিশ্বাস সহজে নষ্ট হতো না। আর কাউকে একবার অবিশ্বাস করলে তাকে দ্বিতীয়বার বিশ্বাস করতে সময় নিত। ”

তিনি আরো লিখেছেন, “সুদখোর বললে তারা মনে কষ্ট পেত। কাউকে কাউকে দেখতাম শুধু ওই একটা শব্দ শুনেই এত মুষড়ে পড়ত যে, রাস্তার একধারে বসে এমনকি কাঁদতও। বলত, ‘আমি সুদ খাই না। তোমাদের কাছে এই জিনিসটা একবারে কেনার মতো টাকা নেই। আমি তোমাদের বাকি দিচ্ছি। বিনিময়ে সপ্তাহে সপ্তাহে চার আনা আট আনা করে নিচ্ছি। এখানে সুদ কীভাবে হলো বোঝাও তো দেখি?”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩১)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩১)