০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নগরজীবনে মানিয়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণী গ্লোবাল কনটেন্টে ঝুঁকছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯)

ভবিষ্যতে প্রত্যেক জন্মে যেন এইভাবে আমি সর্বস্ব দান করে (বুদ্ধের) দশবলের অধিকারী হতে পারি।’

ধর্মগুরুও কান্যকুব্জ সভা থেকে এখানে এলেন, আর সেই আঠারোটি রাজ্যের রাজারাও মহারাজার সঙ্গেসঙ্গে এসে পড়লেন। সেখানে আগেই পাঁচ লক্ষ লোক জড়ো হয়েছিল। শীলাদিত্য রাজা (হর্ষবর্ধন) গঙ্গার উত্তর তীরে তাঁবু ফেললেন।

হর্ষের জামাতা বলভীরাজ ধ্রুবভট্ট সঙ্গমের পশ্চিমে আর কুমাররাজা যমুনার দক্ষিণে ফুলবাগানের পাশে তাঁবু ফেললেন। আর দানগ্রহণকারীরা ধ্রুবভট্ট রাজার দিকে পশ্চিম ময়দানে ছিল। দানের সময় শীলাদিত্য ও কুমাররাজা নৌকায় আর ধ্রুবভট্ট হাতীতে চড়ে ধুমধাম করে দানের ময়দানে যেতেন।

প্রথম দিন দানের ময়দানে একটা ঘরে বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হল।

দ্বিতীয় দিন আদিত্যদেবের মূর্তি আর তৃতীয় দিনে মহেশ্বরের মূর্তি স্থাপন করা হল। চতুর্থ দিন দশ হাজার ভিক্ষুকে এক শ দলে ভাগ করে প্রত্যেককে একশত স্বর্ণমুদ্রা, একটি মুক্তা, একটি সুতির কাপড়, ভোজ্য, পানীয়, ফুল, গন্ধদ্রব্য দেওয়া হল। এর পর কুড়িদিন ধরে ব্রাহ্মণদের, তার পর দশদিন ধরে বিধর্মীদের, তার পর দশ দিন দূরদেশে থেকে আগত ভিক্ষুদের, তার পর একমাস ধরে অনাথ-আতুরদের দান করা হল।

এর পর হাতী, ঘোড়া, আর যুদ্ধের প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া সবই ফুরিয়ে গিয়েছিল। মহারাজার নিজের যেসব অলংকার ছিল, তাও সব দান হল। সর্বস্ব দান করার পর, মহারাজ তার ভগ্নির কাছ থেকে একখানা পুরানো বস্ত্র ভিক্ষা করে নিলেন, আর তাই পরে তিনি (মহাযানোক্ত) দশ-বুদ্ধকে পূজা আর প্রণাম করে বললেন, ‘এসমস্ত ধনরত্ন সংগ্রহ করে এদের নিরাপত্তা সম্বন্ধে নিরুদ্বিগ্ন হতে পারি নি। পুণ্যস্থানে দান করে আজ নিরুদ্বিগ্ন হলাম। ভবিষ্যতে প্রত্যেক জন্মে যেন এইভাবে আমি সর্বস্ব দান করে (বুদ্ধের) দশবলের অধিকারী হতে পারি।’

এর পর অন্য রাজারা নিজেদের ধনরত্ন দিয়ে মহারাজার নিজস্ব হার, মুকুট, রাজবেশ ইত্যাদি কিনে নিয়ে আবার মহারাজকে দিলেন। দিন কতক পরে আবার মহারাজ সেগুলি দান করলেন।

এখন ধর্মগুরু দেশে ফিরবার জন্যে রাজার কাছে বিদায় গ্রহণ করলেন। মহারাজ বললেন, ‘আপনার এ বিনীত শিষ্য, আপনারই মতন, বুদ্ধের ধর্ম দেশে-বিদেশে প্রচার করতে ইচ্ছুক। আপনি কেন দেশে ফিরতে ব্যগ্র হয়েছেন?’

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)

জনপ্রিয় সংবাদ

নগরজীবনে মানিয়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণী

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯)

০৯:০০:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

ভবিষ্যতে প্রত্যেক জন্মে যেন এইভাবে আমি সর্বস্ব দান করে (বুদ্ধের) দশবলের অধিকারী হতে পারি।’

ধর্মগুরুও কান্যকুব্জ সভা থেকে এখানে এলেন, আর সেই আঠারোটি রাজ্যের রাজারাও মহারাজার সঙ্গেসঙ্গে এসে পড়লেন। সেখানে আগেই পাঁচ লক্ষ লোক জড়ো হয়েছিল। শীলাদিত্য রাজা (হর্ষবর্ধন) গঙ্গার উত্তর তীরে তাঁবু ফেললেন।

হর্ষের জামাতা বলভীরাজ ধ্রুবভট্ট সঙ্গমের পশ্চিমে আর কুমাররাজা যমুনার দক্ষিণে ফুলবাগানের পাশে তাঁবু ফেললেন। আর দানগ্রহণকারীরা ধ্রুবভট্ট রাজার দিকে পশ্চিম ময়দানে ছিল। দানের সময় শীলাদিত্য ও কুমাররাজা নৌকায় আর ধ্রুবভট্ট হাতীতে চড়ে ধুমধাম করে দানের ময়দানে যেতেন।

প্রথম দিন দানের ময়দানে একটা ঘরে বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হল।

দ্বিতীয় দিন আদিত্যদেবের মূর্তি আর তৃতীয় দিনে মহেশ্বরের মূর্তি স্থাপন করা হল। চতুর্থ দিন দশ হাজার ভিক্ষুকে এক শ দলে ভাগ করে প্রত্যেককে একশত স্বর্ণমুদ্রা, একটি মুক্তা, একটি সুতির কাপড়, ভোজ্য, পানীয়, ফুল, গন্ধদ্রব্য দেওয়া হল। এর পর কুড়িদিন ধরে ব্রাহ্মণদের, তার পর দশদিন ধরে বিধর্মীদের, তার পর দশ দিন দূরদেশে থেকে আগত ভিক্ষুদের, তার পর একমাস ধরে অনাথ-আতুরদের দান করা হল।

এর পর হাতী, ঘোড়া, আর যুদ্ধের প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া সবই ফুরিয়ে গিয়েছিল। মহারাজার নিজের যেসব অলংকার ছিল, তাও সব দান হল। সর্বস্ব দান করার পর, মহারাজ তার ভগ্নির কাছ থেকে একখানা পুরানো বস্ত্র ভিক্ষা করে নিলেন, আর তাই পরে তিনি (মহাযানোক্ত) দশ-বুদ্ধকে পূজা আর প্রণাম করে বললেন, ‘এসমস্ত ধনরত্ন সংগ্রহ করে এদের নিরাপত্তা সম্বন্ধে নিরুদ্বিগ্ন হতে পারি নি। পুণ্যস্থানে দান করে আজ নিরুদ্বিগ্ন হলাম। ভবিষ্যতে প্রত্যেক জন্মে যেন এইভাবে আমি সর্বস্ব দান করে (বুদ্ধের) দশবলের অধিকারী হতে পারি।’

এর পর অন্য রাজারা নিজেদের ধনরত্ন দিয়ে মহারাজার নিজস্ব হার, মুকুট, রাজবেশ ইত্যাদি কিনে নিয়ে আবার মহারাজকে দিলেন। দিন কতক পরে আবার মহারাজ সেগুলি দান করলেন।

এখন ধর্মগুরু দেশে ফিরবার জন্যে রাজার কাছে বিদায় গ্রহণ করলেন। মহারাজ বললেন, ‘আপনার এ বিনীত শিষ্য, আপনারই মতন, বুদ্ধের ধর্ম দেশে-বিদেশে প্রচার করতে ইচ্ছুক। আপনি কেন দেশে ফিরতে ব্যগ্র হয়েছেন?’

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)