০৬:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
গেট ভেঙে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের ঢল: টিয়ারগ্যাস–লাঠিচার্জ কোভিড শনাক্তে বাংলাদেশকে ১৫ হাজারেরও বেশি কিট দিল চীন বাংলাদেশের ব্যাংক খাত এশিয়ার অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ, সুদের হার কমানো সত্ত্বেও তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু, শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব ইস্তাম্বুল শান্তি আলোচনা শুরুর আগে ইউক্রেনে ৪২টি ড্রোন হামলা চালাল রাশিয়া ৪০০ কিমি গতি: চীনের রেল দৌড়ে নতুন ইতিহাস মাইলস্টোনে উত্তেজনা চরমে: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে দুই উপদেষ্টা অবরুদ্ধ, অতিরিক্ত পুলিশ ও র‍্যার মোতায়েন উত্তরায় মুখোমুখি পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা, দুই ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ দুই উপদেষ্টা-প্রেস সচিব মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত অন্তত তিনজন মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি বাড়ছে

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৮)

অচল সিকি

এনামুল বললে, ‘একগ্লাস ঠাণ্ডা পানি হবে নানামিয়া?’

এতোক্ষণ লক্ষ্য করেনি বলে চমকে উঠলো বুড়ো। ‘বহেন বাপ বহেন, পানি দিতাছি

এনামুল মুগ্ধ চোখে একটা লালচে বয়মের দিকে তাকিয়ে থাকে, শৈশবের কথা মনে পড়ে যায় আচমকা, যেন স্বপ্ন। কালিতে জুবড়ানো কেৎলি, কানাভাঙা পানির কলসি, ঘামাচিওলা চার পাঁচটা বেঁটে বেঁটে দেশী কাচের গেলাস তার চোখের সামনে নৃত্য করে। লালচে বয়েমে ভরা বিস্কুট; এবিস্কুট, কুকিস। এই বিস্কুট তাকে দীর্ঘ অতীতের দিকে টেনে নিয়ে যায়।

দু’জনেই ঢকঢক করে পানি খেলো। নিঃশব্দে তাকিয়ে থাকে বুড়োটা। আসবার সময় তারা এপথে আসেনি। এটা হাট, কে জানে কবে কবে বসে।

এনামুল বললে, ‘স্টেশন এখান থেকে কতোদূর?’

‘মাইল দেরেক হৈবো আঁরি।’

জেবুন্নেসা ছেলেমানুষের মতো জিজ্ঞেস করলো, ‘আচ্ছা এদিকটা এমন ফাঁকা কেন, মানুষজন দেখাই যায় না।’

বুড়ো ফোকলা গালে মাড়ি চিতিয়ে শিশুর মতো ফিক করে হাসলো। তারপর সে অনেক কথাই বললে, যে কথার সব বোঝা যায় না। এ দিকটা চিরকালই এ রকম ফাঁকা। ‘শিয়ালরাজার বাড়ি’ মাঝে মাঝে অনেকেই দেখতে আসে। কেউ কেউ আবার মোটর গাড়ি নিয়েও আসে। তবে চৈত্রমাসের খরদুপুরের মাথায় কেউ আসে না।

একটা মেয়ে ছিলো বুড়োর বছর দু’য়েক আগে ওলাবিবি তাকে খেয়েছে। পেট নিয়ে অনেক জ্বালা তার। সপ্তাহে দু’বার এ-হাট বসে, যা বিক্রিপাট্টা হয় তা সপ্তাহের ঐ দু’দিনে; বাকি পাঁচটা দিন তাকে এইভাবে বসে বসে কাটাতে হয়। ঘরদোর বলতে তার এই চালা ঘরটি। এইখানেই থাকা, এইখানেই খাওয়া, এইখানেই ঘুমানো।

তার কোনো জোয়ান ছেলে আছে কিনা জেবুন্নেসা জানতে চায়। ছেলে আছে, তবে বিয়েশাদি করে কাচ্চাবাচ্চার বাপ হয়েছে তারা, তাদেরই চলে না,

বাপকে আবার কি দেখবে।

 

 

গেট ভেঙে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের ঢল: টিয়ারগ্যাস–লাঠিচার্জ

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৮)

১২:০০:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

অচল সিকি

এনামুল বললে, ‘একগ্লাস ঠাণ্ডা পানি হবে নানামিয়া?’

এতোক্ষণ লক্ষ্য করেনি বলে চমকে উঠলো বুড়ো। ‘বহেন বাপ বহেন, পানি দিতাছি

এনামুল মুগ্ধ চোখে একটা লালচে বয়মের দিকে তাকিয়ে থাকে, শৈশবের কথা মনে পড়ে যায় আচমকা, যেন স্বপ্ন। কালিতে জুবড়ানো কেৎলি, কানাভাঙা পানির কলসি, ঘামাচিওলা চার পাঁচটা বেঁটে বেঁটে দেশী কাচের গেলাস তার চোখের সামনে নৃত্য করে। লালচে বয়েমে ভরা বিস্কুট; এবিস্কুট, কুকিস। এই বিস্কুট তাকে দীর্ঘ অতীতের দিকে টেনে নিয়ে যায়।

দু’জনেই ঢকঢক করে পানি খেলো। নিঃশব্দে তাকিয়ে থাকে বুড়োটা। আসবার সময় তারা এপথে আসেনি। এটা হাট, কে জানে কবে কবে বসে।

এনামুল বললে, ‘স্টেশন এখান থেকে কতোদূর?’

‘মাইল দেরেক হৈবো আঁরি।’

জেবুন্নেসা ছেলেমানুষের মতো জিজ্ঞেস করলো, ‘আচ্ছা এদিকটা এমন ফাঁকা কেন, মানুষজন দেখাই যায় না।’

বুড়ো ফোকলা গালে মাড়ি চিতিয়ে শিশুর মতো ফিক করে হাসলো। তারপর সে অনেক কথাই বললে, যে কথার সব বোঝা যায় না। এ দিকটা চিরকালই এ রকম ফাঁকা। ‘শিয়ালরাজার বাড়ি’ মাঝে মাঝে অনেকেই দেখতে আসে। কেউ কেউ আবার মোটর গাড়ি নিয়েও আসে। তবে চৈত্রমাসের খরদুপুরের মাথায় কেউ আসে না।

একটা মেয়ে ছিলো বুড়োর বছর দু’য়েক আগে ওলাবিবি তাকে খেয়েছে। পেট নিয়ে অনেক জ্বালা তার। সপ্তাহে দু’বার এ-হাট বসে, যা বিক্রিপাট্টা হয় তা সপ্তাহের ঐ দু’দিনে; বাকি পাঁচটা দিন তাকে এইভাবে বসে বসে কাটাতে হয়। ঘরদোর বলতে তার এই চালা ঘরটি। এইখানেই থাকা, এইখানেই খাওয়া, এইখানেই ঘুমানো।

তার কোনো জোয়ান ছেলে আছে কিনা জেবুন্নেসা জানতে চায়। ছেলে আছে, তবে বিয়েশাদি করে কাচ্চাবাচ্চার বাপ হয়েছে তারা, তাদেরই চলে না,

বাপকে আবার কি দেখবে।