অচল সিকি
এনামুল প্রায় আঁতকে উঠলো। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রুক্ষ গলায় জিজ্ঞেস করলো, ‘কি বললে?’
‘সেই অচল সিকিটার সৎকার করে এলাম, কানে এতো খাটো হয়ে যাচ্ছো কেন?’
এনামুল আর কথা বাড়ালো না। তার চোখে ডিসট্যান্ট সিগন্যালটা তখন কিছুটা ঝাপসা লাগছে।
জেবুন্নেসা বললে, ‘সেসব গুলিয়ে গেছে। সেসব কথা মনে পড়লে এখন লজ্জা পাই। বুদ্ধি লোপ পাওয়া মুহূর্তগুলো বড়ো সাংঘাতিক, বড়ো বিচ্ছিরি ব্যাপার।’
‘আহা খোলাখুলি বলোই না কেন, ধারেকাছে শ্বশুর-ভাশুর তো আর কেউ নেই’ এনামুল হাত চেপে ধরলো, তার চোখে কপট অনুনয় চকচক করে উঠলো।
‘দিন দিন গুণ্ডা হয়ে যাচ্ছো, আগে হাত ছাড়ো।’
‘যাব্বাবা! গাছপালা পাহাড় সবকিছুকেই দেখি তোমার লজ্জা, এখানে দেখছেটা কে শুনি?’
‘নাইবা দেখলো, এতো হামখোদাই ভাব কেন?’
‘বুঝলাম না, হামখোদাই আবার কি?’
‘তোমার মুণ্ডু!’
‘সেতো আগেই পানির দামে বিক্রি করে বসে আছি-‘
‘যে জিনিসের যে দাম, কি বুঝলে?’
‘আহা ক্রেতার ক্ষমতার দিকটাও তো দেখতে হয়, আমিতো আর জোচ্চোর-বাটপাড় নই। পড়তে মুনাফাখোরের পাল্লায়-‘
পথের পাশ থেকে বনহলুদের পাতা ছিঁড়ে নাকের কাছে তুলে গন্ধ নেবার চেষ্টা করলো জেবুন্নেসা। একটু পরেই কেমন যেন হয়ে গেল। এক একটা গন্ধ স্নায়ুর ওপর এমন তীব্রভাবে কাজ করে-
ঠিক মাথার ওপর গনগনিয়ে উঠছে সূর্য। ধুলোয় মোড়া সর্পিল রাস্তা টিলার গায়ে পাক খেয়ে নিঃসঙ্কোচে শালবনের দিকে হারিয়ে গেছে।