রাজ আমাকে অনেক রকমে সাহায্য করেছিলেন, আর ফিরবার পথে তাঁর সঙ্গে দেখা করে যেতে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলেন।
ধর্মগুরু তখন আরও দশ দিন থাকতে রাজি হলেন। কুমার রাজাও বললেন, ‘গুরু যদি আমার রাজ্যে থেকে আমার ভক্তি-নিবেদন গ্রহণ করেন, তাহলে গুরুর হয়ে আমি একশতটা সঙ্ঘারাম স্থাপন করে দেব।’
হিউ এনচাঙ দেখলেন, এই রাজাদের তাঁকে ছেড়ে দেবার ইচ্ছা নেই, তখন তিনি দুঃখিত চিত্তে বললেন, ‘চীন দেশ বহুদূরে। সেখানকার লোকে বেশি দিন বুদ্ধের ধর্মের বিষয়ে শোনে নি, আর বেশি লোকেও এটা গ্রহণ করে নি। আমি এই ধর্মের তত্ত্ব ভালো করে শিখতে এসেছিলাম। আমি যা শিখেছি, তাই জানবার জন্যে আমার দেশের পণ্ডিতরা উৎসুক হয়ে আছেন। ‘সূত্রে’ লেখা আছে, ধর্মের জ্ঞান প্রচার করতে বাধা দিলে জন্ম-জন্ম অন্ধ হতে হয়। এ কথ। স্মরণ করুন।’
মহারাজা তখন তাঁকে যেতে দিতে স্বীকৃত হলেন আর জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি কোন্ পথে ফিরবেন। বললেন, ‘আপনি যদি দক্ষিণ সমুদ্রের পথে যেতে চান, তাহলে আপনার সঙ্গে যাওয়ার লোক বন্দোবস্ত করব।
‘ হিউ এনচাঙ বললেন, ‘আমি আসবার সময়ে কাউচাঙ (তুরফান) রাজ আমাকে অনেক রকমে সাহায্য করেছিলেন, আর ফিরবার পথে তাঁর সঙ্গে দেখা করে যেতে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলেন। তাঁকে নিরাশ করতে আমার মন চাইছে না। সেই পথেই আমি ফিরব।’
মহারাজা বললেন, ‘আপনার পাথেয় কি চাই বলুন।’
হিউএনচাঙ বললেন, ‘কিছুই চাই না।’
রাজা বললেন, ‘এভাবে আপনাকে ছেড়ে দিতে পারি না।’
কিন্তু হিউএনচাঙ রাজাদের কাছে কোনো ধনরত্ন নিতে সম্মত হলেন না, কেবল কামরূপ রাজের কাছে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ভিতরে লোমওয়ালা একটা চামড়ার জামা নিলেন।
এইভাবে তিনি বিদায় নিলেন। সানুচর রাজা কয়েক মাইল পর্যন্ত তাঁকে এগিয়ে দিয়ে এলেন। বিদায় নেবার সময়ে কোনো পক্ষই অশ্রু সম্বরণ করতে পারলেন না।
(চলবে)