হিউএনচাঙ প্রথমত মহাযান ধর্মের গুণগান করলেন। তার পর একটা পূর্বপক্ষ প্রস্তাব করে নালন্দার একজন শ্রমণকে সেটা সমস্ত পণ্ডিতদের দেখাতে আদেশ করলেন। তার পর সেটা লিখে সভার সদর তোরণে আটকে দিতে বললেন; আর ঘোষণা করলেন যে, যদি কেহ পূর্বপক্ষের একটি কথাও ভুল বলে প্রমাণ করতে পারেন, তা হলে তার আদেশে আমি আমার শিরদান করতে প্রস্তুত আছি।
রাত্রি পর্যন্ত কেহই প্রতিপক্ষ হতে অগ্রসর হল না। তার পর প্রত্যহই ঐ রকম শোভাযাত্রা হতে লাগল, কিন্তু প্রতিপক্ষ কেউই এল না।হিউএনচাঙ বলেন যে, পাঁচদিন পরে বিধর্মীরা রাগ করে তাঁকে হত্যা করবার ষড়যন্ত্র করে। মহারাজা তাই শুনে ঘোষণা করলেন যে, যদি কেউ কোনো রকমে হিউএনচাঙকে শারীরিক কষ্ট দেয়, তাহলে তার প্রাণদণ্ড হবে। যদি কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে, তাহলে তার জিভ কেটে দেওয়া হবে।
যাহোক, আঠারো দিন পর্যন্ত কেউই তর্কে অগ্রসর হল না। তখন আগের দিন সভাভঙ্গের সময়ে ধর্মগুরু আবার মহাযানের প্রশংসা করলেন, আর বৌদ্ধধর্মের প্রশংসা করলেন। তার ফলে বহু বিধর্মী আর হীনযানী মহাযানে যোগ দিল।
শীলাদিত্য রাজা আর ঐ উনিশ-কুড়ি জন অন্য রাজারা হিউএনচাঙকে বহু ধনরত্ন উপহার দিলেন, কিন্তু তিনি কিছুই গ্রহণ করতে সম্মত হলেন না। তখন রাজার আদেশে মন্ত্রিগণসহ ধর্মগুরুকে এক মস্ত হাতীর উপরে হাওদায় বসিয়ে সব লোকের ভিতরে ঘুরিয়ে আনা হল আর ঘোষণা করা হল যে, ইনি প্রকৃত ধর্ম অবিসংবাদিতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। ধর্মগুরু এই সম্মান নিতে প্রথমে রাজী হন নি। কিন্তু মহারাজা বলেন যে, এ-ই দেশের প্রথা।
(চলবে)